Hot

মোদির মদদে ‘সংখ্যালঘু নির্যাতন’ ফানুস উড়ছে, ফাঁদে পা দিলেই পাসপোর্ট, স্মার্ট কার্ড বাতিলের দাবি

শেখ হাসিনার পতনের পর জুডিশিয়াল ক্যুর অপচেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে ‘সংখ্যালঘু নির্যাতন’ কার্ড খেলছেন ভারতের বিজেপি নেতা নরেন্দ্র মোদী। হাসিনার পালানোর পর ‘বাংলাদেশে সংঘ্যালঘু নির্যাতন’ ফানুস উড়িয়ে প্রচার করে মোদী ভারতে নিজের রাজনৈতিক অবস্থান পোক্ত করতে চাচ্ছেন। এ জন্য তিনি বাংলাদেশের কিছু দিল্লির সেবাদাসকে কাজে লাগাচ্ছেন এবং ভারতের এবং বাংলাদেশের কিছু তাবেদার গণমাধ্যম ব্যবহার করছেন। একদিকে তারা বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতনের মিথ্যা তথ্য পুঁজি করে শাহবাগে সমাবেশ করেছেন। অন্যদিকে হাসিনা রেজিমের পতন মেনে নিতে না পারা এদেশীয় গণমাধ্যম হিন্দু নির্যাতনের গালগল্প ফলাও করে প্রচার করছেন। কিন্তু সাধারণ হিন্দুধর্মীদের অনেক বিবেকবান মানুষ বলছেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় পালিয়ে যাওয়া হিন্দুদের ঢাকাসহ বাংলাদেশের বাড়িঘর, জমি যেভাবে আওয়ামী লীগের নেতারা দখল করেছেন; এবারও সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমনের ধোঁয়া তুলে নীরিহ গরীর হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের দেশছাড়া করে আওয়ামী লীগের নেতারাই তাদের বাড়িঘর দখলের পায়তারা করছে। তবে বর্তমান সরকার হিন্দুদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সব ধরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। এরপরও মোদীর অপচেষ্টার ফাঁদে পা দিয়ে যদি কেউ সীমান্তের ওপারে যায় তাদের পাসপোর্ট, নাগরিক সনদ স্পাট কার্ডসহ সব ধরণের সুবিধা বাতিল করতে হবে।

গতকাল শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘সারা দেশে হামলা, দোকানপাট ও বাড়িঘর লুট, মঠ-মন্দিরে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ বন্ধে রাজনীতিক ও সুশীল সমাজের ভূমিকা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় সনাতন পার্টির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অনুপ কুমার দত্ত বলেছেন, দেশ কারও বাপের না যে সংখ্যালঘুরা ভয়ে দেশ ছেড়ে চলে যাবে। সদ্যগঠিত অন্তবর্তী সরকারের সব উপদেষ্টাদের শুভেচ্ছা জানিয়ে সভায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কালিমালিপ্ত করার জন্য একটি গোষ্ঠী সংখ্যালঘু নির্যাতনের ফানুস উড়াচ্ছে। অনতিবিলম্বে তাদের শক্ত হাতে দমন করতে হবে।

জানতে চাইলে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত সনাতন ধর্মাবলম্বী একাধিক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বলেন, বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের নাম ভাঙ্গিয়ে যেমন বিদেশী সহায়তা পাওয়া যাচ্ছে। মোদীও বাংলাদেে সংখ্যালঘু নির্যাতন কার্ড ব্যবহার করে বাংলাদেমের কিছু নিরীহ হিন্দুদের ভারতে নিয়ে সিমান্তে রেখে ‘শরণার্থী’ হিসেবে ব্যবহার করে ভারতে ফের হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির উত্থান ঘটানোর চেস্টা করবেন। হাসিনা রেজিমের পতনের পর তথাকথিত সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্ররোচনার ফাঁদে পা দিয়ে যারা সীমান্ত ত্যাগ করবেন তাদের বাড়িঘর আওয়ামী লীগ নেতারাই দখল করবে। এখনই ড. মুহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকাকে কঠোর হতে হবে। বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের একজন নেতা বলেন, ‘সংখ্যালঘু নির্যাতন’ মিথ্যা প্ররোচনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে যারা সীমান্ত পাড় হবেন তাদের তালিকা করতে হবে। এদের ভোটার আইডি, পাসপোর্ট, সবকিছু বাতিল করতে হবে। এমন কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের ঘোষণা দিলে ‘সংখালঘু নির্যাতন’ প্রপাগান্ডর ফাঁদে মানুষ পা দেবেন না।

ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্র করতে চলতি বছরের ১১ মার্চ ভারত সরকার সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন চালু করেছে। ২০১৯ সালে এটি পাশ করা হলেও ২০২৪ সালের ১১ মার্চ আইনটি বলবৎ করা হয়। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন অনুযায়ী বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান থেকে সেদেশের সংখ্যালঘু হিন্দু, বৌদ্ধ, পার্শি, শিখ, জৈন ও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরা যদি ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে ভারতে চলে এসে থাকেন তাহলে তারা ভারতে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন। এবং অন্য ধর্মের কেউ হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করলে তারাও নাগরিত্বের আবেদন করতে পারবেন। এই আইনের সুবিধা নিতে অনেক হিন্দু সংঘ্যলঘু নির্যাতনের কাল্পনিক অভিযোগের শ্রোতে গা ভাসিয়ে ভারতে চলে যাওয়ার প্রক্রিয়া করছেন। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও মাঠ পর্যায়ের নেতা এবং শেখ হাসিনার অনুগত বুদ্ধিজীবী সংস্কৃতি কর্মীরা হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ভারতে চলে যাওয়ার প্ররোচনা দিচ্ছেন। বলে অভিযোগ রয়েছে।

বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার অভ্যূত্থানে দ্বিতীয় বিজয় অর্জন করেছে। ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে শেখ হাসিনা ভারত পালানোর ঘটনা স্বাভাবিক ভাবে মেনে নিতে পারছে না ভারতের হিন্দুত্ববাদী নেতা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাছাড়া বর্তমানে অন্য দলের সমর্থন নিয়ে ভারতে সরকার গঠন করলেও যে কোনো সময় ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আশঙ্কা রয়ে গেছে। ফলে হিন্দুত্ববাদী ইস্যু ব্যবহার করে মোদী ভারতে নিজের অবস্থান পোক্ত করতে চাচ্ছেন। এ জন্য বাংলাদেশের ‘সংখ্যালঘু নির্যাতন’ কার্ড ব্যবহারে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। ভারত ও বাংলাদেশের কিছু গণমাধ্যম ও সাংবাদিকদের রুপি দিয়ে বাংলাদেশে সংখ্যালগু নির্যাতনের মিথ্যা খবর ফলাও করে প্রচার করাচ্ছে। ভারতের নাচের পুতুল শেখ হাসিনা পালায়নের পর মোদীর ইন্দনে বাংলাদেশে ‘সংখ্যালগু নির্যাতন’ জোয়ার তোলা হচ্ছে। দিল্লীর তাবেদার এবং পতিত হাসিনার তাবেদার কিছু গণমাধ্যম বাংলাদেশে সংখ্যালগু নির্যাতনের চিত্র ‘তিলকে তাল’ বানিয়ে প্রতিদিন ফলাও করে প্রচার করছে। অথচ বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের অনুগত এবং পুলিশ, ছাত্রলীগ, যুবলীগের সঙ্গে গণহত্যায় অংশ নেয়া হিন্দুধর্মী কয়েকজন নেতার বাসায় আক্রমন করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা। ১৫ বছর জুলুম নির্যাতন করা আওযামী লীগের মুসলিম ধর্মী নেতাদের মতোই হিন্দুধর্মীয় নেতাদের বাসায় হামলা হয়েছে। কয়েকটি ঘটনার পর ছাত্রজনতা এবং মাসরাদার শিক্ষার্থীরা ঘোষণা দিয়ে মন্দির ও আওয়ামী লীগের হিন্দু নেতাদের বাসা প্রহরা দিচ্ছে। বিএনপি, জামায়াত, ইসলামী ধারার দলগুলো এবংছ ছাত্রজনতা রাত জেগে মন্দির প্রহরা দিচ্ছেন।

বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ, বাংলাদেশ সনাতন পার্টি (বিএসপি) সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছে, শেখ হাসিনার পালানোর পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতা গ্রহনের আগে ও পরে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বাসাবা—ি মন্দির প্রহরা দিচ্ছেন মাদরাসা শিক্ষার্থী ও রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাকর্মীরা। বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত বলেছেন, দেশের বিভিন্ন জায়গায় স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও মাদরাসার শিক্ষার্থীরা মন্দির ও হিন্দু সংখ্যালঘুদের ঘর পাহারা দিচ্ছে। বিষয়টাকে আমরা ইতিবাচকভাবে দেখছি। বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি নির্মল রোজারিও বলেছেন, যাতে ছাত্র-জনতার বিজয় কলুষিত করতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নির্যাতনের প্লট সাজানো হচ্ছে।

শেখ হাসিনার পালানোর পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন ঠেকিয়ে তাঁদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কেন বিএসএফের নেতৃত্বে কমিটি গঠন করেছে নরেন্দ্র মোদী। প্রতিবেশি দেশের নাগরিকদের নিরাপত্তা দিতে কমিটি গঠন মোদীর ঔদ্ধ্যত্য হিসেবে দেখছেন ভারতের বুদ্ধিজীবীরা। তারা বলিেছন, উগ্র হিন্দুত্ববাদের ধ্বজা উড়িয়ে বিজেপি রাজত্ব করছে, তা রক্ষার তাগিদই এই সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে স্পষ্ট। পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরাসহ পূর্ব ভারতের বিএসএফের ইস্টার্ন কমান্ড ও স্থলসীমান্ত কর্তৃপক্ষের কর্তাদের নিয়ে গঠিত ওই কমিটি গঠনের মধ্য দিয়ে বিজেপি হিন্দু মননে প্রলেপ দিতে চাইছে। আশ্বস্তও করতে চাইছে। পূর্ব ভারতে তাদের দল বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর অত্যাচার বন্ধে সরকারকে ক্রমাগত চাপ দিয়ে আসছে। এমনকি রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘের (আরএসএস) সাধারণ সম্পাদক দত্তাত্রয়ে হোসাবলে বিবৃতি দিয়ে সরকারকে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিও জানিয়েছেন।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
Situs Toto
toto togel
slot toto
Toto slot gacor
bacan4d
totoslotgacor
bacan4d
bacan4d slot gacor
bacan4d login
Bacan4d
bacan4d
bacan4d bonus
Toto gacor
Toto gacor
slot gacor hari ini
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d link alternatif
slot gacor bett 200
situs toto
SITUS TOTO
toto 4d
toto gacor
Slot Toto
Slot Toto
Slot Toto
Situs toto
Slot toto
Slot Dana
Slot Dana
Judi Bola
Judi Bola
Slot Gacor
toto slot
bacan4d toto
bacan4d akun demo slot
bacantogel
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacantoto
bacan4d
Bacan4d Login
slot demo
Bacan4d Toto
toto gacor
Slot Gacor
Live Draw
Live Draw Hk
toto slot
Bacan4d slot gacor
toto macau
toto slot
Toto Gacor
slot dana
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
Slot Dp Pulsa
Bacan4d Login
toto slot
Bacansports/a>
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
toto slot
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
slot gacor
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
toto slot
slot demo
toto slot gacor
bacansports Slot toto toto slot Slot toto Slot dana Slot toto slot maxwin slot maxwin toto slot toto slot slot dana
Toto Bola
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
bacan4d
ts77casino
situs toto
slot pulsa
bacansports
situs toto
slot toto
situs toto
slot toto
situs toto
toto slot
bacansport
bacansport
bacansports
slot toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
situs toto
situs toto
xx1toto
toto slot
xx1toto
xx1toto
slot qriss
Slot Toto
slot dana
situs toto
slot toto
slot dana
Situs Toto Slot Gacor
xx1toto
xx1toto
bacan4d
xx1toto
xx1toto
toto slot
situs toto slot gacor