Hot

মোদির শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী, দুই নেতার বৈঠক আজ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নয়াদিল্লিতে রবিবার সন্ধ্যায় টানা তৃতীয় মেয়াদে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদির শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদের সঙ্গে রাষ্ট্রপতি ভবনে তৃতীয় বিদেশী নেতা হিসেবে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, ভুটান, নেপাল, মরিশাস ও সেসিলির শীর্ষ নেতারাও মোদির শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
অনুষ্ঠানে ৮ হাজারের বেশি বিশিষ্টজনের রেকর্ড উপস্থিতি দেখা গেছে।
নেতৃবৃন্দ পরে একই সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতি ভবনে রাষ্ট্রপতি শ্রীমতি দ্রৌপদী মুর্মু প্রদত্ত ভোজসভায় যোগ দেন। এতে অংশগ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ সোমবার সকালে হায়দরাবাদ হাউসে একান্ত বৈঠক করবেন শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদি। এ ছাড়া তিনি আজ নয়াদিল্লিতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।
হাসিনা-মোদি বৈঠক নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, ফের ক্ষমতায় আসার পর দক্ষিণ এশিয়ার দুই নিকট প্রতিবেশী দেশের শীর্ষ নেতারা এই প্রথম আলোচনায় বসতে যাচ্ছেন।
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন সাংবাদিকদের বলেন, ভারতের সঙ্গে আলাদা একটি দ্বিপক্ষীয় সফর নিয়ে দুই দেশ কাজ করছে। ভারতে দ্বিপক্ষীয় সফরটি পরবর্তী সময়ে নির্ধারণ করা হবে। সেখানে বেশ কিছু সমঝোতা স্মারক ও চুক্তি সই এবং ঘোষণার বিষয় রয়েছে। সে বিষয়ে দুই দেশ কাজ করবে। যেহেতু বাংলাদেশে নতুন সরকার গঠন হয়েছে আর ভারতে নতুন সরকার গঠন হচ্ছে, ফলে দুই দেশের সম্পর্কের ধারাবাহিকতাই থাকবে। আমরা বেশ কিছু ক্ষেত্রে নতুন নতুন উদ্যোগ দেখতে পারব আশা করি।
কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, দুই প্রধানমন্ত্রীর একান্তে অনুষ্ঠেয় আলোচনায় সাম্প্রতিক বছরগুলোর ধারাবাহিকতায় দুই দেশের সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার বিষয়টি গুরুত্ব পাবে। এরই অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিকল্পিত দ্বিপক্ষীয় সফরের বিষয়টিও আলোচনায় আসবে। যেহেতু আগামী মাস দেড়েকের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত ও চীন সফরের কথা, স্বভাবতই দিল্লির সফরটি কখন হতে পারে, তা নিয়ে তাদের কথা হবে।
দুই প্রধানমন্ত্রীর সংক্ষিপ্ত এই আলোচনায় আসন্ন শীর্ষ বৈঠকে দুই দেশের কোথায় কোথায় অগ্রাধিকার থাকবে, সে বিষয়গুলো তুলতে পারেন তারা। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অভিন্ন নদীর পানি বণ্টনের ইস্যু, বিশেষ করে তিস্তা-গঙ্গার মতো বিষয়, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ নিশ্চিতের জন্য বিশেষ ব্যবস্থার মতো বিষয়সহ বাণিজ্য ও সংযুক্তির বিষয়গুলো আসার কথা রয়েছে। অন্যদিকে, মোংলা বন্দর ভারতের জন্য বিশেষভাবে ব্যবহারের পদক্ষেপের বিষয়টি তুলতে পারে দিল্লি।
এর আগে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইট শনিবার সকাল ১১টা ৫১ মিনিটে (স্থানীয় সময়) ভিভিআইপি বিমানবন্দর পালাম এয়ার ফোর্স স্টেশনে অবতরণ করে।
পালাম বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (সিপিভি ও ওআইএ) মুক্তেশ পরদেশী, বাংলাদেশে ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা এবং ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. মুস্তাফিজুর রহমান স্বাগত জানান।
প্রধানমন্ত্রীর আজ সোমবার বিকেলে

 ঢাকার উদ্দেশে নয়াদিল্লি ত্যাগ করার কথা রয়েছে।
এর আগে বুধবার টেলিফোনে আলাপের সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তার সরকারের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানান। শেখ হাসিনা আমন্ত্রণ গ্রহণ করেন।
ভারতের সদ্য সমাপ্ত ১৮তম লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ ২৯৩টি আসন জিতেছে এবং বিরোধী ইন্ডিয়া ব্লক ২৩৪টি আসন পেয়েছে।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী, নরেন্দ্র মোদিকে অভিনন্দন জানানো প্রথম বিদেশী নেতাদের মধ্যে অন্যতম, যা দুই নেতার মধ্যে উষ্ণ ব্যক্তিগত সম্পর্ক প্রতিফলিত করে।
শেরিং তোবগের সঙ্গে শেখ হাসিনা ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের মধ্য দিয়ে ভুটান থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানির বিষয়ে তার আগ্রহের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন। ভুটানের প্রধানমন্ত্রী দাশো শেরিং তোবগে রবিবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে নতুন দিল্লিতে তার আবাসস্থলে সৌজন্য সাক্ষাৎ করলে তিনি এ আগ্রহের কথা জানান।
তিনি ভুটানের প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, ‘এর জন্য একটি ত্রিপক্ষীয় চুক্তির প্রয়োজন এবং আমরা ইতোমধ্যেই ভারতের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভুটান বাংলাদেশে জলবিদ্যুৎ রপ্তানির জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ সাক্ষাৎ শেষে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এসব কথা জানান।
ভুটানের প্রধানমন্ত্রী তার দেশে একটি বার্ন ইউনিট নির্মাণ এবং এক বছরের জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন। শেখ হাসিনা বলেন, ভুটান বাংলাদেশের হৃদয়ে একটি বিশেষ স্থান দখল করে আছে। কেননা ভুটান ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পর বাংলাদেশকে একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে প্রথম স্বীকৃতি দেয়। তিনি বলেন, আমরা ভুটানকে সব ধরনের সহায়তা দিতে প্রস্তুত।
তিনি কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে ভারতকে দেওয়া জায়গার যথার্থ ব্যবহারের ওপর জোর দেন এবং আশা করেন ভুটান সেখানে শিল্প গড়ে তুলবে। প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে ভুটানের বিনিয়োগ চেয়েছেন।
ভুটানের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর একমাত্র কন্যা এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক সায়মা ওয়াজেদের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং তার সাম্প্রতিক ভুটান সফরের কথা উল্লেখ করেন।
বিজেপির প্রবীণ নেতা এলকে আদভানির সঙ্গে শেখ হাসিনার সাক্ষাৎ ॥ ভারতে সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশটির ক্ষমতাসীন দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) প্রবীণ নেতা ভারতরত্ন লালকৃষ্ণ (এলকে) আদভানির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button