International

যুক্তরাজ্যের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হতে যাওয়া কে এই কিয়ার স্টারমার

ভরাডুবি হচ্ছে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির। নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার পথে রয়েছে বিরোধী দল লেবার পার্টি। বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শেষে বুথ ফেরত জরিপের ফল এটা।

ভোটের চূড়ান্ত ফল একই হলে যুক্তরাজ্যে টানা ১৪ বছর পর ক্ষমতা থেকে সরবে কনজারভেটিভ পার্টি। বিদায় নেবেন প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক।

ভোটের মাঠে লেবার পার্টির এমন সাড়া জাগানো সাফল্যের নায়ক স্যার কিয়ার স্টারমার। ধারণা করা হচ্ছে, নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে লেবার পার্টি সরকার গড়লে যুক্তরাজ্যের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হবেন তিনি।

কিয়ার স্টারমারের জন্ম রাজধানী লন্ডনে। ৬১ বছর বয়সী স্টারমার রাজনীতিতে আসার আগে ছিলেন মানবাধিকার আইনজীবী। যুক্তরাজ্যের পাবলিক প্রসিকিউশন দপ্তরের পরিচালক পদে দায়িত্ব পালন করেছেন।

২০২০ সালের এপ্রিলে লেবার পার্টির নেতা হিসেবে দায়িত্ব নেন স্টারমার। জেরেমি করবিনের স্থলাভিষিক্ত হন তিনি। দায়িত্ব নিয়ে দলকে যুক্তরাজ্যের রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে আসেন স্টারমার। কয়েক বছরের মাথায় ভোটের লড়াইয়ে এর সুফল পেলেন তিনি।

সমর্থকদের চোখে স্টারমার একজন বাস্তববাদী মানুষ। ভরসা করার মতো রাজনীতিবিদ। সমালোচকদের অনেকের মতে, স্টারমার চৌকস নন। বরং তিনি অনেকটাই ঝিমিয়ে পড়া একজন রাজনীতিক।

রাজনীতির মাঠে সাড়া ফেলে দেওয়া স্টারমার একজন দক্ষ ফুটবলার। ক্লাব ফুটবলে আর্সেনালের ভক্ত তিনি। ফৌজদারি বিচার প্রক্রিয়ায় অবদান রাখায় ‘নাইট’ উপাধি পেয়েছেন স্টারমার।

সম্প্রতি সংবাদমাধ্যম দ্য সান আয়োজিত এক বিতর্ক অনুষ্ঠানে স্টারমার বলেন, ‘বাংলাদেশের মতো দেশগুলো থেকে যেসব মানুষ আসছেন, তাঁদের ফেরত পাঠানো হচ্ছে না।’ কনজারভেটিভ সরকারের রুয়ান্ডা অভিবাসী প্রত্যাবাসন প্রকল্পের সমালোচনা করতে গিয়ে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

স্টারমারের এমন মন্তব্যে ক্ষোভে ফেটে পড়ে যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশি সম্প্রদায়। প্রতিবাদ জানানো হয়। এমন মন্তব্যে বিপাকে পড়েন এবারের নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত প্রার্থীরা। এবার লেবার পার্টির আটজনসহ সব মিলিয়ে অন্তত ৩৪ জন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত যুক্তরাজ্যের নাগরিক ভোটে লড়ছেন।

তুমুল সমালোচনার মুখে সুর নরম করেন স্টারমার। তিনি বলেন, ‘আমি আসলে বাংলাদেশকে আলাদাভাবে বোঝাতে চাইনি। আমাদের অর্থনীতি, সংস্কৃতি ও আমাদের দেশের প্রতি বাংলাদেশি কমিউনিটির অবদানকে আমি ব্যাপকভাবে মূল্যায়ন করি।’

রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকারপ্রধানের দায়িত্ব নেওয়ার পর স্টারমারকে ডাউনিং স্ট্রিটে আরও কঠিন পরীক্ষার মুখে পড়তে হবে। ভোটের আগে তিনি এক শব্দের প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রচার করেছেন। তা হচ্ছে—পরিবর্তন।

 জনগণের জন্য সরকারি সেবার মান কমে যাওয়া ও জীবনযাত্রার মান নিয়ে মানুষের ক্ষোভকে কাজে লাগিয়েছেন স্টারমার। বলেছেন, লেবার পার্টি পরিবর্তন আনবে। যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি ক্ষমতায় আসতে যাচ্ছেন, তা থেকে শিগগিরই উত্তোলনের কোনো জাদুমন্ত্র তাঁর কাছে নেই।  

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button