Science & Tech

যুক্তরাজ্যে আবিষ্কৃত হলো ‘ডাইনোসর হাইওয়ে’

যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ডশায়ারের একটি খনিতে জুরাসিক যুগের প্রায় ২০০ ডাইনোসরের পায়ের ছাপের সন্ধান পাওয়া গেছে। এই পায়ের ছাপগুলোকে ডাইনোসর চলার পথ বা ‘ডাইনোসর হাইওয়ে’ হিসেবে অভিহিত করা হচ্ছে।

বিজ্ঞানীদের ধারণা, প্রায় ১৬৬ মিলিয়ন বছর আগের এই পথ প্রাগৈতিহাসিক ডাইনোসরদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রার গুরুত্বপূর্ণ চিত্র ফুটিয়ে তুলেছে।  

অক্সফোর্ড ও বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা ডিউয়ার্স ফার্ম কোয়ারিতে এই সন্ধান পান। পায়ের ছাপগুলো মেগালোসরাস নামে এক মাংসাশী ডাইনোসর এবং তার চেয়ে দ্বিগুণ বড় তৃণভোজী ডাইনোসরের বলে নিশ্চিত করেছেন বিজ্ঞানীরা।

২০২৩ সালে কোয়ারির শ্রমিক গ্যারি জনসন প্রথম এই বিশেষ চিহ্নগুলো লক্ষ্য করেন। তখন থেকে এটি নিয়ে প্যালিয়ন্টোলজিস্টদের আগ্রহ বাড়তে থাকে। তাদের মতে, এটি ডাইনোসরদের গতিবিধি ও খাদ্যাভ্যাসের অজানা দিকগুলো জানার ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।

২০২৪ সালের জুন মাসে এক সপ্তাহের জন্য প্রায় ১০০ জন স্বেচ্ছাসেবী এবং গবেষক মিলে এই জায়গায় খনন কাজ চালান। তাদের সংগ্রহ করা তথ্যগুলো ১৯৯৭ সালে একই খনিতে আবিষ্কৃত অন্য একটি ডাইনোসর চলার পথের সঙ্গে সম্পর্কিত। তবে সেই অংশটি বর্তমানে আর সংরক্ষিত নেই।  

নতুনভাবে পাওয়া দীর্ঘতম পথটি প্রায় ১৫০ মিটার। এই চিহ্নগুলোর মধ্যে রয়েছে বৃহৎ সোরোপড ডাইনোসরের পায়ের ছাপ, যেগুলো হাতির চলার সঙ্গে তুলনা করা যায়। এ ছাড়া মেগালোসরাসের মতো মাংসাশী ডাইনোসরেরও পায়ের চিহ্ন পাওয়া গেছে।

গবেষক ড. ডানকান মারডক বলেন, পায়ের ছাপগুলোর সংরক্ষণ এতটাই ভালো হয়েছে যে, কাদার মধ্যে ডাইনোসরের পা ঢোকা এবং বের হওয়ার মুহূর্তের দাগ পর্যন্ত স্পষ্ট দেখা যায়। খনন কাজ পরিচালনার সময় ড্রোন ফটোগ্রাফি ব্যবহার করে ২০,০০০ ছবি তোলা হয়, যা দিয়ে চিহ্নগুলোর থ্রিডি মডেল তৈরি করা হবে।  

খনি এলাকায় কাজ চলার সময় সীমিত সময়ের মধ্যে যতটা সম্ভব তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে এখনও অনেক অংশ অজানা রয়ে গেছে। গবেষক ড. কির্সটি এডগার জানান, নতুন অংশ উন্মোচিত হলে আমরা খনির কর্মীদের সঙ্গে সমন্বয় করে আরও গবেষণার পরিকল্পনা করছি।  

ডাইনোসরের পায়ের ছাপগুলোর এমন অমূল্য সংরক্ষণ প্রমাণ করে যে, সঠিক পরিবেশ ও আদর্শ অবস্থার কারণেই এই ছাপগুলো এতো দীর্ঘ সময় ধরে টিকে ছিল। এই আবিষ্কার জুরাসিক যুগের প্রাণীদের সম্পর্কে নতুন এবং চমকপ্রদ তথ্য দিতে সক্ষম হবে। 

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button