Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
USA

যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রদের যেভাবে কঠিন পরিস্থিতিতে ফেলেছেন ট্রাম্প

দুই সপ্তাহ ধরে মুখ বন্ধ রেখেছিল যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধু দেশগুলো। নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে অভিষেকের পর থেকেই ইউরোপ ও মিত্র দেশগুলোর নেতারা ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিয়ে উষ্ণ কথাবার্তা বলে আসছিলেন। সমালোচনা ছিল খুবই কম। হোয়াইট হাউসের গদিতে বসার পর ট্রাম্প যে হট্টগোল শুরু করেছেন, তা নিয়ে কোনো কোনো মিত্র নেতার মনে অসন্তোষ থাকলেও প্রকাশ করেননি।

তবে সেই রাখঢাক শেষ পর্যন্ত টেকেনি। ক্ষমতায় বসার পর চলতি সপ্তাহে সবচেয়ে সবচেয়ে উসকানিমূলক পররাষ্ট্রনীতি ঘোষণা করেছেন ট্রাম্প। সংঘাতে বিধ্বস্ত ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকাকে যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে নিতে চেয়েছেন তিনি। সেখান থেকে বিতাড়িত করতে চেয়েছেন ফিলিস্তিনিদের। এরপর চুপ থাকা যুক্তরাষ্ট্রের অনেক মিত্র দেশ প্রতিবাদ জানিয়ে মুখ খোলা শুরু করেছে।

যুদ্ধবিরতি কার্যকরের পর রাফায় ফেরা ফিলিস্তিনিদের উচ্ছ্বাস। রাফা, গাজা, ফিলিস্তিন, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫

যুদ্ধবিরতি কার্যকরের পর রাফায় ফেরা ফিলিস্তিনিদের উচ্ছ্বাস। রাফা, গাজা, ফিলিস্তিন, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫

ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত দশকের পর দশক ধরে চলে আসা পশ্চিমা নীতিনির্ধারণী প্রক্রিয়ায় বড় আঘাত হেনেছে বলেই মনে করা হচ্ছে। ফিলিস্তিন–সংকট নিরসনে দীর্ঘ সময় ধরে যে ‘দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধানের’ মডেল গড়ে তোলা হয়েছে—ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে তার বড় তফাত রয়েছে। যদিও দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধানের যে কথা বলা হয়, তার বাস্তবিক কোনো অগ্রগতি এখনো দৃষ্টিগোচর নয়।

গাজা নিয়ে ট্রাম্পের নতুন পরিকল্পনার পর তা প্রত্যাখ্যান করেছে বিভিন্ন দেশ। মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্ররা অনাস্থার সঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। এ অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠায় যে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চলছে, তার ওপর ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত প্রভাব ফেলতে পারে বলে উদ্বেগ জানিয়েছে তারা। বিশেষ করে গাজায় হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যে যুদ্ধবিরতি চলছে, তার ওপর প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

নিজেদের জন্মভূমি ছেড়ে যাওয়ার প্রশ্নে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন ফিলিস্তিনিরাও। ইউরোপের দেশগুলোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক তুলনামূলক কম জটিল। ট্রাম্পের গাজাবিষয়ক সিদ্ধান্ত নিয়ে এসব দেশের নেতারাও ভিন্ন ভিন্ন সুরে কথা বলেছেন। তবে তাঁদের স্পষ্ট অবস্থান হলো, তাঁরা এই সিদ্ধান্ত সমর্থন করেন না। এর মধ্য দিয়ে মিত্রদের জটিল এক পরিস্থিতির মধ্যে ফেলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের সমালোচনা করা সবার জন্য সহজ নয়। বলা চলে যুক্তরাজ্যের কথাই। যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের মিত্র দেশটি ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।

ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর স্ট্রাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের মিডল ইস্ট প্রোগ্রামের পরিচালক জন বি অল্টারম্যান বলেন, ‘আমি যেটা বুঝতে পারছি, তা হলো তারা (যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র) সবাই হতবাক হয়ে পড়েছে। এমনটা যে ঘটতে যাচ্ছে, তা তারা আন্দাজ করতে পারেনি।’ অল্টারম্যান একসময় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তা ছিলেন।

ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের আরও ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। ভূরাজনীতিতে যাচ্ছেতাইভাবে হস্তক্ষেপ করার ট্রাম্পের যে ইতিহাস রয়েছে, তা এরই মধ্যে মিত্রদের থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে আদর্শগত দিক দিয়ে একঘরে করে ফেলার হুমকি সৃষ্টি করেছে। এখন গাজা নিয়ে ট্রাম্প যে মন্তব্য করেছেন, তা যুক্তরাষ্ট্রকে একঘরে করে ফেলার ওই প্রক্রিয়ার গতি আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।

ট্রাম্প বনাম ইউরোপ

হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প যেসব অনিশ্চয়তা নিয়ে আসছেন, সেগুলোর বিষয়ে সতর্ক বেশির ভাগ পশ্চিমা দেশ। তবে ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদের চেয়ে এবার তারা বেশি প্রস্তুত। ট্রাম্প যে সাড়া জাগানো কিছু পদক্ষেপ নেবেন, সে ধারণা তাদের ছিল। আর ট্রাম্পের গাজা পরিকল্পনা নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলো যে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে, তাতে দ্বিতীয় মেয়াদে ট্রাম্পকে তারা কীভাবে সামাল দেবে তা বোঝা যাচ্ছে।

ট্রাম্পের পরিকল্পনার বড় সমালোচনা করেছে জাতিসংঘ। জাতিসংঘের মহাসচিব ট্রাম্পকে ‘জাতিগত নিধনের’ বিষয়ে সতর্ক করেছেন। ফ্রান্সের ভাষ্যমতে, এই প্রস্তাবের ফলে ‘আন্তজাতিক আইনের মারাত্মক লঙ্ঘন’ হবে। স্পেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘গাজা হচ্ছে গাজাবাসীর ভূমি।’ আর ট্রাম্পের পরিকল্পনাকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলে মনে করেন জার্মানির প্রেসিডেন্ট ওয়াল্টার স্টেইনমেয়ার।  

শুধু গাজা পরিকল্পনা নিয়ে ট্রাম্প ও ইউরোপের মধ্যে ভূরাজনৈতিক ফাটল দেখা দেয়নি। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামানোর বিষয়ে সম্ভাব্য আলোচনার ওপরও অনেকে নজর দিচ্ছেন।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পফাইল

ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে বসনিয়ায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন এরিক নেলসন। পরে তিনি মিউনিখে মার্শাল ইউরোপিয়ান সেন্টার ফর সিকিউরিটি স্টাডিজের সহযোগী পরিচালক হিসেবে যোগ দেন। নেলসন বলেন, ‘একজন কূটনীতিক হিসেবে আমার কাজ ছিল মার্কিন সরকারের স্বার্থগুলো যতটা সম্ভব ভালোভাবে ব্যাখ্যা করা। এই কাজটা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কঠিন করে তুলেছেন। এরপর তিনি কী করতে যাচ্ছেন, তা অনুমান করা খুবই কঠিন।’

তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের সমালোচনা করা সবার জন্য সহজ নয়। বলা চলে যুক্তরাজ্যের কথাই। যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের মিত্র দেশটি ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। এর ফলও মিলেছে। চলতি সপ্তাহে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের প্রশংসা করেছেন ট্রাম্প। ইউরোপীয় ইউনিয়নের জন্য তিনি শুল্ক আরোপের যে হুমকি দিয়ে রেখেছেন, তার আওতায় যুক্তরাজ্য পড়বে না এমন ইঙ্গিতও দিয়েছেন।

তবে এই সুসম্পর্কের সেতুর ভিত্তিটা নড়বড়ে। লন্ডন খুব ভালোভাবে জানে যে নেতাবাচক বিচার–বিবেচনা থেকে করা কোনো মন্তব্য ট্রাম্পকে খুশি করার মাসের পর মাস ধরে তাদের প্রচেষ্টা নস্যাৎ করে দিতে পারে। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের আজ্ঞাবহ হয়ে থাকার বিপদ সম্পর্কেও বোঝেন কিয়ার স্টারমার। ঠিক এই বিষয় নিয়ে তিনি একসময় বিরোধী পক্ষ কনজারভেটিভ পার্টির মন্ত্রীদের সমালোচনা করেছিলেন।
বিষয়টি মাথায় নিয়ে শব্দচয়নের ক্ষেত্রে কৌশলী হয়েছে স্টারমারের সরকার। চলতি সপ্তাহে ইউক্রেনে স্টারমারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি বলেছেন, ‘গাজা ইস্যুতে ট্রাম্পের অবস্থান সঠিক।’ গাজাবাসীর পক্ষ নিয়ে তিনি আবার এটাও বলেছেন যে দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধানের বিষয়ে যুক্তরাজ্যের দৃষ্টিভঙ্গি সব সময় স্পষ্ট। গাজায় নিজেদের জন্মভূমিতে ফিলিস্তিনিরা বসবাস করুক এবং সেখানে তাঁদের সমৃদ্ধি হোক, তা অবশ্যই দেখতে চায় লন্ডন।

স্টারমারের দল লেবার পার্টির একজন পার্লামেন্ট সদস্য সিএনএনকে বলেছেন, গাজা নিয়ে ট্রাম্পের পরামর্শের পর তাঁর সহকর্মীরা ‘বিস্মিত’ হয়েছেন। তবে গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং লন্ডন ও ওয়াশিংটনের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক থেকে ট্রাম্পের সমালোচনা—এমন নানা বিষয় মাথায় রাখতে হচ্ছে তাঁদের। ট্রাম্পের সঙ্গে কিয়ার স্টারমার যতটা সম্ভব সম্পর্ক ধরে রাখতে চাইছেন। এটা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী স্টারমারের প্রতি ট্রাম্পের ব্যাপক সহানুভূতি রয়েছে।

পরবর্তী লড়াই

গাজা পরিকল্পনার মাধ্যমে ট্রাম্প যদি কূটনৈতিক অচলাবস্থা সৃষ্টির চেষ্টা করেন, তাহলে তা যুক্তরাষ্ট্রের মিত্ররা ভালোভাবে নেবে না বলে মনে করেন জন বি অল্টারম্যান। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বিষয়ে ওয়াশিংটন একঘরে হয়ে পড়তে পারে। এর জেরে আন্তর্জাতিক নেতৃত্বের ক্ষেত্রে শূন্যতা সৃষ্টি হতে পারে।

অল্টম্যান বলেন, বেশ কয়েকটি দেশ এটা মনে করতে পারে যে রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে তাদের ভিন্ন সম্পর্ক দরকার। এর পেছনে কিছুটা কারণ হবে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভর করতে পারছে না। আর কিছুটা কারণ হবে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে কোনো নৈতিক সুবিধা তারা দেখতে পাচ্ছে না।  

এরই মধ্যে ট্রাম্পের নির্দেশে যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে, নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে এবং সমালোচনা করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডির সহায়তা বন্ধ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এসব পদক্ষেপের জেরে যুক্তরাষ্ট্রের একঘরে হয়ে পড়ার ঝুঁকি আরও বেড়েছে।

শুধু গাজা পরিকল্পনা নিয়ে ট্রাম্প ও ইউরোপের মধ্যে ভূরাজনৈতিক ফাটল দেখা দেয়নি। রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ থামানোর বিষয়ে সম্ভাব্য আলোচনার ওপরও অনেকে নজর দিচ্ছেন। এর আগে এই যুদ্ধ থামাতে ইউক্রেনের কিছু ভূখণ্ড মস্কোর কাছে হস্তান্তরের পরামর্শ দিয়েছিলেন ট্রাম্প। তা নিয়েও মতানৈক্য দেখা দিয়েছিল। এ ছাড়া পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য দেশের কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন ধরে একটি শঙ্কা করে আসছেন যে ট্রাম্প এমন কিছু প্রস্তাব করতে পারেন, যা কিয়েভ ও ইউরোপের অন্য দেশগুলোর রাজধানীকে ঝামেলার মধ্যে ফেলবে।

আগামী সপ্তাহে এই শঙ্কা কাটানোর চেষ্টা করবেন ইউরোপের বিভিন্ন দেশের কর্মকর্তারা। তখন জার্মানিতে মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ওই সম্মেলনে যোগ দেবেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও, ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স, ইউক্রেন ও রাশিয়ায় যুদ্ধ থামাতে নিযুক্ত দূত কেইথ কেলগসহ ট্রাম্প–ঘনিষ্ঠরা। এরিক নেলসন বলেন, ‘আমি আশা করি, ইউক্রেন ইস্যুতে আরও হিসাব–নিকাশ করে এবং ভারসাম্যপূর্ণ একটি পদক্ষেপ নেবে মার্কিন প্রশাসন।’

নেলসনের মনে আশা থাকলেও ট্রাম্পের ওপর ভরসা করতে পারছেন না জন বি অল্টারম্যান। তিনি বলেন, বৈশ্বিক অঙ্গনে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সরকার আস্থা ধরে রাখার জন্য ব্যাপক চেষ্টা করেছিল। সেখানে ট্রাম্প প্রশাসনের প্রবণতা সম্পূর্ণ বিপরীত।
আরও পড়ুন:
ইসরায়েলের কাছে ৭৪০ কোটি ডলারের অস্ত্রসরঞ্জাম বিক্রিতে ট্রাম্প প্রশাসনের অনুমোদন
জামাতা কুশনারের এক বছর আগের স্বপ্নই কি বাস্তবায়ন করতে চলেছেন ট্রাম্প
ট্রাম্পের গাজা পরিকল্পনা সফল হবে না, তবে এর প্রভাব থাকবে

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacantoto4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d toto
slot toto
bacan4d
bacan4d
togel online
Toto Slot
saraslot88
Bacan4d Login
bacantoto
Bacan4d Login
bacan4d
bacan4drtp
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot maxwin
slot bacan4d
slot maxwin
bacan4d togel
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d login
bacantoto 4d
slot gacor
bacansport
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot77 gacor
JAVHD
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
gacor slot
slot gacor777
slot gacor bacan4d
bacan4d
bacansport
toto gacor
bacan4d
bacansports login
slot maxwin
slot dana
slot gacor
slot dana
slot gacor
bacansports
bacansport
bacansport
bacansport
bawan4d
bacansports
bacansport
slot gacor
judi bola
slot maxwin
slot maxwin
bacansport
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot demo
slot gacor
slot gacor
slot gacor
toto slot
slot gacor
demo slot gacor
slot maxwin
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot toto