Trending

যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি ভিয়েতনামের অর্ধেক

তৈরি পোশাক দেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য। মোট রপ্তানি আয়ের ৮৫ শতাংশই আসে এ খাত থেকে। একক রাষ্ট্র হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র দেশের তৈরি পোশাকের সবচেয়ে বড় বাজার। মোট রপ্তানি আয়ের ২০ থেকে ২২ শতাংশ আসে দেশটি থেকে। তবে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি পরিস্থিতি কিছুটা উদ্বেগজনক হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিযোগী ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া, ভারত এবং পাকিস্তানের রপ্তানি সেখানে বাড়ছেই। বিপরীতে বাংলাদেশের রপ্তানি কমছে। বিশেষ করে প্রধান প্রতিযোগী ভিয়েতনামের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি এখন অর্ধেক। এ প্রবণতা অব্যাহত থাকলে বিশ্ববাজারে পোশাক রপ্তানিতে আবারও ভিয়েতনামের কাছে দ্বিতীয় রপ্তানিকারক দেশের মর্যাদা হারাতে হতে পারে। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার হিসাবে পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশ এখন দ্বিতীয় প্রধান পোশাক রপ্তানিকারক দেশ। দুই বছর আগে ভিয়েতনাম দ্বিতীয় হয়েছিল। 

যু্ক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন অফিস অব টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেলের (অটেক্সা) সর্বশেষ পরিসংখ্যান বলছে, চলতি পঞ্জিকা বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৯ মাসে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি থেকে আয় আগের একই সময়ের চেয়ে ৬ দশমিক ২৯ শতাংশ কম। এ সময় যুক্তরাষ্ট্রে ভিয়েতনামের রপ্তানি বেড়েছে ১ দশমিক ২৭ শতাংশ। এ সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ভিয়েতনাম পোশাক রপ্তানি করেছে ১ হাজার ১২১ কোটি ২৬ লাখ ডলার। আর বাংলাদেশ রপ্তানি করেছে ৫৪১ কোটি ৬২ লাখ ডলার। 

অটেক্সার উপাত্ত বলছে, অন্য রপ্তানিকারক দেশের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের পোশাক রপ্তানি বেড়েছে শূন্য দশমিক ৪৬ শতাংশ। পাকিস্তানের বেড়েছে ২ দশমিক ৪১ শতাংশ। কম্বোডিয়ার বেড়েছে ৭ দশমিক ১৫ শতাংশ। অবশ্য প্রধান রপ্তানিকারক চীনের রপ্তানি ১ দশমিক ৯৫ শতাংশ কমেছে। যদিও সারাবিশ্ব থেকে এ সময় যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক আমদানি কমেছে ২ দশমিক ৪৭ শতাংশ। 
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে রপ্তানি নিয়ে শঙ্কা এবং অনিশ্চয়তার কথা বলা হচ্ছে কয়েক মাস ধরে। বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে জাতীয় নির্বাচন নিশ্চিত করতে গত বছর মে মাসে নতুন ভিসানীতি ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র। গত নভেম্বরে বিশ্বজুড়ে শ্রম অধিকার রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নীতি কাঠামো ঘোষণা করে, যা দেশটিতে বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্যের জন্য নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করে। এতে বলা হয়, বিশ্বজুড়ে শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা, শ্রমিক অধিকারের পক্ষের কর্মী, শ্রমিক সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে যে বা যারা হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করবে, তাদের জবাবদিহির আওতায় আনবে যুক্তরাষ্ট্র। এ জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে বাণিজ্য, ভিসা নিষেধাজ্ঞাসহ যুক্তরাষ্ট্রের কাছে যত ধরনের ব্যবস্থা রয়েছে, তা প্রয়োগ করা হবে। এ সংক্রান্ত প্রেসিডেন্সিয়াল স্মারক সইয়ের পরপরই যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি পাঠানো হয়। এতে বলা হয়, শ্রম অধিকার লঙ্ঘন হয়েছে মনে করলে নিষেধাজ্ঞা ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান কিংবা রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে আরোপ করার সুযোগ রয়েছে। এর প্রভাব বাংলাদেশের পোশাক খাতের ওপর পড়তে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি কমে যাওয়া উদ্বেগজনক মনে করছেন উদ্যোক্তারা। যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রতিযোগীদের তুলনায় পিছিয়ে পড়ার কারণ জানতে চাইলে ডেনিম এক্সপার্টের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল সমকালকে বলেন, প্রধান বাজারে রপ্তানি কমে আসার বিপরীতে প্রতিযোগী ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া, ভারত ও পাকিস্তানের রপ্তানি বেড়ে যাওয়ার তথ্য প্রমাণ করে মার্কিন ব্যান্ড-ক্রেতারা বাংলাদেশের বিকল্প উৎসের দিক ঝুঁকছে। বাংলাদেশের পরিবর্তে ভিন্ন উৎস থেকে আমদানির প্রবণতা রীতিমতো উদ্বেগের। 
তিনি আরও বলেন, এখন অনুকূল পরিবেশ তৈরি হচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে আমেরিকায়। ক্রেতারা বেশি পরিমাণে পোশাক নেওয়ার কথা জানাচ্ছেন এখন। শ্রমিক অসন্তোষসহ নানামুখী ষড়যন্ত্র বন্ধ হলে খুব দ্রুতই আবার ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব। 

Show More

One Comment

  1. Hi there, I found your blog by the use of Google at the same time as searching for a related topic, your web site came up, it seems good. I have bookmarked it in my google bookmarks.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button