USA

যুক্তরাষ্ট্রে মা-ভাইয়ের সামনে বাংলাদেশি যুবককে হত্যা, ভিডিও প্রকাশ

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে নিজ বাড়ির রান্নাঘরে বাংলাদেশি উইন রোজারিও (১৯) নামের বাংলাদেশি তরুণকে দুই পুলিশ গুলি করে হত্যা করার ৩৬ দিন পর ৩ মে পুলিশের বডি ক্যামেরার ফুটেজ প্রকাশ করেছেন নিউইয়র্ক স্টেটের অ্যাটর্নি জেনারেল (এজি) লেটিশা জেমস। তিনি স্থানীয় সময় শুক্রবার (৩ মে) গত ২৭ মার্চ ওই হত্যাকাণ্ডের পুলিশের বডি ক্যামেরার ফুটেজ প্রকাশ করেছেন।

ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, ঘটনার দিন (২৭ মার্চ) দুপুরে নিউইয়র্ক সিটির ওজোন-পার্কে মা ও ভাইয়ের সঙ্গে কিছুটা অস্বাভাবিক আচরণ করেন উইন রোজারিও। এ সময় জরুরি হেল্প-লাইন ৯১১-এ ফোন করে পুলিশের সহায়তা চান তারা। এরপর বেলা ২টা ৩০ মিনিটে নিউইয়র্ক পুলিশের দুই সদস্য বাসায় ঢুকে উইনকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন। এর এক পর্যায়ে টেজার গান ছোঁড়া হয়। সে সময়ে উইনের মা উইনকে জড়িয়ে ধরে পুলিশের প্রতি আকুতি জানান গুলি না করার জন্য।


তবুও পুলিশ উপর্যুপরি টেজার ছোড়ে। আতঙ্কে মানসিক বিকারগ্রস্ত উইন চেয়ারের ওপরে রাখা মাছ-মাংস কাটার কেঁচি হাতে নিয়ে পুলিশের দিকে ধেয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তার মা ছুটে এসে জোর করে কেঁচি ছাড়িয়ে নেন। এবং পুলিশকে গুলি না করার জন্য আকুতি জানান। এক পর্যায়ে রোজারিও ফের কেঁচি হাতে নিয়ে দ্রুত পুলিশের দিকে এগোতে থাকে। তার মা ছেলেকে ঝাপটে ধরে। পুলিশ মাকে সরে যেতে নির্দেশ দেয়। তখন রোজারিও ভাই মাকে ঝাপটে ধরে মেঝেতে শুয়ে পড়ে। এসময় দুই পুলিশ সদস্য কয়েক রাউন্ড গুলি ছুড়ে এবং রোজারিও মেঝেতে লুটিয়ে পড়ে।


ভিডিও ফুটেজ দেখার পর ডুকরে কাঁদতে কাঁদতে উইনের মা নট্যান আভা কোস্টা, বাবা ফ্রান্সিস রোজারিও এবং ছোটভাই উৎস রোজারিও বলেছেন, ‘প্রতিটি দিনক্ষণ আমরা উইনের অনুপস্থিতি গভীর বেদনার সঙ্গে অনুভব করছি। এমন নিদারুন কষ্ট থেকে পরিত্রাণ পাচ্ছি না। এ অবস্থায় আমরা আশা করছি সেই ফুটেজ জনসমক্ষে প্রকাশের কোনো প্রয়োজন নেই। ফুটেজ স্পষ্ট করেছে যে, উইনের বেঁচে থাকা উচিত ছিল। কিন্তু পুলিশ এসে তাকে হত্যা করেছে। আমাদের এবং উইনের সুরক্ষার পরিবর্তে পুলিশ অফিসাররা উইনকে অত্যন্ত ঠান্ডা মাথায় গুলি করার মতো পরিস্থিতি তৈরি করেছিলেন। তাই আমরা চাচ্ছি সেই দুই পুলিশ অফিসারকে বরখাস্ত করে যত দ্রুত সম্ভব তাদের বিচারে সোপর্দ করা হোক।’

এদিকে ভিডিও ফুটেজ দেখে অনেক বিশ্লেষক বলছেন যে, টেজার ছোড়ার পর রোজারিওকে গুলি করার প্রয়োজন ছিল না। কিন্তু পুলিশ কর্মকর্তারা সেই চেষ্টা করেননি। তারা তাকে গুলি করে হত্যা করেছে।

উল্লেখ্য, রোজারিও হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই পরিবার ও বাংলাদেশি কমিউনিটির পক্ষ থেকে বডি ক্যামেরার ফুটেজ প্রকাশের দাবি জানানো হচ্ছিল। কিন্তু নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্ট তা আমলে না নেয়ায় রাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল তা প্রকাশ করেন।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button