International

যুক্তরাষ্ট্র তহবিল না দিলে যুদ্ধে হারবে ইউক্রেন, স্বীকারোক্তি জেলেনস্কির

ফক্স নিউজকে ইউক্রেনের নেতা বলেন, ‘ইউরোপে যদি আমরা ঐক্য হারাই, তা হবে খুবই বিপজ্জনক, তবে তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে– যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের একতা।’

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদমির জেলেনস্কি স্বীকার করেছেন যে, ওয়াশিংটনের অর্থ সমর্থন না পেলে যুদ্ধে পরাজিত হবে ইউক্রেন। গতকাল মঙ্গলবার মার্কিন গণমাধ্যম ফক্স নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি একথা বলেন। খবর বিবিসির

রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইউক্রেনকে সব ধরনের সহায়তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন। তবে ২০২৪- এর নির্বাচনে ভরাডুবি হয়েছে ডেমোক্রেট দলের। নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন রিপাবলিকান দলের ডোনাল্ড ট্রাম্প। যিনি ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। জানুয়ারিতে ট্রাম্পের শপথ গ্রহণের কথা রয়েছে, তার আগেই এমন শঙ্কার কথা জানালেন জেলেনস্কি।

ফক্স নিউজকে ইউক্রেনের নেতা বলেন, ‘ইউরোপে যদি আমরা ঐক্য হারাই, তা হবে খুবই বিপজ্জনক, তবে তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে– যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের একতা।’

ফক্স নিউজ ট্রাম্পকে সমর্থনকারী একটি ডানপন্থী গণমাধ্যম। ট্রাম্প তাঁর নির্বাচনী প্রচারণার সময়ে ওয়াদা করেন যে মার্কিন করদাতাদের অর্থ ইউক্রেনের পেছনে ব্যয় করা বন্ধ করবেন তিনি। যুদ্ধের পেছনে অর্থশ্রাদ্ধ না করে– তা দিয়ে মার্কিন নাগরিকদের জীবনমান আরও উন্নত করা হবে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বন্ধ করবেন বলেও মন্তব্য করেছিলেন।

এই প্রেক্ষাপটে ফক্স নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জেলেনস্কি স্বীকার করেন যে, ‘অর্থ সাহায্য বন্ধ করা হলে, মনে হয় আমরা হেরে যাব। যেকোনোভাবেই হোক আমরা অবশ্যই থাকব, যুদ্ধ করব, আমাদের নিজস্ব (সমরাস্ত্র) উৎপাদন ব্যবস্থাও আছে – তবে অবশ্যই সেটা জেতার জন্য যথেষ্ট নয়, এমনকী টিকে থাকার পক্ষেও পর্যাপ্ত না।’

যুদ্ধ বন্ধে ট্রাম্প রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে রাজী করাতে পারবেন কিনা– এমন প্রশ্নের জবাবে জেলেনস্কি বলেন, ‘এটা ততোটা সহজ হবে না, তবে তিনি পারবেন, কারণ তিনি পুতিনের চেয়ে শক্তিশালী।’

ব্যাখ্যা করে জেলেনস্কি বলেন, রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে দুর্বল। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট এর কাছে অপরিমেয় শক্তি, কর্তৃত্ব ও অস্ত্রসজ্জা রয়েছে। তিনি চাইলে, যেকোনো জ্বালানি সম্পদের দামের পতন ঘটাতে পারবেন। প্রসঙ্গত, রাশিয়ার প্রধান রপ্তানি আয়ের উৎস হচ্ছে জ্বালানি খাত।

এর আগে ইউক্রেনকে রাশিয়ার অভ্যন্তরে যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি অ্যাটাকমস মিসাইল ব্যবহারের অনুমতি দেয় বাইডেন প্রশাসন। অনুমতি পাওয়ার একদিনের মাথায় গতকাল মঙ্গলবার তা ব্যবহারও করেছে ইউক্রেন।

ইউক্রেনকে অ্যান্টি-পার্সোনাল ল্যান্ড মাইন-ও সরবরাহ করেছে বাইডেন প্রশাসন। যা বিবিসিকে নিশ্চিত করেছেন মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের এক কর্মকর্তা।

তবে জেলেনস্কি বলেছেন, যুদ্ধক্ষেত্রে অত্যন্ত কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে ইউক্রেন। অন্যদিকে, রুশ সেনারা সম্মুখভাগের বিভিন্ন অবস্থানের দখল নিচ্ছে বলে জানিয়েছে যুদ্ধ পর্যবেক্ষক সংস্থা ও থিঙ্ক ট্যাঙ্ক – ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব ওয়ার (আইএসডব্লিউ)।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button