International

যেসব শর্তে ‘যুদ্ধ বন্ধে’ ট্রাম্পের সঙ্গে বসতে আগ্রহী পুতিন

ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনায় বসতে আগ্রহী রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তবে এ ক্ষেত্রে কিছু শর্ত রয়েছে তার। শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে- ইউক্রেনে রাশিয়ার দখল করা ভূখণ্ডগুলো নিয়ে বড় কোনো ছাড় দিতে চান না তিনি। আর পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার ইচ্ছা ত্যাগ করতে হবে ইউক্রেনকে। ক্রেমলিনের এই ভাবনা সম্পর্কে অবহিত এমন একাধিক সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে। খবর রয়টার্সের।

ইউক্রেন যুদ্ধ দ্রুত বন্ধের প্রতিশ্রুতি আগেই দিয়েছিলেন ট্রাম্প। গত ৫ নভেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয় পেয়েছেন তিনি। এমন এক সময় ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে বসতে যাচ্ছেন, যখন ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রে বড় অগ্রগতি পাচ্ছে মস্কো। এই অগ্রগতি ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি যুদ্ধের শুরুর দিকের চেয়ে অনেক বেশি। এই মুহূর্তে ইউক্রেনে যে পরিমাণ ভূখণ্ড রুশ বাহিনীর দখলে রয়েছে, তা আকারে যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যের সমান।

‘ট্রাম্প: দ্য আর্ট অব দ্য ডিল’ বইয়ের লেখক  ট্রাম্প বলেছেন, শান্তি চুক্তির জন্য দরকার পড়লে তিনি সরাসরি পুতিনের সঙ্গে কথা বলবেন।
রাশিয়ার সাবেক ও বর্তমান পাঁচজন কর্মকর্তা পরিচয় না প্রকাশ করার শর্তে জানিয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় কোনো চুক্তি হলে, তাতে ইউক্রেনে চলমান সম্মুখ সারির যুদ্ধ বন্ধে রাজি হতে পারে ক্রেমলিন। এ ছাড়া পূর্ব ইউক্রেনের দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, জাপোরিঝঝিয়া ও খেরসন অঞ্চল ভাগাভাগির বিষয়েও আলোচনার সুযোগ রাখা হবে। এই চার অঞ্চলকে বর্তমানে নিজেদের বলে দাবি করে রাশিয়া। অঞ্চলগুলোর ৭০–৮০ শতাংশ রুশ বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

এ ছাড়া ইউক্রেনের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলে খারকিভ ও মিকোলাইভের অল্প যেসব এলাকা রাশিয়ার দখলে রয়েছে, সেখান থেকে সেনা প্রত্যাহারে রাজি হতে পারে ক্রেমলিন। চলতি মাসেই পুতিন বলেছিলেন, যদি কোনো যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়, তাহলে তা যুদ্ধক্ষেত্রে বাস্তবতার নিরিখেই হবে। তিনি এ আশঙ্কাও প্রকাশ করেছিলেন যে স্বল্প সময়ের জন্য যুদ্ধবিরতি চুক্তি হলে এ সময়টাকে ইউক্রেনের সামরিক শক্তি বাড়ানোর কাজে লাগাতে পারে পশ্চিমারা।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে রাশিয়ায় হামলা চালাতে ইউক্রেনকে অনুমতি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। দেশটির এই পদক্ষেপের কারণে যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে পৌঁছাতে জটিলতা ও বিলম্ব দেখা দিতে পারে বলে জানিয়েছে সূত্র।

১৯৭৩ সালে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান দিমিত্রি সিমেস। যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন; কিন্তু রাশিয়ার সঙ্গে খুব ভালো যোগাযোগ আছে, এমন বিশেষজ্ঞদের একজন তিনি। সিমেস বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধ থামানোর জন্য দ্রুত একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি করা যেতে পারে। তবে একটি দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতে যাওয়া রাশিয়া ও ইউক্রেনের জন্য খুবই চ্যালেঞ্জের। কারণ, এর সঙ্গে দুই দেশের নিরাপত্তা উদ্বেগের বিষয়টি জড়িত।

ইউক্রেনের ১৮ শতাংশ অঞ্চল এখন রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে। এর মধ্যে ২০১৪ সালে ইউক্রেনের ক্রিমিয়া উপদ্বীপের পুরোটাই দখল করে নেয় রুশ বাহিনী। আর দেশটির দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চলের ৮০ শতাংশ এবং জাপোরিঝঝিয়া ও খেরসন অঞ্চলের ৭০ শতাংশের বেশি রাশিয়ার দখলে। এ ছাড়া খারকিভ ও মিকোলাইভের ৩ শতাংশের কিছুটা কম এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে মস্কো। সব মিলিয়ে ইউক্রেনের ১ লাখ ১০ হাজার বর্গ কিলোমিটারের বেশি এলাকা বর্তমানে রাশিয়ার দখলে। অপর দিকে রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলের মাত্র ৬৫০ বর্গকিলোমিটারের মতো নিয়ন্ত্রণ করছে কিয়েভ।

সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, পুতিন এমন একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে রাজি হতে পারেন, যাতে দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, জাপোরিঝঝিয়া ও খেরসনের বেশির ভাগ অঞ্চল মস্কোর অধীন থাকবে। এতে পূর্ব ইউক্রেনে রুশভাষী ব্যক্তিদের সুরক্ষা নিশ্চিত হবে। পাশাপাশি ক্রিমিয়ার সঙ্গে যুক্ত স্থলপথও নিরাপদ থাকবে। এই সূত্রদের একজন বলেছেন, ইউক্রেন ঘিরে পশ্চিমাদের একটি ‘নির্মম সত্য’ মেনে নিতে হবে। সেটি হলো, ইউক্রেনকে একাট্টা সমর্থনের পরও তারা যুদ্ধে রাশিয়ার বিজয় ঠেকাতে পারবে না।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
Toto Slot
slot gacor
slot gacor
slot toto
Bacan4d Login
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot bacan4d
bacan4d togel
bacan4d game
slot gacor
bacan4d login
bacantoto 4d
toto gacor
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
slot77 gacor
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
bacansports
slot toto
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor