যে ভিডিও বার্তা নিয়ে নেট দুনিয়া সরগরম

একটি ভিডিও বার্তা ভাইরাল নিয়ে দেশব্যাপী তোলপাড় চলছে। ৩৫ মিনিটের ভিডিও বার্তাটি গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের বহিষ্কৃত কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপুর। যিনি গত ১লা আগস্ট গুলশানে আওয়ামী লীগ নেত্রী শাম্মী আহমেদের বাসায় চাঁদা আদায়ের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন। গ্রেপ্তারের ১২ দিন পর অপুর ভিডিও বার্তাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। যেখানে তিনি দাবি করেছেন, তাদের ওই চাঁদাবাজির পেছনে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার নির্দেশ ছিল। এছাড়াও বৈষম্যবিরোধী নেতা হান্নান মাসুদের কথাও উঠে আসে তার ভিডিওতে। এই ভিডিও বার্তাটি ভাইরাল হওয়ার পর নানা মহলে শুরু হয়েছে আলোচনা-সমালোচনা।
ওই ভিডিও বার্তায় অপু নিজের পরিচয় দিয়ে বলেন, সম্প্রতি গুলশানে বরিশালের যেই নারী এমপি’র বাসায় চাঁদাবাজির ঘটনায় ভিডিও ভাইরাল হয়, আপনারা যেই সিসিটিভি ফুটেজ দেখেছেন ওখানে টাকার ব্যাগ নিতে যে কালো টি-শার্ট পরা ছেলেটা ছিল সেটা আমি। আপনার এই একটি সিসিটিভি ফুটেজের মাধ্যমে দেখেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সমন্বয়কেরা চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত। আপনাদের যেই সমন্বয়করা গত বছরে আন্দোলনে আপনাদের কাছে মহানায়ক ছিল তারা হয়ে গেল চাঁদাবাজ। সমন্বয়করা চাঁদাবাজিতে জড়িত। কিন্তু আমার কিছু প্রশ্ন আছে। আপনারা কি জানেন, এই যে টাকা নেয়ার যেই ফুটেজটা সকাল ৯টা থেকে ১০টার ভেতরের ঘটনা। তার ঠিক কয়েক ঘণ্টা আগে ভোর ৫টার সময় ওই জোনের ডিসি-ওসিকে অবগত করে একদম অফিসিয়াল প্রসেসে পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে শাম্মীর (সাবেক এমপি) বাসায় আমরা অভিযান চালাই। আপনারা কি জানেন, সেই অভিযানে যাওয়ার আগে গুলশানের কোনো একটি জায়গায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের সঙ্গে আমার কথা হয়। কই মিডিয়ায় এত কিছু আসলো কিন্তু শুধু ২ মিনিটের ভিডিও কেন? আগের রাতের গোটা অভিযানের বিষয়টাকে একদম স্রেফ ধামাচাপা দেয়া হলো কেন? ভোরবেলার সেই পুলিশ সঙ্গে করে নিয়ে যেই অভিযান চালানো হয়, ভোর ৫টা থেকে ৬টা পর্যন্ত টানা এক ঘণ্টা শাম্মী আহমেদের বাসায় যেই অভিযান চলে, গোটা বাসায় তন্নতন্ন করে খোঁজা হয় কোথাও শাম্মীকে পাওয়া যায় না। কিন্তু বাসায় অভিযান চালানোর সময় আমরা প্রত্যেকটা জায়গায় বুঝতে পারি এখানে শাম্মী ছিল। তার ব্যবহৃত জিনিসপত্র, বেডের পাশে তার ফোন, তার হেডফোন, তার জুতা, তার ভ্যানিটি ব্যাগ সবকিছু। একদম স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল শাম্মী এখানে ছিল। ইনফরমেশন লিক হয়ে গেছে, সে চলে গেছে। তো যেই আড়াই মিনিটের সিসিটিভি ফুটেজ ভাইরাল করে আমাদেরকে রাতারাতি হিরো থেকে ভিলেন বানানো হলো- যারা এই কাজটা করলো তাদের কাছে আমার অনুরোধ থাকবে এবং আমি চ্যালেঞ্জ করবো, যদি সৎ সাহস থাকে আগের রাতের সিসিটিভি ফুটেজটা আপনারা ফাঁস করেন। সামনে আনেন। দেখি কে ফোন করছে? কার ফোনকলে শাম্মী ওই বাসা থেকে বের হয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে আমরা যে ওখানে অভিযানে গেলাম সেখানে আমাদের ভেতর কি কি কথা হয়েছে। আমরা চাঁদাবাজ কীভাবে হলাম। চাঁদাবাজি তো করি নাই। আমাদের সঙ্গে পরদিন সকালবেলা রিয়াদ যোগাযোগ করছে। রিয়াদকে ডেকে পাঠাইছে তারা। রিয়াদ আমাকে ফোন দেয়। ফোন দিয়ে ডেকে নেয়। বলে, ভাই বাসায় একটু আসতে হবে। সে আমাকে প্রাথমিকভাবে জানায়, শাম্মী যায়নি। আমরা বাসায় নজরদারি করছি। আপনি তাড়াতাড়ি আসেন। আমি তখন ইমার্জেন্সি যাই। যাওয়ার পরে রিয়াদ আমাকে নিয়ে ভেতরে যায় এবং বলে উপর থেকে ডেকে পাঠিয়েছে। আমি তখন বলি- ওকে তাহলে চল। এরপরও আমি বলি, অন্যরা আসুক। তখন বেশ কয়েকজনকে ফোন দিলো রিয়াদ। বললো- ভাই সবাই ঘুমিয়ে গেছে, কেউ আসছে না। সিঁড়িতে ওঠার সময় রিয়াদ আমাকে টাচ্ দেয়- ওরা কিছু টাকা-পয়সা দেয়ার কথা বলছে। পোলাপানকে চা-পানি খাইতে টাকা-পয়সা দিবে। আমি স্বাভাবিকভাবেই মাইন্ডসেট করে নিই, রাতে আমাদের সঙ্গে যে কয়েকজন আসছিল পুলিশ বাদ দিলে ১৫/২০ জন বা সর্বোচ্চ ৩০ জন হবে। এদের জন্য কতোই বা দিবে? ৫০ হাজার ১ লাখ দিবে হয়তো। এই ভেবেই আমি ওর সঙ্গে ভেতরে যাই। ভেতরে ঢোকার আগে রিয়াদ আমাকে বলে- আপনাকে ভাই কোনো কথা বলা লাগবে না। আপনি রাতে খুব ভালো রোল প্লে করছেন, আপনাকে ওরা ভয় পাবে। আপনি যেভাবে সব জায়গা খোঁজাখুঁজি করছেন, চিল্লাচিল্লি করছেন আপনাকে ওরা ভয় পাবে। আপনার ফেইসটা খালি দরকার। আপনি খালি আমার সঙ্গে তাল মেলাবেন, বাকিটা আমি দেখবো। আমি যে তার সঙ্গে সেই সময় গেছি, হয়তো আমার ভেতরও লোভ আসছিল নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারিনি। বা ওই মুহূর্তে সঠিক ডিসিশিনটা কী হবে আমি বুঝতে পারিনি। সিঁড়িতে উঠতেসি আর দুই ধাপ গেলেই বাসার দরজায় ঢুকে যাবো, এতটুকু সময়ের মধ্যেই আমাকে সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। এটা আমার ভুল সিদ্ধান্ত হয়তোবা ছিল। ভেতরে গেলাম, গিয়ে বসলাম। বসার পরে শাম্মীর হাজবেন্ড এসে ৫ লাখ টাকার অফার করে। বলে, আমি তোমাদেরকে ৫ লাখ টাকা দিচ্ছি, তোমরা যারা ছিলে তোমরা চা-পানি খাইও। আমরা শান্তিপ্রিয় মানুষ, আমি সারাজীবন চাকরি করেছি। কোনো রাজনীতি করিনি। চাকরির রিটায়ারমেন্ট শেষে এখানে আছি, রেস্ট করতেছি। এই বয়সে এসে তোমরা আর আমাদেরকে হয়রানি করো না। আমি কোনো রাজনীতির মধ্যে নেই। ওনি আরও একটা প্রশ্ন করেন- আমাদের তথ্য তোমাদেরকে কে দিয়েছে? তোমরা কীভাবে জানলে আমরা এখানে আছি। এই বিষয়গুলো জানার বিনিময়ে তিনি আমাদেরকে ৫ লাখ দিতে চান এবং টাকা আনতে চলে যান। টাকা এনে তিনি বলেন, আমি তোমাদেরকে এই টাকাটা দিচ্ছি তোমরা নিয়ে চলে যাও। তখন রিয়াদ রেসপন্স যেটা করে, সেটা শুনে আমি রীতিমতো আকাশ থেকে পড়ি। ও (রিয়াদ) একরকম ঝাড়ি মেরেই বলে, কিসের ৫ লাখ, ১ কোটির নিচে কথাই হবে না। আপনাদের মান-ইজ্জত সব বাঁচায় দিলাম। আত্মীয়স্বজনের কাছ কালারিং হওয়া লাগনো না, জেল খাটতে হলো না, কোনো কিছু করা লাগলো না। আমি তখন রীতিমতো ‘থ’। আমি এক কোটি টাকার জন্য যতটা না ‘থ’ হয়েছি তার থেকেও বেশি ‘থ’ হয়েছি আপনাদেরকে জেলখাটা লাগলো না, মানহানি হলো না এটার বিনিময়ে শুধু ৫ লাখ? রিয়াদের এই কথা শুনে। তখন আমি ভাবছি- এসবই কি তাহলে প্ল্যান ছিল? শাম্মীকে সেইফ এক্সিট দিয়ে বিনিময়ে এরা কী এখানে কোটি টাকা নিতে আসছে? এসব যখন আমার মাথায় ঘুরপাঁক খায় তখন আমি ওখান থেকে ওঠে চলে যাই। তখন আবার আমার মাথায় খেলে- রিয়াদ আমার পূর্ব পরিচিত, ওর সঙ্গে আমি এখানে এসেছি, ওকে রেখে কীভাবে আমি চলে যাই তাও আবার আওয়ামী লীগের এমপির বাসায়। ওকে তো গুম করে দিতে পারে। ওর বিপদের কথা চিন্তা করে আমি আবারো ব্যাক আসি। তখনো ওরা বার্গেনিং করছেই। এক কোটির থেকে ৫০ লাখে নামে। ২৫ লাখ এখন নিবে, বাকি ২৫ লাখ পরে নিবে এসব কথা হচ্ছিল। আমি সেখান থেকে বের হতে পারলে বাঁচি। আমি তখনো রিয়াদকে বলি, তুই এসব পাগলামি বন্ধ কর, এখান থেকে চল। তখন আমাকে ও উল্টো বলে- আপনি চুপ থাকেন দেখেন কী হয়। এর মধ্যে শাম্মীর হাজবেন্ড পাশের রুমে গিয়ে একজনকে ফোন দিলেন, এরপর সর্বোচ্চ ৩০ সেকেন্ড বা এক মিনিটের মাথায় একটি লোক এসে কলিংবেল চাপলেন। দরজা খুলতেই বাইরে থেকে একটা টাকার ব্যাগ। টাকার ব্যাগটা নিয়েই গেটটা আবারো সে লাগিয়ে দিলেন। ওই টাকার ব্যাগটা সোজা এনে আমার পাশে রাখলেন।
আমার পাশে ছোট্ট একটা টেবিল ছিল। তখন রিয়াদ আমাকে বলে- আপনার তো কাঁধে ব্যাগ আছেই, টাকাটা ব্যাগে ভরে ফেলেন। তো আমার ব্যাগের ভেতর খাবার ছিল। সারারাত খাইনি তাই সকালে খাবারটা কিনি। কিন্তু সেটাও খেতে পারিনি। পরে ওই খাবার বের করে টাকা ব্যাগে ভরে আমি রিয়াদকে বলি চল-উঠি। রিয়াদ তখন আবার নতুন কাহিনী শুরু করলো- এই ১০ লাখ টাকা নিয়ে যাওয়া যাবে না। সে তখন আরও টাকা দেয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করে। বলে- আপনি লাগলে টাকা ম্যানেজ করেন। সে টাকা ছাড়া উঠবেই না। তাকে একরকম অনুরোধ করি, বলি তুই না গেলে আমি তোকে রেখেই চলে যাবো। তখন আমার চলে যাওয়ার কথা শুনে ও একটু ভয় পায়। আমার পেছন পেছন চলে আসে। বাইরে আসার পর রিয়াদ আমার সঙ্গে প্রচণ্ড রাগারাগি করে। বলে- আপনি কি পাগল নাকি, আপনি মাত্র ১০ লাখ টাকা নিয়ে চলে আসলেন কেন? আমি ওরে উল্টা ঝাড়ি দিলে বলি- একজন মানুষের বাসায় গিয়ে তুই এইভাবে কোটি টাকা চাচ্ছিস, সেখানে ক্যামেরা আছে। একজন মানুষ কি এক কোটি টাকা ঘরে রাখে? সে বলছে- তার কাছে টাকা নেই আর তুই বলছিস ম্যানেজ করে এনে দেন। তোর কী বিবেক-বুদ্ধি নেই হয়ে গেছে। তখন রিয়াদ আমাকে বলে- ভাই তো আমাকে এক কোটির কথাই বলে দিয়েছে। আমি যে প্রশ্ন করবো কোন ভাই- এর আগেই দেখি রিয়াদের চোখ-মুখ শুকায় গেছে। সেও আতঙ্কিত। তাকেও এক কোটি টাকার কথা বলে দেয়া হয়েছে। আমার জন্য সে এক কোটি টাকা নিয়ে আসতে পারেনি এই জন্য সেও বিরক্ত, নার্ভাস। রিয়াদের চোখে-মুখেও চিন্তার ছাপ। তখন আমি তাকে বলি, কোন ভাই, কখন বললো তোকে? তুই কার কার সঙ্গে কথা বলেছিস আমি যাওয়ার পরে। তখন বলছে- রাতে কোন ভাই আসছিল আপনি দেখেননি। তখন আমি ৩০ সেকেন্ডের মতো চুপ করে ভাবতে থাকি। রাতে কোন ভাই এসেছিল এটার সমীকরণটা আমার মাথায় খেলে, তখন রিয়াদকে আমি বলি- যেই ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলে এসেছিলাম তুই কি সেই ভাইয়ের কথা বলছিস। তখন রিয়াদ বলে- হ্যাঁ। আপনি বুঝছেন না, ওখানে ক্যামেরা আছে, সব আছে তারপরও আমি এক কোটি টাকা চাওয়ার সাহস করছি, এমনি এমনি, আপনি বুঝেন না। তখন আমার কাছে একটু হলেও বিশ্বাসযোগ্য হয়, এইটুকু ছেলে এক কোটি টাকা চেয়ে ফেলেছে ক্যামেরা আছে জেনেও। কারণ টাকা নেয়ার এক ঘণ্টা আগেও ওই বাসায় আমরা অভিযান চালিয়েছি। বাসার কোথায় কোথায় ক্যামেরা, কী আছে সব জানা। ওসব জানে এখানে সিসিটিভি আছে সব রেকর্ড হচ্ছে তারপরও অকপটে ও এক কোটি চেয়েছে। তাহলে অবশ্যই ওর কথার কিছুটা সত্যতা আছে। ওর পেছনে ওই রকম ব্যাকআপ আছে। আমি একরকম মন খারাপ করে চলে যাচ্ছি, তখন রিয়াদ আমাকে জোর করে রিকশায় তোলে। ওই টাকার ব্যাগ নিয়ে ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় ঘোরায়। আমাকে কনভেন্স করতে থাকে। বলে- ভাই উনাকে (শাম্মির স্বামী) ২ দিনের সময় দিয়ে আসছি। দু’দিন পরে কিন্তু টাকাটা তুলতে হবে। আমি কথা না বাড়িয়ে বলি- দেখা যাক। কারণ আমি চাচ্ছিলাম ওর কাছ থেকে চলে যেতে। ওখান থেকে রিয়াদ চলে গেল ওর বাসার দিকে। খুব সম্ভবত মধ্যবাড্ডা বৈঠাখালি নামক একটা জায়গায় যাওয়ার জন্য একটা সিএনজি নিলো। যাওয়ার সময়ে আমি ওকে জিজ্ঞাসা করলাম- তুই টাকাগুলো কি করবি? ও বলে- ভাই পোলাপান যেগুলো আসছিল তাদের দিতে হবে, বাকি টাকাও তুলতে হবে। সব তোলার পরে তারপর ভাগবাটোয়ারা। আমরা তো টাকায় তুলতে পারলাম না! যা দিছে তা তো আজকের পোলাপানের খরচ। আমি তখন তাকে বলি- তাহলে পোলাপানকে দিয়ে দিস। সেও বলে, বিকালবেলা এটা ভাগাভাগি হবে, আপনাকে ফোন দিয়ে জানাবো। এর ভেতরেই আমি রাতে যারা ছিল তাদের অনেকের সঙ্গে যোগাযোগ করি, বলি রিয়াদ তোমাদের কোনো টাকা-পয়সা দিয়েছে কিনা। কিন্তু সবাই অস্বীকার করে। যারা এসেছিল এই অভিযান চালাতে তারা কেউই এই বিষয়টি নিয়ে অবগত নয়। তার মানে আমাদের গ্রুপে ওইযে ইনফরমেশন দেয়া হলো- অমুক বাসায় আওয়ামী লীগের নেতা আছে, ছাত্রদের চেতায় দেয়া হলো, চেতায় দিয়ে এই ছাত্রদের মব করতে পাঠানো হলো। ছাত্রদের পুলিশের সঙ্গে পাঠিয়ে ওই পরিবারকে ভায়ভীতি দেখানো হলো। পরে ছাত্ররা যে যার মতো বাসায় চলে গেল। তারপরে চাঁদাবাজের দল চাঁদাবাজি করতে আসলো। ঘটনা এইটাই।
অপু বলেন, ১৬ই জুলাই পার করে রাত ১২টার পরে ১৭ই জুলাই ভোর ৪টা ১০ থেকে ৪০ এই ৩০ মিনিট সময় গুলশান-২ মোড় ক্রস করে ৫ তারকা হোটেল ওয়েস্টিনের নিচে সাদা সিএফ বাইকে হেলমেট লাগানো অবস্থায় আমার সঙ্গে কথা বলছিলেন একজন উপদেষ্টা। সেই উপদেষ্টা ছিলেন আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। আপনাদের চ্যালেঞ্জ করবো- আমাকে ভুল প্রমাণ করার আগে আপনারা আগে ওই সিসিটিভি ফুটেজটা দেখবেন। এবং জাতির সঙ্গে ফুটেজটা এনে দেখাবেন ওই সময় তেমন কিছুই ঘটেনি। আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া আমার সঙ্গে সেখানে কোনো কথা বলেননি। অপু বলেন, এক জন উপদেষ্টা রাত ৪টার সময় বাইকে চড়ে হেলমেটে মুখ ঢেকে গুলশানের মতো এলাকায় কী কাজে আসে সেটা আমার জানার কথা না। আমি সাধারণ মানুষ। আমার সঙ্গে বা তাদের কী কথা হয়। ওই যে রিয়াদ বলছিল রাতে যেই ভাই এসেছিল এবার আপনারই সমীকরণটি মেলান। কোন ভাইয়ের কথা রিয়াদ বলেছে। শুধু ওই ভাই না আরও যেসব ভাই আছে, সব ভাইয়েরাই এসবের সঙ্গে জড়িত এবং এটা ওপেন সিক্রেট। এই আমাদের সজীব ভূঁইয়া ভাই সেদিন যেই সিএফ মোটরবাইকটা নিয়ে এসেছেন, ফাইভস্টার হোটেল ছাড়া সে বসেন না, সে গত বছরের জুলাইতেও ৫০/৬০ হাজার টাকার সেকেন্ডহ্যান্ড একটা স্কুটি চালাতো। এসব চোখের সামনে আপনাদের কে কী করছে, আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ কীভাবে হয়েছে। যে সকল ছেলেরা হলে থাকতে পারতো না, বাইরে বাসা নিতে পারতো না, ডোনেশনে যাদের মেসভাড়া চলতো তারা এখন ডুপ্লেক্স বাড়িতে থাকে। নিজস্ব গাড়িতে চলাফেরা করে। এইগুলো ক্লিয়ার না করে গেলে এরা আমাকে দিয়ে যেকোনো স্টেটমেন্ট দেয়াতে বাধ্য করবে।
অপু বলেন, এই যে মোহাম্মদপুর থানার আহ্বায়ক গ্রেপ্তার হলো- তাদের ছাড়াতে থানায় গেল আব্দুল হান্নান মাসুদের মতো এত বড় ফিগার। কারণ ওই মোহাম্মদপুরের রাব্বি যদি কট খায় আর তার নাম চলে আসে তাই হান্নান মাসুদের মতো লোক থানায় চলে যায়। তারা সবাই এভাবেই চলছে।