Hot

রক্তক্ষয়ী সহিংসতার মধ্যেই পঞ্চায়েতে ভোট দিচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ, ছড়িয়ে পড়া সহিংসতায় নিহত ২৬

২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যের হাওয়া কোনদিকে তার ‘লিটমাস টেস্ট’ হিসেবে দেখা হচ্ছে এই ভোটকে।

উত্তর ২৪ পরগনার কদম্বগাছিতে নির্বাচনী সংঘর্ষের একপর্যায়ে অগ্নিসংযোগ করা হয়

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত নির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলছে। শনিবার সকাল ৭টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে, চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। ভোটকে কেন্দ্র করে ছড়িয়ে পড়েছে সংঘর্ষ ও সহিংসতা। গেল রাত থেকে এখন পর্যন্ত বিজেপি, তৃণমূলসহ বিভিন্ন দলের ২৬ কর্মী নিহত হয়েছে।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে তিন ধাপে পঞ্চায়েত নির্বাচনে আজ শনিবার সকাল সাতটায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। সংঘর্ষ ও সহিংসতার মধ্যেই এই ভোট শুরু হলো। ভোট শুরুর আগে আজ সকালে উত্তর ২৪ পরগনা, মুর্শিদাবাদ, রেজিনগর, বেলডাঙ্গা ও তুফানগঞ্জে সংঘর্ষ–হামলায় নিহত হয়েছেন পাঁচজন।

নির্বাচন শুরুর আগে আজ সকালে উত্তর ২৪ পরগনার কদম্বগাছিতে হামলায় নিহত হয়েছেন আবদুল্লাহ (৪০) নামের নির্দলীয় প্রার্থীর এক সমর্থক। বাঁশ, লাঠি ও রিভলবার নিয়ে হামলা চালিয়ে তাঁকে হত্যা করা হয়। ভাঙচুর করা হয় প্রচার অফিস। আবদুল্লাহর স্ত্রী এই হত্যার প্রতিবাদ করে ভোটকেন্দ্রে তালা ঝুলিয়ে দেন।

 কদম্বগাছিতে ভাঙচুর করা হয় প্রচার অফিস

কদম্বগাছিতে ভাঙচুর করা হয় প্রচার অফিস

নির্বাচনী সংঘর্ষে আজ মুর্শিদাবাদের খড়গ্রাম ও রেজিনগরে নিহত হন আরও দুজন। বেলডাঙ্গায় তৃণমূল কর্মী বাবর আলী খুন হন। তুফানগঞ্জে তৃণমূল কর্মী গণেশ সরকার খুন হন প্রতিপক্ষের সঙ্গে সংঘর্ষে।

মুর্শিদাবাদের ডোমকলে আজ সকালে গুলিবিদ্ধ হন তৃণমূলের দুই সমর্থক। চাঁচল কেন্দ্রে ভোটাররা ঘোষণা দিয়েছেন, কেন্দ্রে কেন্দ্রীয় বাহিনী না এলে তাঁরা ভোট দিতে যাবেন না। নন্দীগ্রামের ভোটাররা ভোট বয়কট করেছেন।

নারায়ণপুরে নির্বাচনী সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন একজন

নারায়ণপুরে নির্বাচনী সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন একজন

কোচবিহারের ফলিমারিতে আজ গুলি করে বিজেপির এক সমর্থককে হত্যা করা হয়। দিনহাটায় সিপিএম প্রার্থীর ওপর হামলা চালিয়েছে তৃণমূল। ভাঙচুর হয়েছে তাঁর বাসভবন।

ভাঙরে আইএসএফকে ভোটদানে বাধা দেন তৃণমূলের সমর্থকেরা। এ কারণে সংঘর্ষ শুরু হয়। দিনহাটার বুথে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। ডায়মন্ড হারবারে তৃণমূল কর্মীরা জোর করে প্রকাশ্যে জাল ভোট দেন ভোটকেন্দ্রে।

২০১৮ সালের সর্বশেষ পঞ্চায়েত নির্বাচন হয়েছিল ১৪ মে। ওই নির্বাচনের দিন খুন হয়েছিলেন ২৩ জন।

ওই নির্বাচনে ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের ৩৪ শতাংশ আসন জিতেছিল শাসক দল তৃণমূলের প্রার্থীরা। বাকি আসনেও সিংহভাগ দখল করেছিল শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস।

রাজ্যটির গভর্নর সিভি আনন্দ বোস তার সরকারি বাসভবনটিতে মানুষের অভিযোগ শুনতে একটি ‘শান্তি কক্ষ’ খুলেছেন।

গত শতকের ৭০-এর দশকের শেষভাগে পশ্চিমবঙ্গে গ্রাম পঞ্চায়েত ব্যবস্থা চালু হওয়ার পর এবার নিয়ে দ্বিতীয়বার পঞ্চায়েত প্রতিনিধি নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে মোতায়েন করতে হয়েছে।

শনিবার ভোটের দিনের নিরাপত্তায় ৬৫ হাজার কেন্দ্রীয় বাহিনীর সদস্যের সঙ্গে আছেন রাজ্য পুলিশের ৭০ হাজার সদস্যও।

“বিজেপি সম্ভবত ভুলে গেছে সাধারণ মানুষ ভোট দেবে, কেন্দ্রীয় বাহিনী নয়। বিজেপি সাধারণ মানুষের সমর্থন পাবে না, কেন্দ্রীয় বাহিনীর যত সদস্যই চাওয়া হোক না কেন, মানুষের রায় বদলাবে না,” বলেছেন তৃণমূলের অভিষেক বন্দোপাধ্যায়।

শেষবার পঞ্চায়েত নির্বাচনে তার দল ৮৫ শতাংশের বেশি আসনে বিজয়ী হয়েছিল।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button