Bangladesh

রপ্তানির বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র, সহায়তায়ও এগিয়ে : অর্থনীতিতে অংশীদার ২

বাণিজ্য, বিনিয়োগ থেকে শুরু করে প্রবাসী আয়ে যুক্তরাষ্ট্র এখন বাংলাদেশের অর্থনীতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

‘মেক আমেরিকা গ্রেট অ্যাগেইন’ স্লোগান পুঁজি করে ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জিতেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে তাঁর শপথ গ্রহণের দিনে হাজার হাজার ট্রাম্প সমর্থক লাল রঙের যে ক্যাপ পরেছিলেন, দেখা গেল যেসব দেশে সেগুলো তৈরি হয়েছে, বাংলাদেশ তার মধে৵ একটি। ‘আমেরিকা প্রথম’ নীতি নিয়ে ক্ষমতায় আসা ট্রাম্পের শপথ গ্রহণের দিনে বিদেশে তৈরি টুপির ব্যবহার নিয়ে সমালোচনা হয়েছিল অনেক। তবে যুক্তরাষ্ট্রের পোশাকের বাজারে অন্যতম সরবরাহকারী হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থান আরও শক্ত হয়েছে।

বাংলাদেশ এখন যুক্তরাষ্ট্রের পোশাকের বাজারে তৃতীয় বড় সরবরাহকারী দেশ। গত বছরের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতা প্রতিষ্ঠান ও ব্র্যান্ডগুলো যদি পোশাক আমদানির পেছনে ১০০ ডলার ব্যয় করে, তবে তার ১০ ডলারের মতো খরচ করেছে বাংলাদেশ থেকে পোশাক আমদানিতে। বাংলাদেশের পোশাকশিল্পের উত্থানের পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের কোটার বড় অবদান ছিল। বাজার নিশ্চিত এটা জেনেই একসময় শিল্পমালিকেরা উৎপাদনে যেতে পারতেন। আর কোটা উঠে গেলেও এই শিল্প পরে নিজের সক্ষমতায় দাঁড়িয়ে যায়।

স্বাধীনতার পর মূলত উন্নয়ন সহযোগিতার সম্পর্ক থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি বহুমাত্রিক অর্থনৈতিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছে বাংলাদেশের। বাণিজ্য, বিনিয়োগ থেকে শুরু করে প্রবাসী আয়ে যুক্তরাষ্ট্র এখন বাংলাদেশের অর্থনীতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সব মিলিয়ে দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক এখন গভীর। দুই দেশের বাণিজ্যের পরিমাণ এখন প্রায় ১ হাজার ৩০০ কোটি ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ১ লাখ ৪৩ হাজার কোটি টাকা (প্রতি ডলারের দাম ১১০ টাকা হিসাবে)। ২০২১ সালে বাংলাদেশ ছিল যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম বাণিজ্যিক অংশীদার।

রপ্তানির বড় গন্তব্য

বাংলাদেশের রপ্তানির সবচেয়ে বড় একক বাজার যুক্তরাষ্ট্র। ২০২১-২২ অর্থবছরে বাংলাদেশ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মোট ৫ হাজার ২০৮ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছিল, যার মধ্যে ১ হাজার ৪২ কোটি ডলারের পণ্য গেছে যুক্তরাষ্ট্রে। পরের বছর অর্থাৎ ২০২২-২৩ অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হয়েছে মোট ৯৭০ কোটি ডলারের পণ্য। গত অর্থবছরে রপ্তানি কিছুটা কমলেও দেশটি এখনো বাংলাদেশি পণ্যের সবচেয়ে বড় রপ্তানি গন্তব্য।

পোশাকশিল্পের মালিকেরা অবশ্য মনে করছেন, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি বাড়ানোর বড় সম্ভাবনা থাকলেও সাম্প্রতিক বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে রপ্তানি হোঁচট খেতে পারে। তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএর সহসভাপতি শহীদুল্লাহ আজিম গত রাতে প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাদেশে এখন একটি নির্বাচনের সময়। একই সময়ে বিশ্বে যুদ্ধের একটি আবহ চলছে। বৈশ্বিক বাজার স্থিতিশীল না হলে রপ্তানি বাড়ানো দুরূহ হতে পারে।

কোভিড মহামারির শেষ পর্যায়ে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানিতে ভালো প্রবৃদ্ধি হয়েছিল। কিন্তু পরিস্থিতি এখন অনেকটাই পাল্টে গেছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই বাজারে বাংলাদেশ ভালো করতে পারছে না। ২০২২ সালের অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ২১৭ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হলেও পরের প্রান্তিকে (চলতি বছরের জানুয়ারি-মার্চ) তা নেমে আসে ১৮৫ কোটি ৫০ লাখ ডলারে। এর পেছনে প্রধান কারণ ছিল তৈরি পোশাকের রপ্তানি কমে যাওয়া। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় কমেছে সাড়ে ৩ শতাংশ। গত জুলাই-অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হয়েছে ২৫৮ কোটি ডলারের পোশাক।

স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে বাংলাদেশের উত্তরণের পর রপ্তানির ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে মনে করেন বাণিজ্যবিশেষজ্ঞরা। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে গড়ে ১৫ শতাংশ শুল্ক দিয়ে রপ্তানি করেও প্রতিযোগিতার সক্ষমতা বজায় রেখেছে বাংলাদেশ। বেসরকারি গবেষণা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান গত রাতে প্রথম আলোকে বলেন, এলডিসির তালিকা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর প্রধান প্রধান বাজারে রপ্তানি নিয়ে দুশ্চিন্তা তৈরি হতে পারে। তবে এই দুশ্চিন্তা যুক্তরাষ্ট্রের বাজার নিয়ে নেই। ফলে এলডিসি থেকে উত্তরণের পর যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্ব আরও বাড়বে।

মোস্তাফিজুর রহমান আরও বলেন, ‘সম্প্রতি শ্রমিক অধিকার–সম্পর্কিত যে নীতি যুক্তরাষ্ট্র নিয়েছে, সেটি বাংলাদেশকে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করতে হবে। শ্রমিক অধিকারের কোনো বিষয় থাকলে তা সমাধান করা প্রয়োজন। আমাদের অনুধাবন করতে হবে, রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে মার্কিন উদ্বেগের পরপরই শ্রমিক অধিকারের বিষয়টি এসেছে।’

বৈচিত্র্যপূর্ণ আমদানি

বাংলাদেশ যেসব দেশ থেকে পণ্য কিংবা সেবা আমদানি করে, সেই তালিকায় যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান একটু নিচের দিকে-ছয় নম্বরে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান বলছে, দেশের আমদানির সবচেয়ে বড় উৎস চীন। এরপরে রয়েছে ভারত, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া। বাংলাদেশ গত অর্থবছরে চীন থেকে ১ হাজার ৯৩৫ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি করে। সে তুলনায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানির পরিমাণ ছিল অনেক কম—২৮৩ কোটি ডলারের।

রপ্তানি আয়ের তুলনায় আমদানির এই চিত্র বলছে, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের ভারসাম্য বাংলাদেশের পক্ষে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক বলে মনে করেন বিশ্লেষকেরা।

যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রপ্তানি অনেকটা একক পণ্যনির্ভর হয়ে থাকলেও সে দেশ থেকে আমদানি বেশ বৈচিত্র্যপূর্ণ। গত বছর যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশ যেসব পণ্য আমদানি করেছে, তার মধ্যে রয়েছে খনিজ জ্বালানি (৭৯ কোটি ডলার), লৌহ ও ইস্পাত (৭৩ কোটি ডলার), তেলবীজ ও ফল (৪৪ কোটি ডলার), তুলা (২৯ কোটি ডলার) এবং যন্ত্রপাতি (১৩ কোটি ডলার)। এর বাইরে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের প্রযুক্তি ও সেবা পণ্য।

সবচেয়ে বড় বিনিয়োগকারী

বাংলাদেশের জন্য সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ বা এফডিআইয়ের প্রধান উৎস, এখনো যুক্তরাষ্ট্র। ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত প্রাপ্ত হিসাবে দেখা গেছে, বাংলাদেশে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের স্থিতি ২ হাজার ২৪ কোটি ডলার। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ যুক্তরাষ্ট্রের—৩৫০ কোটি ডলার। যেসব খাত ও সেবায় এসব বিনিয়োগ রয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে গ্যাস ও পেট্রোলিয়াম, বস্ত্র শিল্প, ব্যাংকিং, বিদ্যুৎ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং বিমা। বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের বড় বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে জ্বালানি খাতের শেভরন ও এক্সিলারেট এনার্জি, বিমা খাতের মেটলাইফ, ব্যাংক খাতে সিটি ব্যাংক এনএ।

উন্নয়ন সহায়তা

স্বাধীনতার পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন অংশীদার। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের তথ্যানুযায়ী, গত ৫০ বছরে দেশটি বাংলাদেশকে প্রায় ৮০০ কোটি ডলারের উন্নয়ন সহায়তা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশকে এখন সবচেয়ে বেশি অর্থ সহায়তা দেয়। যদিও সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে গুণগত পরিবর্তন ঘটেছে। দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের মূল ভিত্তি এখন বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ।

তবে নানা ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে উন্নয়ন সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। কোভিড মহামারির সময় বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকে অনুদান হিসেবে যত টিকা পেয়েছে, তার দুই-তৃতীয়াংশেরও বেশি এসেছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের তথ্যানুসারে, বাংলাদেশে পাঁচ বছর বা তার বেশি বয়সীদের করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষা দিতে যুক্তরাষ্ট্র সরকার প্রায় ১১ কোটি ৫০ লাখ ডোজ টিকা বিনা মূল্যে দিয়েছে।

প্রবাসী আয়ে দ্বিতীয়

অভিবাসনের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র একসময়ে ছিল উচ্চশিক্ষিত বাংলাদেশিদের পছন্দের গন্তব্য। তবে ডিভি লটারির কল্যাণে বিপুলসংখ্যক সাধারণ মানুষও যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসনের সুযোগ পায়। পরে ফ্যামিলি ভিসার সুবাদে দেশটিতে বাংলাদেশিদের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। যুক্তরাষ্ট্র আদমশুমারি ব্যুরোর ২০১৮ সালের আমেরিকান কমিউনিটি জরিপের তথ্যানুসারে, সে সময় ২ লাখ ১৩ হাজার ৩৭২ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মানুষ যুক্তরাষ্ট্রে বাস করতেন। সাম্প্রতিক সময়ে বাড়ছে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা। তাঁদের অনেকে শিক্ষাজীবন শেষ করে ভালো চাকরি করছেন এবং দেশেও টাকা পাঠাচ্ছেন।

প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স পাঠানোর ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান এখন দ্বিতীয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবছরে দেশে ২ হাজার ১০৩ কোটি ডলারের প্রবাসী আয় আসে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ৪৫৪ কোটি ডলারের জোগানদাতা ছিলেন সৌদি আরবে কর্মরত প্রবাসীরা। তারপরের স্থানটিই যুক্তরাষ্ট্রের, সেখান থেকে আসে ৩৪৪ কোটি ডলার। আর ২০২২-২৩ অর্থবছরেও এ ধারা অব্যাহত ছিল। একপর্যায়ে সৌদি আরবকে পেছনে ফেললেও বছর শেষে দ্বিতীয় অবস্থানেই ছিল যুক্তরাষ্ট্র। ওই বছরে সৌদি আরব থেকে আসে ৩৭৭ কোটি ডলারের প্রবাসী আয়, বিপরীতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসে ৩৫২ কোটি ডলার।

শিক্ষার্থীরা যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রে

বাংলাদেশ থেকে বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী এখন যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন পড়াশোনার জন্য। ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস জানিয়েছে, ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে রেকর্ডসংখ্যক শিক্ষার্থী বাংলাদেশ থেকে পড়াশোনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে গেছেন। এ সংখ্যা ছিল ১৩ হাজার ৫৬৩, যা আগের শিক্ষাবর্ষের তুলনায় ২৮ শতাংশ বেশি।

মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্যুরো অব এডুকেশন অ্যান্ড কালচারাল অ্যাফেয়ার্সের করা ২০২৩ সালের ওপেন ডোরস রিপোর্টের উদ্ধৃতি দিয়ে মার্কিন দূতাবাস বলছে, ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে যেসব দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থী গেছেন, বাংলাদেশ তার মধ্যে অন্যতম। তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৩তম।

অর্থনৈতিক সম্পর্কের ভবিষ্যৎ

ঢাকায় ব্যবসায়ীরা বিশ্বাস করেন, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও উঁচুতে উঠতে পারে, যদি সম্ভাবনাগুলোকে কাজে লাগানো যায়। অ্যামচেমের সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমেদ বলেন, দ্বিপক্ষীয় ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক আরও গভীর করা সম্ভব। প্রযুক্তি এবং তথ্যপ্রযুক্তি, জ্বালানি, বিশেষ করে গভীর সমুদ্রে গ্যাস-তেল অনুসন্ধান এবং উৎপাদনের মতো খাতে মার্কিন বিনিয়োগ ও বাণিজ্য আরও বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে।

 এ ক্ষেত্রে কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে বলে মনে করেন আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশ (অ্যামচেম)-এর সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমেদ। তিনি বলেন, এসব চ্যালেঞ্জের মধ্যে রয়েছে কমপ্লায়েন্স বা বিভিন্ন নিয়মনীতি পরিপালন করা। কমপ্লায়েন্স না মেনে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ব্যবসা করা কঠিন। এ ছাড়া বাংলাদেশের প্রয়োজন লজিস্টিকস, অটোমেশন, কাস্টমস এবং অবকাঠামো উন্নয়ন নিয়ে কাজ করা।

বিশ্লেষকদের অনেকে অবশ্য বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের সাম্প্রতিক টানাপোড়েন নিয়েও উদ্বিগ্ন। বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, সময়ের সঙ্গে দুই দেশের টানাপোড়েন আরও গভীর হয়েছে।

অনেক সময় রাজনীতির সঙ্গে অর্থনীতি জড়িয়ে যেতে পারে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও যে এটা হবে না, এমনটা বলা যাচ্ছে না। সম্প্রতি এর সঙ্গে যোগ হয়েছে শ্রম ও মানবাধিকারের বিষয়গুলো।

আহসান এইচ মনসুর আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ যাতে কোনোভাবেই গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত স্বৈরাচারী সরকার হিসেবে চিহ্নিত না হয়, সেটি নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের জন্য ক্ষতিকর কিছু হোক তা আমরা চাই না। এমন পরিস্থিতি আমাদের এড়িয়ে যেতে হবে।’

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button