Hot

রাঘববোয়ালে পরিণত শেখ পরিবার

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে অন্যতম ক্ষমতাশালী শেখ পরিবার সীমাহীন দুর্নীতির বদৌলতে রাঘববোয়ালে পরিণত হয়েছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে বড় ধরনের দুর্নীতির ঘটনা অনুসন্ধান করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। একের পর এক বের হচ্ছে রাজনৈতিক অঙ্গনে দীর্ঘদিন ধরে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি নিয়ে বক্তব্য দেওয়া হাসিনা পরিবারের দুর্নীতির চাঞ্চল্যকর তথ্য।

দুদকের বিশেষ অনুসন্ধান দল সম্প্রতি কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ ৯টি প্রকল্পে প্রায় ৮০ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি এবং শেখ হাসিনা, সজীব ওয়াজেদ জয়, শেখ রেহানা, এবং টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে ৩০ কোটি মার্কিন ডলার পাচারের অভিযোগ। সূত্র জানায়, এসব অভিযোগের প্রমাণ পেতে দুটি আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তৎপরতা শুরু করেছে দুদক।

প্রাথমিক অনুসন্ধানে দেখা গেছে, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রকল্পে ব্যাপক দুর্নীতির ঘটনা ঘটেছে। এ প্রকল্পের জন্য বিদেশী সাহায্য নিয়ে অতিরিক্ত খরচ দেখিয়ে মোট ১২.৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মধ্যে ৫ বিলিয়ন ডলার আত্মসাৎ করা হয়েছে। তদন্তে উঠে এসেছে, এই অর্থ শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় এবং তার ছোট বোন শেখ রেহানা ও রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিকের হাত দিয়ে মালয়েশিয়ায় বিভিন্ন অফশোর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাচার হয়েছে।

দুদক সূত্র জানায়, টিউলিপ সিদ্দিকের চাচা ও শেখ হাসিনার নিরাপত্তা উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিক এবং তার পরিবারের সদস্যদের প্রতিষ্ঠিত ভুয়া কোম্পানি “প্রচ্ছায়া লিমিটেড” এবং বিতর্কিত কোম্পানি ডেসটিনি গ্রুপের মাধ্যমে প্রায় ৯০০ মিলিয়ন ডলার যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশে পাচার করা হয়েছে। এই অর্থ দিয়ে যুক্তরাজ্যে “জুমানা ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড প্রপার্টিজ লিমিটেড” নামে একটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।

এছাড়া, টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে রাশিয়ার কাছ থেকে ৪০০ কোটি পাউন্ড ঘুস নেওয়ার অভিযোগও উঠেছে। ব্রিটিশ মিডিয়ার খবর অনুযায়ী, যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিককে এই বিষয়ে তদন্তের জন্য জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে ও সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি সজীব ওয়াজেদ জয়ের নামও পাচারকাজে জড়িত হিসেবে উঠে এসেছে। ২০১৪ সালে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই-এর তদন্তে জয় প্রথমবার অর্থ পাচারের সন্দেহভাজন হিসেবে চিহ্নিত হন।

এফবিআইয়ের তদন্তে উঠে এসেছে, হংকং ও কেম্যান আইল্যান্ডসের বিভিন্ন অফশোর অ্যাকাউন্ট থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন, নিউইয়র্ক এবং যুক্তরাজ্যের লন্ডনে বড় অঙ্কের অর্থ স্থানান্তরিত করা হয়েছে। আমেরিকার বিচার বিভাগের সিনিয়র অ্যাটর্নি লিন্ডা স্যামুয়েলস এবং স্পেশাল এজেন্ট লা প্রেভট ৩০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পাচারের প্রমাণ পেয়েছেন।

দুদকের উপপরিচালক মো. সালাহউদ্দিনের নেতৃত্বে গঠিত বিশেষ অনুসন্ধান দলের সদস্যরা হলেন মো. সাইদুজ্জামান, আফনান জান্নাত, এসএম রাশেদুল হাসান এবং একেএম মর্তুজা আলী। তারা ৯টি প্রকল্পে প্রায় ৮০ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি অনুসন্ধান করবেন। এর মধ্যে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পে প্রায় ৫৯ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগও রয়েছে।

সংস্থার একাধিক সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) এবং যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস (ডিওজে) দুদককে সহায়তা করছে। বিশেষজ্ঞরা আশা করছেন, শিগগিরই এসব তদন্তের ফলাফল বাংলাদেশের জনগণের সামনে আসবে এবং শেখ পরিবার ও তাদের সদস্যদের বিরুদ্ধে ভয়াবহ আর্থিক অপরাধের অভিযোগ স্পষ্ট হয়ে উঠবে।

সূত্র আরও জানায়, এই অনুসন্ধানে বেশ কিছু গোপন তথ্য-উপাত্ত পাওয়া গেছে, যা শিগগিরই প্রকাশ করা হতে পারে। এসব প্রমাণের ভিত্তিতে দুদক শেখ হাসিনা এবং তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে আরও শক্তিশালী মামলা প্রস্তুত করতে যাচ্ছে।

এদিকে, দুদক জানিয়েছে, তাদের তদন্ত কার্যক্রম অনেকটাই এগিয়ে গেছে এবং তারা প্রাথমিকভাবে পাওয়া তথ্যগুলো যাচাই-বাছাই করছে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
Toto Slot
slot gacor
slot gacor
slot toto
Bacan4d Login
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot bacan4d
bacan4d togel
bacan4d game
slot gacor
bacan4d login
bacantoto 4d
toto gacor
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
slot77 gacor
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
bacansports
slot toto
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor