Bangladesh

রাজনীতিবিদেরা কি চাঁদা তুলে ভাত খাবে, ব্যবসায় আপত্তি নেই : ওবায়দুল কাদের

রাজনীতিবিদেরা ব্যবসা করলে আপত্তি নেই জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, রাজনীতি করলে কি ব্যবসা করার অধিকার থাকবে না? রাজনীতিবিদেরা কি চাঁদা তুলে ভাত খাবে? চাঁদা তুলে পরিবার চালাবে? সৎ ব্যবসা করলে আপত্তি নেই। অসৎ ব্যবসায়ী ও দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স। গতকাল শনিবার সকালে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভার মাঠ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। বর্তমান সংসদে ব্যবসায়ীদের আধিক্যের বিষয়টি তুলে ধরে করা এক প্রশ্নের জবাবে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, রাজনীতিবিদেরা ব্যবসা করলে আপত্তি নেই। রাজনীতিবিদেরা কি চাঁদা তুলে সন্তানদের খরচ চালাবে? অসৎ ব্যবসায়ী ও দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স।

গত ৭৫ বছরে আওয়ামী লীগের অপ্রাপ্তির বিষয়ে জানতে চাইলে দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, অপ্রাপ্তির বিষয় সেভাবে দেখছি না। প্রাপ্তির খাতায় হিসাব করে এগিয়ে যাচ্ছি। বাংলাদেশের রাজনীতিতে অপ্রাপ্তিটা রাজনৈতিক। আমাদের অসমাপ্ত কাজ বিজয়কে সুসংহত করতে পারিনি। সাম্প্রদায়িকতা বিজয়কে সুসংহত করার পথে অন্তরায় হয়ে আছে। এই সাম্প্রদায়িক ও জঙ্গিবাদী শক্তিকে পরাজিত করা ও পরাভূত করা আমাদের বিজয়কে সুসংহত করবে। ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের বার্তা নতুন কিছু না। আমরা আমাদের পার্টির নির্বাচনী ইশতেহার দিয়েছি,সেই ইশতেহার বাস্তবায়ন করব। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনা ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনা জরুরি, এটা আমাদের অঙ্গীকার।’ তিনি আন্ডারগ্রাউন্ড মেট্রো,এমআরটি লাইন ১ ও ৫, মাতারবাড়ি, পায়রা ও রূপপুরের মতো উন্নয়নকাজের বর্ণনা দিয়ে এগুলো সুসম্পন্ন করতে হবে। সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কিছু দুর্নীতির বিষয় সামনে আসার প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স। একটা কথা বলতে চাই সুপরিকল্পিতভাবে ওয়ান–ইলেভেনে যেটা দেখেছি, দেশের রাজনীতিবিদদের নিন্দিত করা, কুৎসা রটানো হচ্ছে। এ দেশ স্বাধীন করেছে, দেশের উন্নয়ন করছে রাজনীতিবিদেরা। সেই রাজনীতিবিদদের দুর্নীতিবাজ প্রমাণ করতে ও তাদের ব্যর্থ এটা প্রমাণ করতে কিছু লোক তৎপরতা চালাচ্ছে। আমরা সেটা বুঝি, এর বিরুদ্ধে প্রস্তুতও আছি। দলের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন ও প্রস্তুতি প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত আমরা প্রস্তুত। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজন সম্পন্ন। গতকাল আওয়ামী লীগের শোভাযাত্রা ছিল আনন্দঘন, উৎসবমুখর। আগামীকাল প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতেও স্বতঃস্ফূর্ত, সুশৃঙ্খল ও আনন্দঘন উপস্থিতি হবে এই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপনে কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত সকলে প্রস্তুত রয়েছে। শুক্রবার থেকে উৎসবের আমেজ শুরু হয়েছে। আওয়ামী লীগের হাত ধরেই বাঙালি জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন- বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে সর্বশ্রেষ্ঠ এ অর্জন, দেশের স্বাধীনতা। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অর্জন এ দেশের উন্নয়ন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা রাজনীতি করি মানুষের জন্য। আমরা মানুষের সঙ্গে আছি, ভবিষ্যতেও থাকবো। এখন দলের অসমাপ্ত কাজ করা ও সাম্প্রদায়িক জঙ্গিবাদী শক্তিকে পরাজিত করে অসাম্প্রদায়িক দেশ গঠন এবং দলের নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়ন ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনাই আওয়ামী লীগ সরকারের প্রধান লক্ষ্য। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ও পায়রা সমুদ্রবন্দরসহ চলমান উন্নয়ন প্রকল্প সুসম্পন্ন করার চেষ্টা চলছে।

দেশের স্বাধীনতা ও সর্বোচ্চ উন্নয়ন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে এসেছে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, জাতির সবচেয়ে বড় দুটি অর্জন হচ্ছে- দেশের স্বাধীনতা ও সর্বোচ্চ উন্নয়ন। এই দুটিই এসেছে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে। তিনি বলেন, আমরা বিজয়কে এখনো সুসংহত করতে পারিনি, সাম্প্রদায়িকতা এখনো বিজয়ের প্রধান অন্তরায়। ৭৫ বছরের আওয়ামী লীগের চ্যালেঞ্জ সাম্প্রদায়িক শক্তি।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, দেশকে দুর্নীতিগ্রস্থ প্রমাণ করার জন্য ও দেশের রাজনীতিবিদদের ব্যর্থ প্রমাণ করার জন্য একটি মহল ওয়ান ইলেভেনের মতো পরিকল্পিতভাবে পাঁয়তারা করছে। সভাস্থল পরিদর্শনের সময় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, এস এম কামাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, উপপ্রচার ও প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক আবদুল আউয়াল, কার্যনির্বাহী সদস্য আনিসুল ইসলাম, কৃষক লীগের সভাপতি সমীর চন্দ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button