International

রামমন্দিরে উপহারের পাহাড় ১২৬৫ কেজির লাড্ডু, বিশ্বের সবচেয়ে বড় তালা উপহার ভক্তদের

  • ফিরোজাবাদ থেকে এসেছে রাম-সীতা এবং হনুমানের ছবি খোদাই করা ১০ হাজার চুড়ি
  • কাশ্মীরের মুসলিম ভাই বোনেরা ২ কেজি জাফরান উপহার দিয়েছেন বলে জানিয়েছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ

ভারতের উত্তর প্রদেশের শহর অযোধ্যার রামমন্দিরের জন্য দেশের নানা প্রান্ত থেকে আসছে উপহারের পাহাড়। দেশের বিভিন্ন রাজ্যের পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকেও উপহার পাঠাচ্ছেন ভক্তরা। সোনা-রুপার পাদুকা থেকে শুরু করে মিহি রেশমের কাপড়, গহনা নানারকম উপহারে ভরে যাচ্ছে মন্দির।

উপহার সামলাতে হিমশিম মন্দির কর্তৃপক্ষ। বিশেষ বিশেষ উপহারের কথা জানিয়েছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদও। এখানে কিছু বিশেষ উপহারের তথ্য ও ছবি দেওয়া হল,

১২৬৫ কেজি ওজনের লাড্ডু

হায়দ্রাবাদ থেকে পাঠানো ১২৬৫ কেজির লাড্ডু

হায়দ্রাবাদ থেকে ১২৬৫ কেজি ওজনের লাড্ডু পাঠানো হয়েছে রামের জন্য। ২৫ জন কারিগর দেশি ঘি দিয়ে এই লাড্ডু তৈরি করেছেন তিন দিন ধরে।

এছাড়া উত্তরপ্রদেশেরই বিভিন্ন জেলা থেকে এসেছে নানা রকমের উপহার। এর মধ্যে শ্রীকৃষ্ণের জন্মভূমি মথুরা থেকে এসেছে ২০০ কেজি লাড্ডু।

২৪০০ কেজির ঘণ্টা

উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দারা পাঠিয়েছেন ২৪০০ কেজি ওজনের একটি ঘণ্টা

উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দারা পাঠিয়েছেন ২৪০০ কেজি ওজনের একটি ঘণ্টা। যা তৈরি করা হয়েছে অষ্টধাতু দিয়ে।

বিশ্বের সবচেয়ে বড় তালা

আলিগড়ের এক তালাশিল্পী ৪০০ কেজি ওজনের বিশ্বের সবচেয়ে বড় তালা চাবি তৈরি করেছেন রাম মন্দিরের জন্য

আলিগড়ের এক তালাশিল্পী বিশ্বের সবচেয়ে বড় তালা চাবি তৈরি করেছেন রাম মন্দিরের জন্য। ৪০০ কেজি ওজনের ওই তালা উচ্চতায় প্রায় দুই জন মানুষের সমান, ১০ ফুট। প্রস্থে ৪.৬ ফুট এবং বেধ সাড়ে ৯ ইঞ্চি।

সত্য প্রকাশ শর্মা নামে ওই তালার কারিগর জানিয়েছেন, এই তালা তিনি মন্দির ট্রাস্টকে দিয়েছেন প্রতীকী ভাবে রামমন্দিরে ব্যবহার করার জন্য।

সবজি বিক্রেতার বানানো ঘড়ি

লখনাউয়ের এক সবজি বিক্রেতা দিয়েছেন নিজের তৈরি এক বিশেষ ঘড়ি

লখনাউয়ের এক সবজি বিক্রেতাও রামলালার জন্য নিজের হাতে তৈরি করেছেন বিশেষ উপহার। অযোধ্যার রামমন্দিরকে তিনি দিয়েছেন একটি ঘড়ি। ৭৫ সেন্টিমিটার ব্যাসের ওই ঘড়িতে এক সঙ্গে ৮টি দেশের সময় দেখা যায়। ভারত, জাপান, রাশিয়া, সংযুক্ত আমিরশাহ, চিন, সিঙ্গাপুর, মেক্সিকো, আমেরিকার ওয়াশিংটন এবং নিউ ইয়র্ক।

১০৮ ফুট লম্বা ধূপকাঠি 

গুজরাতের বরোদা থেকে উপহার এসেছে ১০৮ ফুট দীর্ঘ ধূপকাঠি

প্রস্থে সাড়ে তিন ফুট চওড়া এই ধূপকাঠির ওজন ৩৬১০ কেজি। লম্বায় দাঁড় করানো হলে কুতুব মিনারের অর্ধেক ছাড়িয়ে যাবে এই ধূপকাঠি। এটি তৈরি করতে সময় লেগেছে ছয়মাস। ৩৭৬ কেজি গুগগুল বা গন্ধরসের উপাদান, সম পরিমাণে নারকেলের খোলা, ১৯০ কেজি ঘি, ৪২০ কেজি সুগন্ধি গাছ-গাছড়া এবং ১৪৭০ কেজি ঘুঁটে দিয়ে বানানো হয়েছে এই ধূপকাঠি।

শনিবারই ওই ধূপকাঠি জ্বালানো হয় অযোধ্যায়। তবে এই ধূপকাঠি একবার জ্বালালে টানা দেড় মাস জ্বলবে।

রূপা ডায়মন্ডের অলংকার

সুরাতের এক গহনা শিল্পী ৫০০০ আমেরিকান ডায়মন্ড এবং দুই কেজি রুপা দিয়ে তৈরি করেছেন একটি হার।

এ ছাড়া সুরাতের এক গহনা শিল্পী ৫০০০ আমেরিকান ডায়মন্ড এবং দুই কেজি রুপা দিয়ে তৈরি করেছেন একটি হার। হবহু রামমন্দিরের মত লকেট বানানো হয়েছে সেই হারের। হারের মালার অংশে খোদাই করা হয়েছে রামায়ণের চরিত্র।

১১০০ কেজি ওজনের প্রদীপ

১১০০ কেজি ওজনের প্রদীপ

বরোদার এক কৃষক পঞ্চ ধাতু অর্থাৎ সোনা, রুপা, তামা, লোহা এবং দস্তা দিয়ে তৈরি দিয়ে তৈরি করেছেন এই প্রদীপ। ওই প্রদীপে ৮৫১ কেজি ঘি ধরবে। প্রদীপ জ্বলবে দীর্ঘ সময়।

রামের সোনার পাদুকা

রামের সোনার পাদুকা

তেলঙ্গানা থেকে এসেছে রামের সোনার পাদুকা। ৬৪ বছরের বৃদ্ধ ছল্লা শ্রীনিবাস শাস্ত্রী তাঁর করসেবক বাবার স্বপ্নপূরণের জন্য ওই সোনার পাতে মোড়া পাদুকা নিয়ে ৮০০০ কিলোমিটার পথ হেঁটে পৌঁছেছেন রামভূমিতে। নিজের হাতে উপহার রামমন্দির কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেন তিনি।

বিশাল নাগাড়ু

গুজরাত থেকে এসেছে একটি নাগাড়ু

এ ছাড়া গুজরাত থেকে এসেছে একটি নাগাড়ু। মন্দিরে বিশেষ অনুষ্ঠানে বাজানোর জন্য বড় ঢাকের মতো দেখতে বাজনা। ৫৬ ইঞ্চি ব্যাস বিশিষ্ট সোনার তবকে মোড়া ওই নাগাড়ু রাখা হয়েছে মন্দিরের সামনের উঠোনে।

অন্যান্য

মধ্যপ্রদেশ থেকে গিয়েছে ১০ হাজার বোগেনভেলিয়া ফুল। যা দিয়ে সোমবার সাজানো হয়েছে রাম মন্দির চত্বর। এ ছাড়া পাঁচ লক্ষ লাড্ডু এবং চার কোটি ৩১ লক্ষ বার রাম নাম লেখা একটি কাগজও পাঠানো হবে মধ্যপ্রদেশের ছিন্দওয়াড়া থেকে।

কেরলের পদ্মনাভস্বামী মন্দির থেকে রামের জন্য এসেছে ওনাভিল্লু নামক বিশেষ ধনুক।

হিন্দুদের দেবতা রামের ‘মামারবাড়ি’নামে পরিচিত ছত্তীসগঢ় থেকে গত মাসেই অযোধ্যায় পৌঁছেছিল ৩০০ টন সুগন্ধি চাল। এর পাশাপাশি দুটি ট্রাকে বোঝাই করে সবজি পাঠানো হয়েছে অযোধ্যায়।

কাশ্মীর থেকে এসেছে ২ কেজি জাফরান। কাশ্মীরের মুসলিম ভাই বোনেরা এই জাফরান উপহার হিসেবে দিয়েছেন বলে জানান বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সভাপতি আলোক কুমার।

এছাড়া ফিরোজাবাদ থেকে এসেছে রাম-সীতা এবং হনুমানের ছবি খোদাই করা ১০ হাজার চুড়ি।

শ্রীলঙ্কা সরকারের প্রতিনিধিরা এসে দিয়ে গিয়েছেন অশোক বটিকার বিশেষ পাথর।

নেপাল থেকে রামমন্দিরের জন্য এসেছে অন্তত ৩০০০ উপহার। এর মধ্যে রূপার জুতা, গহনা, মূল্যবান কাপড়ে তৈরি বস্ত্রও রয়েছে। ৩০টি গাড়িতে এই সমস্ত উপহার জনকপুরের রামজানকী মন্দির থেকে এসে পৌঁছায় অযোধ্যার রামমন্দিরে।

সুদূর আফগানিস্তান থেকেও উপহার পাঠানো হয়েছে রামমন্দিরের জন্য। কাবুল নদীর জল রামমন্দিরে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সভাপতি।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button