Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
Bangladesh

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুতে অনিশ্চয়তা

তিনটি সঞ্চালন লাইন প্রস্তুত : লোকসান গুনছে পাওয়ার গ্রিড

সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তা বলেন, দীর্ঘ দিন একপেশে বক্তব্যে মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে মূল প্রকল্প তৈরি। গ্রিড লাইন না হওয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহে দেরি হচ্ছে। এখন গ্রিড লাইন রেডি থাকলেও সংশ্লিষ্টরা বলছেন আরো সময় লাগবে প্রকল্পটি থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করতে তিনটি ব্যয়বহুল সঞ্চালন লাইন প্রস্তুত করা হলেও সরবরাহের জন্য কেন্দ্র এখনো প্রস্তুত হয়নি। দফায় দফায় সময় বাড়ানো হচ্ছে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করার। অথচ প্রথম ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সময় ইতোমধ্যে দেড় বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। সময়মতো বিদ্যুৎকেন্দ্রটি প্রস্তুত না করায় লোকসানের মুখে পড়ছে পাওয়ার গ্রিড। বিদ্যুৎ উৎপাদন হলে হুইলিং চার্জ হিসেবে পাওয়ার গ্রিডের আয় হতো। ফলে বারবার পেছানোতে লোকসান গুনছে এই রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানটি।

চুক্তি অনুযায়ী বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের একটি শেষ হয়েছে ২০২২ সালে এবং অপরটি শেষ হয়েছে গত বছরে। এ ছাড়া আরেকটি সঞ্চালন লাইন প্রস্তুত করা হয়েছে চলতি বছরের জুনে। রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্র সূত্র থেকে জানা গেছে, এসব সঞ্চালন লাইনে বিদ্যুৎ সরবরাহের মতো অবস্থায় যায়নি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র।

বাংলাদেশের আর্থিকভাবে সবচেয়ে বড় একক প্রকল্প হলো রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। যার ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় এক লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকা। রাশিয়ার আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় পাবনার রূপপুরে নির্মিত হচ্ছে দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন পরমাণু শক্তি কমিশন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।

এ প্রকল্পের আওতায় ঠিকাদার হিসেবে এক হাজার ২০০ মেগাওয়াটের দু’টি ইউনিট নির্মাণ করছে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পরমাণু সংস্থা রোসাটমের সহযোগী প্রতিষ্ঠান অ্যাটমস্ট্রয়এক্সপোর্ট। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রকল্প সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তা বলেন, দীর্ঘ দিন একপেশে বক্তব্যে মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে মূল প্রকল্প তৈরি। গ্রিড লাইন না হওয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহে দেরি হচ্ছে। এখন গ্রিড লাইন রেডি থাকলেও প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন আরো সময় লাগবে প্রকল্পটি থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে।

পাওয়ার গ্রিডের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা গতকাল নয়া দিগন্তকে জানিয়েছেন, ২৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ১২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ইউনিট-১ এর উৎপাদিত বিদ্যুৎ হাই-ভোল্টেজ সঞ্চালন লাইনের মাধ্যমে গ্রিড নেটওয়ার্কে ইভ্যাকুয়েশনের জন্য পাওয়ার গ্রিড ২৩০ কেভি রূপপুর-বাঘাবাড়ি ডাবল সার্কিট সঞ্চালন লাইন স্থাপন করার কাজ পাওয়ার গ্রিড ২০২২ সালে জুন মাসে কাজ সম্পন্ন করেছে। ৪০০ কেভি রূপপুর-বগুড়া সিঙ্গেল সার্কিট সঞ্চালন লাইনের নির্মাণকাজ সম্পন্ন করেছে ২০২৪ সালের এপ্রিলে। এ ছাড়াও ৪০০ কেভি রূপপুর-গোপালগঞ্জ সিঙ্গেল সার্কিট সঞ্চালন লাইনের নির্মাণকাজ চলতি বছরের জুনে সম্পন্ন হয়েছে।

প্রতিটি ৪০০ কেভি সিঙ্গেল সার্কিট লাইন এবং ২৩০ কেভি ডাবল সার্কিট লাইনের সঞ্চালন সক্ষমতা ২০০০ মেগাওয়াট; অর্থাৎ ৪০০ কেভি রূপপুর-গোপালগঞ্জ সিঙ্গেল সার্কিট সঞ্চালন লাইনের নির্মাণ শেষ হওয়ার আগে থেকেই চালু থাকা ৪০০ কেভি রূপপুর-বগুড়া সিঙ্গেল সার্কিট সঞ্চালন লাইন এবং ২৩০ কেভি রূপপুর-বাঘাবাড়ি ডাবল সার্কিট সঞ্চালন লাইনের সম্মিলিত সঞ্চালন সক্ষমতা ৪০০০ মেগাওয়াট এবং লাইন দু’টি দিয়ে গত বছরেই ইউনিট-১ এর ফিজিক্যাল স্টার্ট-আপসহ ইউনটি-১-এর উৎপাদিত বিদ্যুৎ ইভ্যাকুয়েশন করা সম্ভব ছিল।

তবে আরো বেশি রিলায়াবিলিটি ও সিকিউরিটি নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড এবং পাওয়ার গ্রিডের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে গত বছরের ২১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত সভায় পাওয়ার গ্রিড থেকে ইউনিট-১-এর বিদ্যুৎ উৎপাদন ৬০০ মেগাওয়াটে সীমাবদ্ধ রেখে ‘পাওয়ার স্টার্ট-আপ’ করার প্রস্তাবনা করা হয়েছিল। এ প্রস্তাবনার সমর্থনে পাওয়ার গ্রিড একটি কম্প্রিহেনসিভ নেটওয়ার্ক স্ট্যাডি করে দেখায় যে, ওই সময় চালু থাকা ৪০০ কেভি রূপপুর-বগুড়া সিঙ্গেল সার্কিট লাইন এবং ২৩০ কেভি রূপপুর-বাঘাবাড়ি ডাবল সার্কিট লাইন দু’টি দিয়ে অনায়াসেই ফিজিক্যাল স্টার্ট-আপসহ সর্বোচ্চ নিরাপত্তা বজায় রেখে ৬০০ মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ রূপপুর থেকে গ্রিড নেটওয়ার্কে ইভ্যাকুয়েশন করা যেত। এ বিষয়ে গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর পাওয়ার গ্রিড থেকে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনে এ-সংক্রান্ত একটি পত্র পাঠানো হয়। কিন্তু পাওয়ার গ্রিডের প্রস্তাবনার বিপরীতে কোনো লিখিত জবাব বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন প্রদান না করায় বিষয়টি নিয়ে গত ১ মার্চ ও ৮ এপ্রিল বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড এবং পাওয়ার গ্রিড প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত সভায় আলোচনা করা হলেও পরমাণু শক্তি কমিশন বা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছ হতে সুস্পষ্ট কোনো মতামত পাওয়া যায়নি; বরং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কোনো প্রকার কারিগরি বা যৌক্তিক ব্যাখ্যা প্রদান না করে বারবার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ইউনিট-১ এর ‘ফিজিক্যাল স্টার্ট-আপ’-এর জন্য ৪০০ কেভি রূপপুর-বগুড়া সিঙ্গেল সার্কিট লাইনের পাশাপাশি ৪০০ কেভি রূপপুর-গোপালগঞ্জ সিঙ্গেল সার্কিট লাইনের প্রয়োজনীয়তার উল্লেখ করা হয়।

প্রসঙ্গত, ‘ফিজিক্যাল স্টার্ট-আপ’-এ কোনো বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে না বরং নিউক্লিয়ার ফুয়েল লোডিংসহ বিদ্যুৎ উৎপাদন অর্থাৎ ‘পাওয়ার স্টার্ট-আপ’ করার জন্য প্রস্তুতিমূলক বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে। বর্ণিত সভাগুলোয় পাওয়ার গ্রিড প্রতিনিধিদের পাশাপাশি বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের প্রতিনিধিরাও জোরালোভাবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ওই সময় চালু থাকা সঞ্চালন লাইন দু’টি ব্যবহার করেই গ্রিডের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা বজায় রেখে ‘ফিজিক্যাল স্টার্ট-আপ’ শুরু করা সম্ভব মর্মে মতামত প্রদান করেন।

ইতোমধ্যে গত ২ জুন ৪০০ কেভি রূপপুর-গোপালগঞ্জ সিঙ্গেল সার্কিট সঞ্চালন লাইনের (রিভার ক্রসিং অংশসহ) নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে এবং লাইনটি পাওয়ার গ্রিডের ৪০০ কেভি গোপালগাঞ্জ উপকেন্দ্র থেকে চার্জ করা হয়েছে। ফলে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ইউনিট-১ এর উৎপাদিতব্য ১২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ইভ্যাকুয়েশনে জন্য পাওয়ার গ্রিড বাংলাদেশ পিএলসির সঞ্চালন ব্যবস্থা পুরোপুরি প্রস্তুত।

২৩০ কেভি রূপপুর-বাঘাবাড়ি ডাবল সার্কিট লাইনটির নির্মাণকাজ জুন ২০২২ সালে সম্পন্ন হলেও রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ২৩০ কেভি জিআইএস প্রস্তুত না হওয়ায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গত বছরের মার্চে অস্থায়ী ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে লাইনটি চালু করে বিদ্যুৎকেন্দ্রের কন্সট্রাকশন পাওয়ার গ্রহণ করা হচ্ছে। জানা যায়, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আজ পর্যন্ত ২৩০ কেভি জিআইএস চালু হয়নি, ফলে ২৩০ কেভি রূপপুর-বাঘাবাড়ি ডাবল সার্কিট লাইনটি এখনো অস্থায়ী ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে চালু আছে, যা গ্রিড নেটওয়ার্কের নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ। এ বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বিভিন্ন সময় তাগাদা দেয়া হলেও এ পর্যন্ত ২৩০ কেভি জিআইএস চালু করা হয়নি। ৪০০ কেভি জিআইএস ও ২৩০ কেভি জিআইএসের মধ্যে সংযোগ স্থাপনের জন্য নির্ধারিত দু’টি ৪০০/২৩০ কেভি, ৫২০ এমভিএ ইন্টার-বাস ট্র্যান্সফরমার চালুসংক্রান্ত কাজও আজ পর্যন্ত শেষ হয়নি।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, প্রকল্পের অনেক কাজ এখনো বাকি আছে। সেখানে ৪০০ কেভি থেকে সঞ্চালনের জন্য ২৩০ কেভির একটি সাবস্টেশন এবং ট্রান্সফরমার এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। এ ছাড়া আরো অনেক টেকনিক্যাল কাজ বাকি আছে। একজন কর্মকর্তা বলেন, স্টার্ট-আপ হওয়ার পরেও তিন মাস সময় লাগে বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করতে। প্রকল্প সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা বলেন, পুরো বিষয়টি রাশিয়ান কর্মকর্তাদের ওপর নির্ভর করছে। তারা স্পষ্ট করে বলতে পারছে না কবে থেকে বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করা যাবে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহের সময় বারবার পেছাচ্ছে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে প্রথম ইউনিট থেকে উৎপাদন শুরুর কথা ছিল। সেটি পিছিয়ে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে নেয়া হয়। এখন আরো পেছাচ্ছে। আর দ্বিতীয় ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরুর কথা ছিল ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে। সেটা পিছিয়ে ২০২৫ সালে নেয়া হয়েছিল। তবে এই ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন হতে পারে ২০২৭ সালে। ২০১৬ সালের জুলাই থেকে গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত ছিল প্রকল্পের মেয়াদ। গত বছর প্রকল্পের মেয়াদ বাড়িয়ে ডিসেম্বর ২০২৭ পর্যন্ত করা হয়েছে।

এ বিষয়ে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো: কবীর হোসেন গতকাল নয়া দিগন্তকে জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে চারটি সঞ্চালন লাইনের মধ্যে দু’টি বাস্তবায়ন হয়েছে। বাকি আছে রূপপুর-ধামরাই-ঢাকা ও রূপপুর-কালিয়াকৈর-ঢাকা। তবে প্রথম ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ সঞ্চালন করতে দু’টি সঞ্চালন লাইন শেষ হয়েছে। কিন্তু নানা কারণে রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের কাজ দেরি হয়েছে। তিনি বলেন, গত সেপ্টেম্বরে চুল্লির ভেতর ‘ডামি’ জ্বালানি প্রবেশ করিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। চলতি বছরের মধ্যে চুল্লিতে পারমাণবিক জ্বালানি প্রবেশ করানো হবে। জ্বালানি প্রবেশে কমপক্ষে তিন মাস সময় লাগে। এরপর কিছু কিছু করে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে। তবে কবে নাগাদ বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে আসবে এ বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacantoto4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d toto
slot toto
bacan4d
bacan4d
togel online
Toto Slot
saraslot88
Bacan4d Login
bacantoto
Bacan4d Login
bacan4d
bacan4drtp
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot maxwin
slot bacan4d
slot maxwin
bacan4d togel
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d login
bacantoto 4d
slot gacor
bacansport
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot77 gacor
JAVHD
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
gacor slot
slot gacor777
slot gacor bacan4d
bacan4d
bacansport
toto gacor
bacan4d
bacansports login
slot maxwin
slot dana
slot gacor
slot dana
slot gacor
bacansports
bacansport
bacansport
bacansport
bawan4d
bacansports
bacansport
slot gacor
judi bola
slot maxwin
slot maxwin
bacansport
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot demo
slot gacor
slot gacor
slot gacor
toto slot
slot gacor
demo slot gacor
slot maxwin
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot toto