রেকর্ড উচ্চতায় সোনা, ট্রাম্প-পাওয়েল দ্বন্দ্বে দুর্বল ডলার

উত্তর আমেরিকায় সোমবার লেনদেন চলাকালে সোনার দাম বেড়ে তিন হাজার ৪২৫ ডলারের কাছাকাছি পৌঁছে নতুন সর্বোচ্চ উচ্চতায় পৌঁছয়। মূল্যবান ধাতুটির এই ঊর্ধ্বগতি ঘটেছে এমন সময়, যখন মার্কিন ডলার দুর্বল হয়ে পড়ছে, আর ফেডারেল রিজার্ভের (ফেড) স্বাধীনতা হুমকির মুখে। কারণ প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফেড চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলকে অপসারণের বিষয়টি বিবেচনা করছেন।
ছয়টি প্রধান মুদ্রার বিপরীতে ডলারের মানকে অনুসরণ করা মার্কিন ডলার সূচক নেমে এসেছে ৯৮.০০-এর কাছাকাছি, যা গত তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।
কারিগরি দৃষ্টিকোণ থেকে, দুর্বল ডলার বিনিয়োগকারীদের জন্য সোনাকে আরো আকর্ষণীয় করে তোলে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জেরোম পাওয়েলের তীব্রভাবে সমালোচনা করে বলেন, তিনি সুদের হার কমাতে ব্যর্থ হয়েছেন, যদিও পণ্যমূল্য ও জ্বালানি তেলের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। তিনি শুক্রবার বলেন, ‘মার্কিন জনগণের স্বার্থে ফেডের সুদের হার কমানো উচিত। এটাই ওর একমাত্র কাজ।
আমি ওর ওপর খুশি নই। আমি চাইলে ওকে খুব দ্রুত সরিয়ে দিতে পারব, এটা বিশ্বাস করো।’
হোয়াইট হাউসের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা কেভিন হ্যাসেটও শুক্রবার নিশ্চিত করেন, প্রেসিডেন্ট ও তার দল জেরোম পাওয়েলকে অপসারণের উপায় খুঁজছেন। তিনি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ও তার দল এই বিষয়টি পর্যালোচনা করে যাচ্ছে।
এদিকে উত্তর আমেরিকায় সোমবার লেনদেন চলাকালে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আবারও পাওয়েলকে নীতিগত নমনীয়তা না দেখানোর জন্য সমালোচনা করেন। ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে তিনি লেখেন, “অর্থনীতিতে ধীরগতির আশঙ্কা রয়েছে, যদি না এই ‘মি. টু লেট’, যিনি বিশাল এক ব্যর্থতা, এখনই সুদের হার কমান।”
ট্রাম্পের এসব মন্তব্যকে আর্থিক বাজারে ডলারের ভবিষ্যতের জন্য নেতিবাচক হিসেবে দেখা হয়েছে, কারণ এটি ফেডের রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা নিয়ে সন্দেহ তৈরি করেছে, যা ডলারের নিরাপদ আশ্রয়ের মর্যাদাকে হ্রাস করেছে।
এ ছাড়া ওয়াশিংটন থেকে আসা প্রায় প্রতিদিন পরিবর্তনশীল শুল্কসংক্রান্ত খবরে বিনিয়োগকারীরা রিজার্ভ মুদ্রা হিসেবে ডলারের অবস্থান নতুন করে ভাবতে বাধ্য হয়েছেন। বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের প্রত্যাশার চেয়ে বেশি কঠোর শুল্ক আরোপ যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির জন্যই ক্ষতিকর।
এমন উদ্বেগমূলক পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীরা মূল্যবান ধাতুর প্রতি ঝুঁকছে, যার মধ্যে সোনা অন্যতম।