রেমিট্যান্সের ডলারে ১১৫ টাকার বেশি দর নয়: ১২২ টাকা ৫০ পয়সা পর্যন্ত দরে ডলার কিনছে অনেক ব্যাংক
এখন থেকে প্রবাসী আয়ে ব্যাংকের নিজস্ব প্রণোদনাসহ ডলারের দর কোনোভাবেই ১১৫ টাকার বেশি দর দেওয়া যাবে না। রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রে প্রতি ডলারের বিপরীতে ১২২ টাকার বেশি দর দেওয়ার তথ্য প্রকাশের পর জরুরি এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন এবিবি ও বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনকারী ব্যাংকের সংগঠন বাফেদার যৌথ সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
নানা উদ্যোগ নেওয়ার পরও ডলার সংকট কমছে না, বরং বাড়ছে। ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন এবিবি ও বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনকারী ব্যাংকের সংগঠন বাফেদা গত ১ সেপ্টেম্বর প্রতি ডলারে ৫০ পয়সা বাড়িয়ে রপ্তানি ও রেমিট্যান্সে ১১০ টাকা ৫০ পয়সায় নির্ধারণ করে। এর সঙ্গে রেমিট্যান্সে ব্যাংকগুলো নিজেদের মতো করে প্রণোদনা দিতে পারবে বলে জানানো হয়। তবে বেশিরভাগ ব্যাংক এ দরে ডলার পাচ্ছে না। এখন ১২২ টাকা ৫০ পয়সা পর্যন্ত দরে ডলার কিনছে অনেক ব্যাংক।
করোনার পর আমদানি বৃদ্ধির পাওয়ার ফলে ডলারের বাড়তি চাহিদা তৈরি হয়। এতে করে ডলারের দর হুহু করে বেড়ে গত বছরের মাঝামাঝি ১১৪ টাকায় ওঠে। এরপর বাংলাদেশ ব্যাংকের মধ্যস্ততায় গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর থেকে ডলারের দর ঠিক করে আসছে ব্যাংকগুলো। এ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে শুরুতে ডলারের দর রেমিট্যান্সে ১০৮ এবং রপ্তানিতে ৯৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়। পর্যায়ক্রমে উভয় ক্ষেত্রে ডলার কেনার দর অভিন্ন করা হয়।
উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ডলারের দর ঠিক করার পাশাপাশি রিজার্ভ থেকে প্রচুর ডলার বিক্রি করে আসছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। চলতি অর্থবছর এরই মধ্যে সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলারের মতো বিক্রি করা হয়েছে। গত অর্থবছর বিক্রি করা হয় ১৩ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন ডলার। এর আগের অর্থবছর ৭ দশমিক ৬২ বিলিয়ন ডলার।
এর মধ্যে আকুতে ১১১ কোটি ডলারের দায় পরিশোধ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে করে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আরও কমে ১৯ বিলিয়ন ডলারের ঘরে নেমে আছে। ২০২১ সালের আগস্টে যা ছিল রেকর্ড ৪৮ বিলিয়ন ডলারের ওপরে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই- অক্টোবর) পর্যন্ত বিভিন্ন দেশ থেকে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ৬৮৮ কোটি ডলার। এর মধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ১১৫ কোটি ডলার এসে দেশটির অবস্থান এখন শীর্ষে। গত অর্থবছর পর্যন্ত দেশটির অবস্থান ছিল তৃতীয়। এর আগে রেমিট্যান্স আহরণে শীর্ষে থাকা সৌদি আরব থেকে ১০৭ কোটি ডলার এসেছে। দেশটির অবস্থান এখন দ্বিতীয়। আগে চতুর্থ অবস্থানে থাকা যুক্তরাজ্যের অবস্থান এখন তৃতীয়। দেশটি থেকে রেমিট্যান্স এসেছে ৮২ কোটি ডলার।