Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
Hot

রোজা ঘিরে পর্যাপ্ত পণ্য আমদানি

পবিত্র রমজান মাস শুরু হতে আর মাত্র ১৮ দিন বাকি। রমজানে দেশে চাহিদা ব্যাপকভাবে বাড়ে ছোলা, খেজুর, ডাল, পেঁয়াজ, চিনি, ভোজ্যতেলসহ নানা পণ্যের। এসব পণ্যের চাহিদার জোগান দিতে প্রস্তুতি নেন ব্যবসায়ীরা। এবারও ঠিক তা-ই হচ্ছে।

অনেক আগে থেকেই রমজানের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা।

এবার রমজান ঘিরে জানুয়ারি মাসে বিপুল পরিমাণ ভোগ্যপণ্য আমদানি হয়েছে, যা অনেক ক্ষেত্রে পুরো রোজার মাসের চাহিদার সমান। কিছু ক্ষেত্রে আমদানি রোজার চাহিদাকেও ছাড়িয়ে গেছে। চলতি মাসে আরো আমদানি হবে।

এতে বাজারে সরবরাহ আরো বাড়বে বলে জানিয়েছেন আমদানিকারকরা।

তবে পর্যাপ্ত অন্যান্য পণের মতো রোজায় বিপুল পরিমাণ ভোজ্যতেল আমদানি হয়েছে। কিন্তু তার পরও কোথাও কোথাও খুচরা পর্যায়ে বোতলজাত ভোজ্যতেলের সংকট হচ্ছে বলে খবর আছে। কোনো কোনো দোকানে বোতলজাত ভোজ্যতেল পাওয়া গেলেও বাড়তি দর চাওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

ভোজ্যতেল আমদানিকারক ও উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মকর্তারা বলছেন, আগের বছরগুলোর তুলনায় তাঁরা সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বাজারে তেলের সরবরাহ বাড়িয়েছেন। গত জানুয়ারি মাসে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহের প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ২৫ শতাংশ। মাঠ পর্যায়ে কেউ কেউ অতিরিক্ত মজুদ করে থাকতে পারে বলে অভিযোগ তেল সরবরাহকারী কম্পানিগুলোর। 

সম্প্রতি রাজধানীর রামপুরা, বাড্ডা, জোয়ারসাহারা ও মহাখালী কাঁচাবাজার ঘুরে ও ভোগ্যপণ্য ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে চিনি, ছোলা, পেঁয়াজ, ডালের। দামও অনেকটাই সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে। দেশি পেঁয়াজ কেজি ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়, চিনি প্রতি কেজি প্যাকেট ১২৫ টাকায়, খোলা চিনি কেজি ১২০ টাকায়, ছোলা কেজি ১২০ থেকে ১২৫ টাকায়, দেশি মসুর ডাল কেজি ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায় ও মোটা মসুর ডাল ১০৫ থেকে ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া দেশি রসুন বাজারে চলে আসায় দামও কমে এসেছে। নতুন দেশি রসুন ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায়, আদা কেজি ১২০ টাকায় ও নতুন আলু কেজি মাত্র ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

রাজধানীর রামপুরা বাজারের মেসার্স মহিউদ্দিন এন্টারপ্রাইজের ব্যবসায়ী মহিউদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এবার রমজান উপলক্ষে সয়াবিন তেল ছাড়া অন্য কোনো ভোগ্যপণ্যের ঘাটতি নেই। তাই এবার রোজা উপলক্ষে দাম বাড়ার কোনো সম্ভাবনা নেই; বরং বাজারে সরবরাহ বাড়ায় এক মাসের ব্যবধানে ছোলার দাম কেজিতে ১০ টাকা পর্যন্ত কমেছে।’

তিনি বলেন, ‘দুই মাস ধরেই বাজারে সয়াবিন তেলের সংকট চলছে। ‘দু-একজন ডিলার তেল দিতে চাইলেও শর্ত দিচ্ছেন তেলের সঙ্গে চিনি, লবণ, আটা, মসলাজাতীয় পণ্য ও পোলাও চালের বস্তা নিতে হবে। এতে দোকান চালাতে বাধ্য হয়েই এসব শর্ত মেনেই তেল নিচ্ছে অনেকেই।’

রাজধানীর জোয়ারসাহারা বাজারের মুদি দোকানের ব্যবসায়ী মো. নজরুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘কোনো কম্পানির ডিলার বোতলজাত সয়াবিন তেল দিচ্ছে না। খোলা তেলেরও দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। মাঝেমধ্যে দু-একটি কম্পানি এক কার্টন করে তেল দিতে চাইলেও সঙ্গে এক বস্তা পোলাও চাল নিতে বলেন। পোলাও চালের বস্তা না নিলে তেল দেয় না। রমজান মাসেও যদি এভাবে তেলের সংকট থাকে, তাহলে ভোক্তারা বিপদে পড়ে যাবে।’

রামপুরা কাঁচাবাজারে কথা হয় গৃহিণী মারজানা সাইফ নামের এক ক্রেতার সঙ্গে। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমি বাসার কাজের লোকদের পাঠাই, তারা ফিরে এসে বলে তেল নেই। এখন আমি নিজেই বাজারে এসে একই চিত্র দেখলাম। তবে দু-একটি দোকানে তেল রয়েছে। সেটি বাড়িয়ে বিক্রি করা হচ্ছে। চালডাল.কমেও ১০ লিটার সয়াবিন তেলের অর্ডার দিয়েও এক মাস ধরে তেল পাচ্ছি না। তারাও বলছে তাদের কাছে তেল নেই। আর মাত্র কিছুদিন পরেই রমজান মাস শুরু হবে। রমজানেও যদি এই পরিস্থিতি থাকে তাহলে আমাদের খুবই কষ্টে হবে। সরকারের উচিত তেল আমদানিকারকদের সঙ্গে বসে কিভাবে দ্রুত বাজারে সরবরাহ বাড়ানো যায় সেদিকে গুরুত্ব দেওয়া।’  

ভোজ্যতেল আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘মূলত ন্যাচারাল ক্রাইসিসের কারণেই বাজারে এখন সয়াবিন তেলের সংকট চলছে। বিশ্ববাজারে পাম তেলের উচ্চমূল্যের কারণে আমদানিকারকরা পাম তেলের আমদানি কমিয়ে দিয়েছে। এতে যে কারখানাগুলোতে (বিস্কুট কারখানা ও বেকারি পণ্য) পাম তেল ব্যবহার করা হতো, তারা এখন সয়াবিন তেলের ব্যবহার বাড়িয়ে দিয়েছে। এতে বাজারে সয়াবিন তেলের চাহিদা আগের তুলনায় অনেক বেড়ে গেছে। ডলার সংকটের কারণে আমদানিকারকরা বাড়তি চাহিদার সয়াবিন তেল আমদানি করতে পারছে না।’

ভোগ্যপণ্যের সরবরাহ বৃদ্ধি এবং পণ্যের দাম কমানোকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। আমদানি বাড়ানো ও মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভোজ্যতেল, ছোলা, চিনি, পেঁয়াজ, আলু, খেজুরসহ বিভিন্ন পণ্যে শুল্ক ছাড় দিয়েছিল। পাশাপাশি ভোগ্যপণ্য আমদানির ক্ষেত্রে ঋণপত্র খুলতে এখন মার্কিন ডলারের সংকটও অনেকটা কেটেছে। সব মিলিয়ে আমদানিতে উৎসাহ বেড়েছে।

বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের (বিটিটিসি) হিসাবে রোজায় বাজারে ভোজ্যতেলের চাহিদা থাকে প্রায় তিন লাখ টন। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও চট্টগ্রাম কাস্টমসের তথ্যে দেখা যায়, জানুয়ারি মাসের প্রথম ২৯ দিনে সয়াবিন ও পাম তেল আমদানি হয়েছে প্রায় চার লাখ টন। আবার সয়াবিন তেল তৈরির কাঁচামাল সয়াবিন বীজ আমদানি করা হয়েছে তিন লাখ টন। এই বীজ মাড়াই করে পাওয়া যাবে প্রায় অর্ধ লাখ টন সয়াবিন তেল। অর্থাৎ রোজার চাহিদার চেয়ে বাজারে সরবরাহ বেশি থাকবে। বর্তমানে বাজারে ভোজ্যতেলের পরিস্থিতি নিয়ে ব্যবসায়ীরা জানান, রমজান উপলক্ষে পাইপলাইনে বেশ কিছু ভোজ্যতেলভর্তি জাহাজ চট্টগ্রামের বন্দরে নোঙর করার অপেক্ষায় আছে। এগুলো অচিরেই স্থানীয় সরবরাহের সঙ্গে যুক্ত হবে। পাইপলাইনে থাকা ভোজ্যতেলের পরিমাণ প্রায় এক লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন।

রোজায় চিনির চাহিদাও তিন লাখ টনের মতো। বিগত ১৫ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ পরিমাণ অপরিশোধিত চিনি আমদানি করা হয়েছে জানুয়ারি মাসে এক লাখ ৫৩ হাজার টন। বন্দরে এসে ভিড়েছে আরো প্রায় এক লাখ টন চিনিসহ জাহাজ। চলতি ফেব্রুয়ারি মাসেও চিনি আমদানি করা হবে। বিশ্ব বাজারে পণ্যটির দাম কমছে।

ট্যারিফ কমিশনের হিসাবে, রোজায় এক লাখ টনের মতো ছোলার চাহিদা রয়েছে। জানুয়ারিতে ছোলা আমদানি করা হয়েছে ৯৩ হাজার টন। ডিসেম্বরে এসেছিল আরো ১৫ হাজার টন। এক লাখ টন চাহিদার বিপরীতে জানুয়ারিতে মসুর ডাল এসেছে ৬২ হাজার টন। জানুয়ারি মাসের শেষদিকে ২৫ হাজার টন মসুর ডাল নিয়ে বন্দরে ভিড়ে একটি জাহাজ। ফেব্রুয়ারিতেও আমদানি করা হবে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। রোজায় মটর ডালের চাহিদাও বেশি থাকে। ব্যবসায়ীদের হিসাবে, রোজায় এক লাখ টন মটর ডালের চাহিদা রয়েছে। জানুয়ারিতে আমদানি করা হয়েছে এক লাখ আট হাজার টন। দেশে পেঁয়াজের ভরা মৌসুম চলায় দাম সহনীয় পর্যায়ে, তাই এবার রোজাকে ঘিরে পেঁয়াজ আমদানির প্রয়োজন হচ্ছে না। রোজায় খেজুরের চাহিদা ৬০ হাজার টন। জানুয়ারিতে এসেছে ২২ হাজার টন। বড় চালান আসবে ফেব্রুয়ারিতে।

খেজুর আমদানিকারক ফারুক ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের মালিক ফারুক আহমেদ বলেন, ‘সরকার শুল্ক ছাড় দিয়েছে। এতে প্রতি কেজিতে সর্বনিম্ন ৩০ টাকা, সর্বোচ্চ ১২২ টাকা শুল্ককর কমেছে। ব্যবসায়ীরা জানুয়ারি থেকে পুরোদমে আমদানি শুরু করেছেন। রোজা শুরুর আগে ফেব্রুয়ারিতে আরো খেজুর আসবে।’

এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, গত ১ থেকে ২৯ জানুয়ারি সময়ে আমদানি হওয়া পেঁয়াজ, ছোলা, মটর ও মসুর ডাল, ভোজ্যতেল পাম ও সয়াবিনের কাঁচামাল, চিনি, গম ও খেজুরের মোট দাম ১০০ কোটি মার্কিন ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৭৪ শতাংশ বেশি। আমদানির পরিমাণ মোট ১৬ লাখ ২৪ হাজার টন।

কৃষি অর্থনীতিবিদ ড. জাহাঙ্গীর আলম খান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সরকারের তরফ থেকে যতটুকু করা সম্ভব ছিল, সরকার শুল্ক ছাড় দিয়েছে, যাতে রমজানে সবচেয়ে ব্যবহৃত পণ্যগুলোর দাম কমে। শুল্ক ছাড়ের কারণে আমদানিকারকরা পর্যাপ্ত পরিমাণ আমদানি করেছেন। এতে এবার রোজায় ভোগ্যপণ্যের দামে ঊর্ধ্বগতি হবে না; বরং দামটি নিম্নগামী থাকবে। তাতে রমজানে সাধারণ ভোক্তাদের মাঝে কিছুটা হলেও স্বস্তি আসবে।’

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সেখ বশির উদ্দিন বলেছেন, ‘আসন্ন রমজান মাসে ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়াবে না। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বাজারের সঙ্গে যারা অংশীজন আছে, তাদের সঙ্গে সমন্বয় করে বাজারকে আমরা ব্যবস্থাপনার চেষ্টা করছি। এখন পর্যন্ত তেমন কোনো বিপত্তি হয়নি এবং আমি এটাও আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই, রমজানেও ইনশাআল্লাহ সমস্যা হবে না। আমাদের আমদানীকৃত যে ভোগ্যপণ্য—চিনি, তেল, ছোলা, খেজুর, পেঁয়াজ, আলু আমি আপনাদের নিশ্চিত করতে চাই, আল্লাহর রহমতে এর কোনো সংকট বাজারে নেই।’ তিনি বলেন, ‘আমরা প্রতিযোগিতা কমিশনকে পুরোপুরি স্বাধীন করে দিতে চাই। বাজারে যাতে প্রতিযোগিতাবিরোধী কোনো কর্মকাণ্ড না ঘটে, মন্ত্রণালয়ের সেখানে কোনো হস্তক্ষেপ যেন না থাকে, সেদিকে আগাতে চাই।’

কনজিউমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন রমজান মাসে ভোক্তাদের ‘পকেট না কাটতে’ ব্যবসায়ীদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমাদের ব্যবসায়ীদের আচার-আচরণে একটি ইতিবাচক পরিবর্তন জরুরি। দেখা যায়, পেঁয়াজ আমাদের ভারত থেকে আমদানি করতে হয়, তখন দাম বেড়ে গেলে আমাদের এখানেও দাম বাড়ে। কিন্তু যখন কমে যায় তখন কিন্তু ব্যবসায়ীরা কমায় না। আগামী রমজানে যেসব পণ্য রয়েছে, সেগুলোর পর্যাপ্ত আমদানি আছে। তবু দেখা যাবে, ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে দেবে। কৃত্রিম সংকট তৈরি করবে। এখানে আমাদের ব্যবহারের অনুশীলনে পরিবর্তন করতে হবে।’

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacantoto4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d toto
slot toto
bacan4d
bacan4d
togel online
Toto Slot
saraslot88
Bacan4d Login
bacantoto
Bacan4d Login
bacan4d
bacan4drtp
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot maxwin
slot bacan4d
slot maxwin
bacan4d togel
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d login
bacantoto 4d
slot gacor
bacansport
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot77 gacor
JAVHD
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
gacor slot
slot gacor777
slot gacor bacan4d
bacan4d
bacansport
toto gacor
bacan4d
bacansports login
slot maxwin
slot dana
slot gacor
slot dana
slot gacor
bacansports
bacansport
bacansport
bacansport
bawan4d
bacansports
bacansport
slot gacor
judi bola
slot maxwin
slot maxwin
bacansport
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot demo
slot gacor
slot gacor
slot gacor
toto slot
slot gacor
demo slot gacor
slot maxwin
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot toto