Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
Hot

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গুতেরাঁর একদিন সংস্কারে বাংলাদেশের পাশে থাকবে জাতিসংঘ

ব্যস্ত সময় কাটালেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরাঁ। শুক্রবার সকালে ঢাকায় বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টাসহ পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে। এ সময় তিনি বাংলাদেশের সংস্কারে পাশে থাকায় প্রত্যয় প্রকাশ করেন। বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টাসহ কক্সবাজার গিয়ে পরিদর্শন করেন রোহিঙ্গা ক্যাম্প। প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর সঙ্গে ইফতার করেন তিনি। পরিদর্শন শেষে গুতেরাঁ বলেন, নিজ দেশে ফিরে যেতে চান রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী। এজন্য মিয়ানমারে শান্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। সেইসঙ্গে রোহিঙ্গাদের সহায়তা কমে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

বাংলাদেশের সংস্কার ও পরিবর্তন প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছেন সফররত জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরাঁ। শুক্রবার সকালে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকের পর জাতিসংঘের এক বার্তায় বলা হয়, বৈঠকে সংস্থাটির মহাসচিব ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বাংলাদেশের চলমান পরিবর্তন ও সংস্কার প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করেন। মহাসচিব বাংলাদেশের সংস্কার ও পরিবর্তন প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছেন। অ্যান্তনিও গুতেরাঁ জাতিসংঘ ও বাংলাদেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রতি বাংলাদেশের উদারতার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং জাতিসংঘ শান্তিরক্ষায় দৃঢ় প্রতিশ্রুতির জন্যও বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানান। পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের পর একইস্থানে প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা ইস্যু ও অগ্রাধিকার বিষয়ক উচ্চ প্রতিনিধি ড. খলিলুর রহমান জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তারা রোহিঙ্গা সংকট সম্পর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেন।

জাতিসংঘের বার্তায় বলা হয়েছে, মহাসচিব ও বিশেষ প্রতিনিধি (ড. খলিলুর রহমান) রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের ওপর আসন্ন উচ্চ-পর্যায়ের সম্মেলন নিয়ে আলোচনা করেন। পরে জাতিসংঘ মহাসচিব প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আমন্ত্রণে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশে আসেন গুতেরাঁ। 
এদিন ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও গুতেরাঁকে বহনকারী বিমানের চার্টার্ড ফ্লাইটটি দুপুর ১২টা ৪৮ মিনিটের দিকে কক্সবাজার বিমানবন্দরে অবতরণ করে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বিমানবন্দরে তাদের স্বাগত জানান। জাতিসংঘ মহাসচিব গুতেরাঁ বিমানবন্দর থেকে সরাসরি উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যান।

জাতিসংঘের মহাসচিব ক্যাম্প ১৮তে অবস্থিত রোহিঙ্গা সাংস্কৃতিক স্মৃতি কেন্দ্র (আরসিএমসি) পরিদর্শন করেন। এরপর লার্নিং সেন্টার পরিদর্শন শেষে তিনি আরসিএমসিতে গিয়ে রোহিঙ্গাদের ঐতিহ্য নিয়ে ধারণা নেন এবং আরসিএমসি ঘুরে দেখেন। পরিদর্শন শেষে অ্যান্তনিও গুতেরাঁ বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করে আমি দুটি স্পষ্ট বার্তা পেয়েছি। প্রথমত, আশ্রিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী মিয়ানমারে ফিরে যেতে চান। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই মিয়ানমারে শান্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠা নিশ্চিত করতে হবে এবং রোহিঙ্গাদের অধিকার নিশ্চিত করে কোনো ধরনের বৈষম্যের শিকার তারা যেন না হয় সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে।

জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, দ্বিতীয়ত, রোহিঙ্গারা আরও ভালো পরিবেশ চায় ক্যাম্পে। দুর্ভাগ্যবশত যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য অনেক দেশ সম্প্রতি নাটকীয়ভাবে মানবিক সহায়তা কমিয়ে দিয়েছে। এই কারণে আমাদের মানবিক সহায়তার মধ্যে খাবারের রেশন কমাতে হয়েছে। আমি প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, আমি আমার জায়গা থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো। যত দেশে সম্ভব আমি কথা বলবো, যাতে করে ফান্ড পাওয়া যায় এবং এর থেকে আরও খারাপ পরিস্থিতি না আসে।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় রোহিঙ্গাদের ভুলে যাবে, এমনটি প্রত্যাশা করেন না উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ে জোরালো আওয়াজ তুলবো। কারণ সম্মানের সঙ্গে এখানে বসবাসের জন্য এই সম্প্রদায়ের মানবিক সহায়তা অত্যন্ত জরুরি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণ বিশাল সহায়তা করেছে। তারা তাদের ভূমি, বন, সীমিত পানি এবং অপ্রচলিত সম্পদ ভাগ করে নিয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের এখন সময় এসেছে সহায়তার। সময় নষ্ট করার কোনো সুযোগ নেই। এর আগে ২০১৮ সালে আমি কক্সবাজারে এসেছিলাম। এই শিবিরগুলো জলবায়ু সংকটের সম্মুখীন। গ্রীষ্মে তাপমাত্রা অত্যন্ত গরম এবং আগুনের ঝুঁকি বেড়ে যায়। ঘূর্ণিঝড় এবং বর্ষা মৌসুমে বন্যা এবং বিপজ্জনক ভূমি স্লাইড ঘরবাড়ি এবং জীবন ধ্বংস করে দেয়। আবশ্যক খাদ্য সহায়তার পাশাপাশি, এখানে মানুষের শিক্ষার, দক্ষতা উন্নয়ন প্রয়োজন। জাতিসংঘের সংস্থাগুলো যেমন মানবিক এবং উন্নয়ন সংস্থাগুলোও বিশাল বাজেট কাটছাঁটের মুখোমুখি। এটি মানুষের ওপর সরাসরি এবং মারাত্মক প্রভাব ফেলবে। শরণার্থী জনগণ মানবিক সহায়তার ওপর নির্ভরশীল।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেন মহাসচিব। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা বদর আলম বলেন, আমরা মাঝিরা (রোহিঙ্গা নেতা) জাতিসংঘ মহাসচিবকে মিয়ানমারের অত্যাচারের বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছি। কীভাবে বাড়ি-ঘর পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে, চোখের সামনে স্বজনদের হত্যা করা হয়েছে, গণহত্যা চালানো হয়েছে সবকিছু তুলে ধরেছি।

তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গাদের দেয়া শর্তগুলো মেনে নিলে আমরা নিজ দেশে ফিরে যেতে রাজি। এই বিষয়টি জাতিসংঘ মহাসচিব ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে জানিয়েছেন রোহিঙ্গা কমিউনিটির নেতারা।

বিকালে জাতিসংঘ মহাসচিব মাল্টিপারপাস সেন্টারে যান, যেখানে রোহিঙ্গা নারী-পুরুষদের তৈরি করা পোশাক, ব্যাগ, বাঁশ ও পাটের পণ্য, কাঠের শিল্পকর্ম এবং অন্যান্য হস্তশিল্প দেখেন। এসব পণ্য দেখে প্রশংসা করেন এবং রোহিঙ্গাদের স্বনির্ভর হওয়ার প্রচেষ্টাকে উৎসাহিত করেন বলে জানিয়েছেন রোহিঙ্গা নেতা নুরুল আমিন। তিনি বলেন- মহাসচিব বলেছেন, এই উদ্যোগগুলো রোহিঙ্গাদের আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধিতে সহায়তা করছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তাদের উন্নয়নে আরও ভূমিকা রাখতে পারে।

জমিলা নামের এক রোহিঙ্গা নারী হস্তশিল্পী বলেন, আমাদের তৈরি ব্যাগ ও কাপড়ের প্রতি জাতিসংঘ মহাসচিবের আগ্রহ দেখে খুব ভালো লাগছে। 

লার্নিং সেন্টারের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, জাতিসংঘ মহাসচিব গভীর মনোযোগ দিয়ে তাদের কথা শুনেছেন এবং মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আসার কারণ জানতে চেয়েছেন। তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আরও জোরালো ভূমিকা রাখার আশ্বাস দিয়েছেন।

এই সময়ে প্রধান উপদেষ্টা কক্সবাজার বিমানবন্দর ও খুরুশকুল পুনর্বাসন প্রকল্প পরিদর্শন করেন। নির্মাণাধীন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটির অগ্রগতির খোঁজ নেন তিনি। এ সময় বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) সেখানকার কাজের অগ্রগতি ও সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেছে। বেবিচক তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আমিনুল হাসিব প্রধান উপদেষ্টাকে বিমানবন্দরের নির্মাণকাজের অগ্রগতি সম্পর্কে অবহিত করেন। তিনি জানান, বিমানবন্দরের নির্মাণকাজ ৯৫ শতাংশ শেষ হয়েছে। অবশিষ্ট কাজ চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বিকালে প্রধান উপদেষ্টা জলবায়ু উদ্বাস্তুদের জন্য নির্মিত এই প্রকল্প এলাকা ঘুরে দেখেন এবং চলমান কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হন। পরিদর্শনকালে প্রকল্প পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মিরাজুল ইসলাম প্রধান উপদেষ্টাকে প্রকল্পের অগ্রগতি ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার বিস্তারিত তুলে ধরেন। তিনি জানান, ১২৯টি ভবনে ৪ হাজার ২১৮ পরিবারকে পুনর্বাসন করা হবে, যা জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাস্তুচ্যুত মানুষদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ।

পরিদর্শন শেষে প্রধান উপদেষ্টা কক্সবাজারের পর্যটন ও উন্নয়ন সম্ভাবনা নিয়ে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় অংশ নেন। সভায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। সেখানে তিনি চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় বলেন, আঁরা হতা হৈবল্যা নু আইয়্যি, অনরাত্তু জাইনতো আইস্যিদে। (আমরা কথা বলার জন্য আসিনি, আপনাদের কাছ থেকে জানতে এসেছি)।

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, বাংলাদেশের মানুষ যথেষ্ট ভাগ্যবান। কারণ তাদের একটি সমুদ্র আছে, যা বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ব্যবসা করতে উদ্বুদ্ধ করে। কক্সবাজারে বিআইএএম অডিটোরিয়ামে স্থানীয় জনগণের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি আরও বলেন, আমরা যথেষ্ট ভাগ্যবান, কারণ আমাদের একটি সমুদ্র আছে। ব্যবসার জন্য সমুদ্র খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সামুদ্রিক সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের একটি দীর্ঘ সমুদ্রতীর রয়েছে এবং চট্টগ্রামের সমুদ্রতীরের যেকোনো স্থানে সমুদ্রবন্দর নির্মাণ করা সম্ভব। কক্সবাজারে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয়েছে। এটি কেবল একটি পর্যটন শহরই নয়, বরং অর্থনীতিরও কেন্দ্র।
নেপাল ও ভারতের সেভেন সিস্টার্সের কোনো সমুদ্র নেই উল্লেখ করে ড. ইউনূস পারস্পরিক সুবিধার্থে বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দর ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, আমরা ব্যবসা করতে পারলে সকলের ভাগ্য বদলে যাবে। লবণ উৎপাদনকারীদের কাছে জানতে চান, বিদেশি আমদানিকারকরা বাংলাদেশ থেকে আমদানি করতে আগ্রহী কিনা। কেননা কক্সবাজারের কৃষকদের উৎপাদিত লবণ এখন রপ্তানি করার সক্ষমতা রয়েছে।

তিনি পাইলট ভিত্তিতে কক্সবাজারে বায়ু বিদ্যুৎ উৎপাদনের পাশাপাশি বায়ুশক্তির (বায়ুপ্রবাহের শক্তি কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন) সম্ভাবনা সম্পর্কে খোঁজ নেন। স্থানীয় জনগণকে ভবিষ্যতে সুযোগগুলো কাজে লাগানোর আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, কক্সবাজার অর্থনীতির একটি বৃহৎ শক্তি এবং এটি তথ্যপ্রযুক্তিরও একটি শহর হতে পারে। তিনি স্থানীয় জনগণের কাছে তাদের ওপর রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের প্রভাব সম্পর্কে জানতে চান। মতবিনিময় সভায় কক্সবাজারের উন্নয়নে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ প্রধান উপদেষ্টার সামনে বিভিন্ন প্রস্তাব ও দাবি পেশ করেন।

বিকাল ৫টার দিকে সড়কপথে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যান ড. ইউনূস। সেখানে মহাসচিব ও প্রধান উপদেষ্টা রোহিঙ্গা নেতাদের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর লাখো রোহিঙ্গার সঙ্গে ইফতার করেন। ইফতার শেষে সড়কপথেই কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে রওনা দেন তারা।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacantoto4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d toto
slot toto
bacan4d
bacan4d
togel online
Toto Slot
saraslot88
Bacan4d Login
bacantoto
Bacan4d Login
bacan4d
bacan4drtp
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot maxwin
slot bacan4d
slot maxwin
bacan4d togel
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d login
bacantoto 4d
slot gacor
bacansport
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot77 gacor
JAVHD
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
gacor slot
slot gacor777
slot gacor bacan4d
bacan4d
bacansport
toto gacor
bacan4d
bacansports login
slot maxwin
slot dana
slot gacor
slot dana
slot gacor
bacansports
bacansport
bacansport
bacansport
bawan4d
bacansports
bacansport
slot gacor
judi bola
slot maxwin
slot maxwin
bacansport
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot demo
slot gacor
slot gacor
slot gacor
toto slot
slot gacor
demo slot gacor
slot maxwin
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
toto slot
bacansport
slot gacor
slot toto