Bangladesh

লন্ডনে শেখ রেহানার বাড়ি ফ্রিজ

যুক্তরাজ্যের সাবেক সিটি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিকের মা শেখ রেহানার মালিকানাধীন লন্ডনের বাড়িটি ফ্রিজ করেছে এনসিএ।

শেখ হাসিনার বোন ও যুক্তরাজ্যের সাবেক সিটি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিকের মা শেখ রেহানার মালিকানাধীন লন্ডনের বাড়িটি ফ্রিজ করেছে যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ক্রাইম অ্যাজেন্সি (এনসিএ)। ভবিষ্যতে যাতে এই বাড়িটি বিক্রি করতে না পারে এজন্য প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

সোমবার (২৬ মে) যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইলের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্রিটেনের এফবিআই নামে পরিচিত সংস্থাটি (ন্যাশনাল ক্রাইম অ্যাজেন্সি) গত রাতে উত্তর লন্ডনের গোল্ডার্স গ্রিনে অবস্থিত বিলাসবহুল বাড়িটি জব্দের আদেশ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। গত ১৪ বছর ধরে এটি টিউলিপ পরিবারের প্রধান বাড়ি হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছিল।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, হ্যাম্পস্টেড লেবার পার্টির এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের মা শেখ রেহানা ২০১১ সালে ১.২ মিলিয়ন পাউন্ডে কেনার পর থেকে ওই বাড়িতে বসবাস করছেন।

আইল অব ম্যান ট্যাক্স হেভেনে নিবন্ধিত বাড়িটি ৪২ বছর বয়সী কোটিপতি আহমেদ শায়ান রহমান কিনেছিলেন। তিনি রাজা চার্লস প্রতিষ্ঠিত একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠান ব্রিটিশ এশিয়ান ট্রাস্টের চেয়ারম্যান ছিলেন।

শনিবার রাতে ট্রাস্ট জানিয়েছে যে- আহমেদ শায়ান রহমান ন্যাশনাল ক্রাইম অ্যাজেন্সির তদন্তের কারণে পদত্যাগ করেছেন।

বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের মন্ত্রিপরিষদের সদস্য সালমান এফ রহমানের ছেলে এই আহমেদ শায়ান রহমান।

ন্যাশনাল ক্রাইম অ্যাজেন্সি সন্দেহভাজন দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের তদন্তের অংশ হিসেবে এই বাড়িটি জব্দের আদেশ জারি করেছে।

ডেইলি মেইলের প্রতিবেদনে বাংলাদেশে তাদের আত্মসাতের বিষয়টিও জানিয়েছে। বলা হয়েছে, রাশিয়ান কোম্পানির সাথে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের চুক্তি থেকে টিউলিপ সিদ্দিক ও তার পরিবারের সদস্যরা প্রায় চার বিলিয়ন পাউন্ড আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ তদন্ত করছে বাংলাদেশ। তবে টিউলিপ কোনো অন্যায় করেননি বলে দাবি করেছেন।

উল্লেখ্য, গত ১৪ জানুয়ারি যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার সরকারের সিটি মিনিস্টার পদ থেকে পদত্যাগ করেন টিউলিপ সিদ্দিক। দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে পদত্যাগের ঘোষণা দেন তিনি।

এ সময় তার বিরুদ্ধে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীর কাছ থেকে লন্ডনে বিনামূল্যে ফ্ল্যাট এবং বাংলাদেশে রাশিয়ার সহায়তায় নির্মাণাধীন পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পে মোটা অঙ্কের ঘুষ গ্রহণ করেছিলেন বলে অভিযোগ উঠে।

গত বছর ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। এরপর শেখ হাসিনা সরকারের আমলে বাংলাদেশে ৯টি অবকাঠামো প্রকল্প থেকে ৮০ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে।

তাতে শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যের সাথে যুক্তরাজ্যের লেবার সরকারের দুর্নীতি মোকাবেলার দায়িত্বে থাকা টিউলিপ সিদ্দিকের নামও আসে। ওই অভিযোগ তদন্ত শুরু করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

দুদকের এই তৎপরতা আলোচনায় আসার পর যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিষয়টি খবর প্রকাশ হয়। ২০১৩ সালে শেখ হাসিনার মস্কো সফরে দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে তার বৈঠকের সময় টিউলিপ সিদ্দিকও উপস্থিত ছিলেন। তার ওই ছবি এ সময় ফলাও করে প্রচার করে বেশ কয়েকটি ব্রিটিশ গণমাধ্যম।

এই প্রেক্ষাপটে টিউলিপ তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্তের অনুরোধ জানিয়ে দেশটির প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা (ইন্ডিপেনডেন্ট অ্যাডভাইজার অন মিনিস্ট্রিয়াল স্ট্যান্ডার্ডস) লাউরি ম্যাগনাসের কাছে চিঠি (রেফারেল) লেখেন। এরপর এর তদন্ত শুরু হয়।

গত বছর ৪ জুলাই অনুষ্ঠিত যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচনে দক্ষিণ-পশ্চিম লন্ডনের হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড হাইগেট আসন থেকে টানা চতুর্থবারের মতো পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হন টিউলিপ সিদ্দিক। এরপর তাকে ইকোনোমিক সেক্রেটারি টু দ্য ট্রেজারি অ্যান্ড সিটি মিনিস্টার পদে নিয়োগ দেয় প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমার নেতৃত্বাধীন সরকার।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

bacan4d slot toto