Bangladesh

লন্ডভন্ড ট্রেনের শিডিউল, প্রশ্নের মুখে সেবা: ভাড়া বৃদ্ধির প্রথম দিনই দুর্ভোগ

জয়দেবপুরে দুই ট্রেনের সংঘর্ষ এবং তীব্র দাবদাহের ফলে ট্রেন চলাচলের শিডিউল লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। শনিবার উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলে ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় চরম আকার ধারণ করে।

অনেক ট্রেন নির্ধারিত সময়ের ৫ থেকে ১৪ ঘণ্টা বিলম্বে চলাচল করছে। ফলে বিভিন্ন স্থানে হাজার হাজার যাত্রী চরম দুর্ভোগের মুখে পড়েন। বিশেষ করে বয়স্ক নারী-পুরুষ এবং শিশুদের কষ্ট ছিল অবর্ণনীয়। তাদের অনেকেই গরমে অসুস্থ হয়ে পড়েন। গত এক মাসের বেশি সময় ধরে ট্রেন সময় ধরে চলতে পারছে না। 

অতিরিক্ত তাপমাত্রার কারণে বিভিন্ন স্থানে লাইন বাঁকা হয়ে যাচ্ছে। ফলে ট্রেন চলছে ধীরগতিতে। এতে সময়মতো যাত্রীরা গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছেন না। যাওয়ার পথে দেরি হওয়ায় ফেরার সময়ও বিলম্ব হচ্ছে।

সর্বশেষ শুক্রবার জয়দেবপুরে দুটি ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ হওয়ায় একটি লাইন শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বন্ধ ছিল। ফলে একটি লাইন দিয়ে স্বল্পগতিতে ট্রেন যাতায়াত করেছে। এসব কারণে উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলগামী কোনো ট্রেন সময় মেনে চলতে পারছে না।

কিছু ট্রেনের যাত্রা বাতিলও করা হয়েছে। কমলাপুর স্টেশনে বিভিন্ন গন্তব্যের যাত্রীতে উপচে পড়া ভিড়। ফলে দুপুরের আগেই স্টেশনের দোকানগুলো থেকে পানি, বিস্কিটসহ হালকা খাবার উধাও হয়ে যায়। 
দিন বাড়ার সঙ্গে যাত্রী বাড়লেও তাদের খাওয়ার পানি বা হালকা খাবারের কোনো ব্যবস্থা ছিল না। এসব কারণে স্টেশনে অপেক্ষমাণ যাত্রীদের ক্ষোভে ফুঁসতে দেখা গেছে।

এদিকে শনিবার ছিল ট্রেনে নতুন ভাড়া বৃদ্ধির প্রথম দিন। আগের চেয়ে বেশি দামে টিকিট কিনে প্রথম দিনই যাত্রীদের ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হয়। রেল কর্তৃপক্ষের প্রতিশ্রুতি ছিল ভাড়া বৃদ্ধির সঙ্গে সেবা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। সময়মতো চালানো হবে ট্রেন।

কিন্তু কর্তৃপক্ষের প্রতিশ্রুতি ভাড়া বৃদ্ধির প্রথম দিনই মিথ্যা বলে প্রমাণ হয়েছে। ফলে যাত্রীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। কবে নাগাদ ট্রেনের শিডিউল ঠিক হবে, তাও পরিষ্কার করে বলতে পারছেন না রেলের কেউ। তবে যাত্রীদের এ দুর্ভোগ আরও কয়েক দিন ধরে চলবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। 

কমলাপুর স্টেশন সূত্রে জানা গেছে দৈনিক ৫৩টি আন্তঃনগর ও কমিউটার ট্রেন কমলাপুর থেকে ছেড়ে যায়। এর মধ্যে গতকাল মাত্র ৪টি ট্রেন সঠিক সময়ে ছেড়ে গেছে। বাকিগুলো ৪ থেকে ১৩ ঘণ্টা বিলম্বে চলাচল করেছে।

লাইন ক্লিয়ার না হওয়ার কারণে জয়দেবপুর হয়ে যেসব ট্রেন যাতায়াত করে সেগুলো বিলম্ব হছে। দেশে প্রায় ৯৫ শতাংশ ট্রেন একটি র‌্যাক দিয়ে চলাচল করে। ফলে আপ ট্রেন বিলম্বে চললে ডাউন ট্রেনও বিলম্বে চলাচল করে। 

সরেজমিন কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ঘুরে দেখা যায়, শত শত যাত্রী স্টেশনে অবস্থান করছেন বিভিন্ন ট্রেনের জন্য। দাবদাহের মধ্যে প্লাটফর্মে যাত্রীদের কেউ কেউ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।

রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রী আল আমিন খান জানালেন, তিনিসহ তার পরিবারের ৬ সদস্য রংপুর যাবেন বলে সকাল ৮টায় কমলাপুর স্টেশনে আসেন। রাজধানীর সূত্রাপুর থাকেন তারা। ভোরে প্রস্তুতি নিয়ে সকাল সাড়ে ৬টায় কমলাপুর স্টেশনের উদ্দেশে রওয়ানা দেন। স্টেশনে ১ ঘণ্টা আগে পৌঁছলেও ট্রেনের দেখা মেলেনি। শনিরআখড়া থেকে পরিবার নিয়ে এসেছেন রবিউল ইসলাম। 

তিনি বলেন, ৯টার ট্রেন ধরার জন্য বাসা থেকে রওয়ানা দেন ৭টায়। তাদের তৈরি হওয়ার জন্য ঘুম থেকে উঠতে হয় ভোর ৫টায়। সেই তখন থেকে যুদ্ধ চলছে। বেলা ৩টার দিকেও ট্রেনে উঠতে পারেননি। সকাল ৯টা ১০ মিনিটে কমলাপুর থেকে ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ট্রেনটি ঢাকায় এসে পৌঁছায়নি। আমিন, রবিউলসহ আরও অন্তত ১৫ যাত্রী জানান, শনিবার অতিরিক্ত টাকা দিয়ে টিকিট কেটে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।

আগের ভাড়ার চেয়ে ৩০ শতাংশ বেশি দিয়ে টিকিট কেটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা স্টেশনে পড়ে আছেন। স্টেশন কর্তৃপক্ষ জানাল, রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনটি শনিবার মধ্যরাতে কমলাপুর স্টেশনে এসে পৌঁছার সম্ভাবনা আছে। সেক্ষেত্রে এ ট্রেনের যাত্রীদের প্রায় ১৩-১৪ ঘণ্টা স্টেশনে অপেক্ষা করতে হবে। 

বনলতা এক্সপ্রেস ট্রেনের অনেক যাত্রীকে স্টেশনে ছটফট করতে দেখা গেছে। প্রচণ্ড গরমে খাবার পানিসহ খাদ্যসামগ্রী সংকটে চরম দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা। ট্রেনটি দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে কমলাপুর থেকে ছেড়ে যাওয়ার কথা।

ওই ট্রেনের যাত্রী জান্নাতুল ইসলাম কেয়া বলেন, ‘আজই (শনিবার) ভাড়া বাড়াল, কিন্তু যাত্রীরা আগের সেবাও পাচ্ছেন না। অসুস্থ শাশুড়িসহ ৭ জন যাত্রী স্টেশনে এসেছিলেন দুপুর সাড়ে ১২টায়। স্টেশন চত্বরে খাবারেরও ব্যবস্থা নেই। কর্তৃপক্ষের ভুলের কারণে যাত্রীরা দুর্ভোগের মুখে পড়েছেন। তারা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন-কিন্তু রেলপথমন্ত্রী, সচিব, রেলওয়ে মহাপরিচালক কিংবা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কেউই খোঁজ নিচ্ছেন না।’

যাত্রীরা টিকিট কেটে স্টেশনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করছেন, অপরদিকে ট্রেন কখন আসবে তাও সঠিকভাবে বলতে পারছেন না সংশ্লিষ্টরা। ট্রেনটি রাত ১০টার দিকে আসতে পারে-এমনটা জানিয়েছেন স্টেশন ম্যানেজার। 

সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রীরাও বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে অবস্থান করছিলেন। ট্রেনটি বেলা ২টা ৪৫ মিনিটে কমলাপুর স্টেশন থেকে ছেড়ে যাওয়ার কথা। এতে ৯০০ যাত্রী টিকিট কেটেছেন। প্রায় সাড়ে ৭শ যাত্রী কমলাপুর স্টেশনে উঠার কথা। অধিকাংশ যাত্রী দুপুর ২টার মধ্যেই স্টেশনে পৌঁছান।

প্রচণ্ড রোদ উপেক্ষা করে স্টেশনে আসা ওই ট্রেনের যাত্রী সালাহ উদ্দিন বললেন, ‘স্টেশনে হাজার হাজার যাত্রী ৪ ঘণ্টা, ৭ ঘণ্টা ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত অপেক্ষা করছেন। রেলের কেউ এসে খোঁজও নিচ্ছেন না। যাত্রীদের কাছে অর্থ থাকলেও হালকা বা ভারী কোনো খাবার সামগ্রী পাচ্ছেন না। কেউ পানি পর্যন্ত দিচ্ছে না। স্টেশনের বাইরে কয়েকটি দোকান থাকলেও সব পণ্য বিক্রি হয়ে গেছে সকালেই। স্টেশনের সাধারণ স্টাফরা বলছেন, ট্রেনটি রাত ১১টার দিকে আসতে পারে। তবে এটা নিশ্চিত কোনো তথ্য নয়। 

রাজশাহী কমিউটার ট্রেনের যাত্রী জালাল মিয়া বললেন, এটি দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে কমলাপুর থেকে ছেড়ে যাওয়ার কথা। সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত খোঁজই পাওয়া যায়নি ট্রেনটি কখন কমলাপুর স্টেশনে আসবে। অপর যাত্রী গার্মেন্টকর্মী পারুল আক্তার বলেন, তিনি স্বামী ও ২ সন্তান নিয়ে স্টেশনে আসেন বেলা ১১টায়। সঙ্গে যে পরিমাণ অর্থ ছিল, দুপুরে রুটি-কলা খেয়েছেন। মধ্যরাত পর্যন্ত নাকি ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। ভেবে পাচ্ছেন না কি করবেন।’

স্টেশনে দায়িত্বরত এক কর্মকর্তা বলেন, ‘কমিউটার ট্রেনের কথা বাদ দেন, আন্তঃনগর ট্রেনের খোঁজখবরই নেই। আমরা ভয়ে প্লাটফর্মেই যাচ্ছি না। যাত্রীরা উত্তেজিত হয়ে আছেন। রেলের সাদা পোশাক খুলে গোপনে প্লাটফর্মে পা ফেলছেন।’ 

কমলাপুর স্টেশন ৭ নম্বর প্লাটফর্মে শুয়ে ছিল এক পরিবার। ৬ সদস্যের পরিবারের কর্তা হিরণ মিয়ার ভাষ্য, পুরো স্টেশনে রেলের কাউকে দেখা যাচ্ছে না। স্টেশন পরিচ্ছন্নতা কাজে নিয়োজিত কাউকেও চোখে পড়ছে না। ধূমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেন নাকি ৯ ঘণ্টা বিলম্বে চলাচল করবে। 

পরিচ্ছন্নতাকর্মী জহির জানালেন, স্টেশনে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়। উত্তেজিত হয়ে আছেন সবাই। সাহস পাচ্ছি না ঝাড়ু দেওয়ার। তাই পালিয়ে পালিয়ে থাকছি। প্লাটফর্মের বাইরে গিয়ে ৭ নম্বার লাইনের পাশে বমি করছিল এক শিশু। ওই সময় তার মা শিশুটির মাথায় পানি দিচ্ছিলেন। প্রশ্ন করতেই রেগে গেলেন। বললেন, তারা (রেলসংশ্লিষ্ট) কি মানুষ। গরমে আমার সন্তান মরে যাচ্ছে। ফ্যানও নষ্ট। ট্রেনও আসছে না। পরে জানা গেল তিনি রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রী। 

ঢাকা থেকে জামালপুরের তারাকান্দি গন্তব্যের অগ্নিবীণা এক্সপ্রেস ট্রেন কমলাপুর থেকে ছাড়ার কথা ছিল বেলা সাড়ে ১১টায়। আড়াই ঘণ্টা বিলম্বে ট্রেনটি কমলাপুর স্টেশনে এসে পৌঁছে। মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনটি ছাড়ার কথা বেলা সোয়া ১টায়। ট্রেনটি স্টেশনে আসে বিকাল সোয়া ৪টায়। স্টেশন মাস্টার রুমে এক স্টাফ বললেন, ট্রেনটি কখন ছাড়বে জানা যাচ্ছে না। বিলম্বে ট্রেন আসলে নানা সমস্যা থাকে। ওয়াশফিটে নিয়ে পরিষ্কার করে ভালোভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেই ট্রেন ছাড়তে হয়। 

কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার মাসুদ সারওয়ার বলেন, শুক্রবার থেকেই উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলে চলা ট্রেনগুলো বিলম্বে চলাচল করছে। শনিবার শিডিউল বিপর্যয় চরমে ওঠে। আমরা চেষ্টা করছি, কিন্তু ট্রেনগুলো একই র‌্যাকে চলায় আপ ট্রেন বিলম্বে চললে ডাউন ট্রেনটিও বিলম্বে চলে। এ কারণে শুধু কমলাপুর স্টেশনে নয়, ছোট-বড় সব স্টেশনেই যাত্রীরা ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন। মূলত উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে চলা সব ট্রেন ২ থেকে ১১-১৩ ঘণ্টা বিলম্বে চলাচল করছে। এখনো লাইন পুরোপুরি ঠিক হয়নি। বিলম্বে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হতে আরও কয়েকদিন সময় লাগতে পারে। 

রেলওয়ে মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী বলেন, আমিও স্টেশনে এসে দেখেছি শত শত মানুষের দুর্ভোগ। এটা মেনে নেওয়া যায় না। আমরা চেষ্টা করছি শিডিউল বিপর্যয় রোধ করতে। কিন্তু পারছি না, কারণ ইঞ্জিন ও কোচস্বল্পতা আছে। তাছাড়া শুক্রবার ট্রেন দুর্ঘটনার কারণে ওই অঞ্চলের অধিকাংশ ট্রেন বিলম্বে চলাচল করছে। আমরা আশা করছি কয়েক দিনের মধ্যেই ট্রেনগুলো যথাসময়ে চলাচল করবে। যাত্রীদের প্রতি দুঃখ প্রকাশ করে তিনি বলেন, প্রচণ্ড দাবদাহের কারণে কয়েক সপ্তাহ ধরে ট্রেনের গতি কমিয়ে চালানো হচ্ছে। এতে করেও কিছু ট্রেন বিলম্বে চলাচল করছে। তার ওপর দুই ট্রেনের সংঘর্ষ হয়। গরম চলে গেলেই আগের গতি নিয়ে ট্রেন চলবে। 

৩২ ঘণ্টা পর আপ লাইন চালু : গাজীপুর প্রতিনিধি জানান, জয়দেবপুর জংশন স্টেশনের স্টেশন মাস্টার মো. হানিফ মিয়া বলেন-এ দুর্ঘটনার পর ট্রেন দুটিকে উদ্ধার করতে শুক্রবার বিকালে ঢাকা থেকে উদ্ধারকারী রিলিফ ট্রেন ঘটনাস্থলে আসে। পরে আখাউড়া থেকে অপর একটি ক্রেনও ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কাজে যোগ দেয়। তারা টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেনের ক্ষতিগ্রস্ত বগিগুলো রেখে অন্য বগিগুলো পেছনের দিকে টেনে জয়দেবপুর রেলওয়ে জংশন এলাকায় নিয়ে রাখে। 

উদ্ধারকারীরা টানা প্রায় ৩১ ঘণ্টা উদ্ধার অভিযান চালিয়ে শনিবার বিকাল ৬টা পর্যন্ত তেলবাহী ট্রেনের একটি বগি বাদে বাকী বগিগুলোকে আলাদা আলাদাভাবে লাইনের ওপর তুলে পেছনে ধীরাশ্রম রেল স্টেশনে নিয়ে রাখে। দুর্ঘটনাকবলিত লাইনের দুপাশে ব্লক করে কাজ করা হয়। পরে তেলবাহী ট্রেনের অবশিষ্ট বগিসহ দুর্ঘটনাকবলিত ট্রেন দুটির ইঞ্জিন ও সবকটি বগি লাইনের ওপর থেকে সরিয়ে নিয়ে লাইন মেরামত শেষে দুর্ঘটনার প্রায় ৩২ ঘণ্টা পর ওই লাইনে ট্রেন চলাচলের জন্য উপযোগী করে তোলা হয়। এরপর শনিবার সন্ধ্যা ৬টা ৫৫ মিনিটে ক্লিয়ারেন্স দিয়ে আপ লাইনে ট্রেন চলাচল চালু করা হয়।

দুই ট্রেনের সংঘর্ষের ঘটনায় জেলা প্রশাসনের গঠিত তদন্ত কমিটি শনিবার কাজ শুরু করেছে। প্রথমে এ কমিটির প্রধান ও গাজীপুর জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. মতিউর রহমান জয়দেবপুর রেলওয়ে জংশনে আপ গুমটি স্টেশন মাস্টার (বরখাস্তকৃত) আবুল হাসেম, পয়েন্টসম্যান সাদ্দাম ও মোস্তাফিজুর রহমানের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন।

এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন তিন সদস্যের তদন্ত কমিটির অন্য দুই সদস্য গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল আরেফিন ও জয়দেবপুর জংশনের স্টেশন মাস্টার মো. হানিফ মিয়া। এ দুর্ঘটনা তদন্তের জন্য জেলা প্রশাসনের একটি ও রেলওয়ের দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে এ ঘটনায় রেলওয়ের তিন কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বরখাস্তরা হলেন- আপগুন্টি স্টেশন মাস্টার মো. আবুল হাসেম, পয়েন্টসম্যান সাদ্দাম হোসেন ও মোস্তাফিজুর রহমান।

পশ্চিমাঞ্চলে ট্রেনের শিডিউল লন্ডভন্ড : রাজশাহী ব্যুরো জানায়, রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন থেকে ঢাকা অভিমুখে আন্তঃনগর ট্রেন সিল্কসিটি এক্সপ্রেসের যাত্রার সময় ছিল সকাল ৭টা ৪০ মিনিট। সেই ট্রেন শনিবার ছেড়ে গেছে দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে। অর্থাৎ নির্ধারিত সময়ের ৬ ঘণ্টা পর ট্রেনটি নিজ গন্তব্যের উদ্দেশে রাজশাহী রেল স্টেশন ছেড়ে গেছে। তবে কেবল সিল্কসিটি এক্সপ্রেসই নয়, পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের প্রায় সব ট্রেনই শনিবার দুই থেকে থেকে সর্বোচ্চ ছয় ঘণ্টা পর্যন্ত বিলম্বে চলাচল করছে।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) অসীম কুমার তালুকদার বলেন, গাজীপুরে শুক্রবার দুই ট্রেনের সংঘর্ষের পর তাদের ট্রেন শিডিউল এলোমেলো হয়ে গেছে। এখন ট্রেনগুলোর ডে-অফ না এলে এই শিডিউল বিপর্যয় কাটানো সম্ভব হচ্ছে না।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button