লাইব্রেরি থেকে নোবলেজয়ী হান কাংয়ের ‘দ্য ভেজিটেরিয়ান’ সরানোর দাবি কোরিয়ান অভিভাবকদের
গত মঙ্গলবার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে ‘কনফেডারেশন অব ন্যাশনাল প্যারেন্টস অ্যাসোসিয়েশন’- নামের সংগঠনটি বলেছে, ‘শুধু একজন নোবেল বিজয়ীর লেখা বলেই- উগ্র ও সহিংস বিষয়বস্তু সংবলিত একটি বই প্রাথমিক, মাধ্যমিক বা উচ্চ বিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে রাখা উচিত নয়।’
অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ক্ষতিকর দাবি করে, দেশটির নোবেল বিজয়ী সাহিত্যিক হান ক্যাংয়ের ‘দ্য ভেজিটেরিয়ান’ বইটি স্কুলের লাইব্রেরি থেকে অপসারণের আহ্বান জানিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার অভিভাবকদের নিয়ে তৈরি একটি সংগঠন।
গত মঙ্গলবার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে ‘কনফেডারেশন অব ন্যাশনাল প্যারেন্টস অ্যাসোসিয়েশন’- নামের সংগঠনটি বলেছে, ‘শুধু একজন নোবেল বিজয়ীর লেখা বলেই- উগ্র ও সহিংস বিষয়বস্তু সংবলিত একটি বই প্রাথমিক, মাধ্যমিক বা উচ্চ বিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে রাখা উচিত নয়।’
তাদের দাবি, উপন্যাসটিকে তরুণদের জন্য ‘ক্ষতিকর’ গণমাধ্যম হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা উচিত।
মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ এই দাবির সমর্থনে পিটিশনে সই করেছেন।
তারা সিউল মেট্রোপলিটন অফিস অব এডুকেশনের নবনির্বাচিত সুপারিনটেনডেন্ট জং কেউন-সিককে উদ্দেশ্য করে প্রশ্ন করেছে, ”সুপারিনটেনডেন্ট নিজে কি ‘দ্য ভেজিটেরিয়ান’ বইটি পুরো পড়েছেন? তিনি কি তার অপ্রাপ্তবয়স্ক নাতি-নাতনিদের জন্য এই বইটিকে আবশ্যক পাঠ্য হিসেবে সুপারিশ করবেন?”
এর আগেও, সংগঠনটি শিক্ষার ক্ষেত্রে রক্ষণশীল মূল্যবোধ অনুসরণের দাবিতে একাধিক দাবি জানিয়েছে।
সংগঠনটি সমকামী সম্পর্কসহ বিভিন্ন সামাজিক সমস্যার বিরুদ্ধেও সক্রিয়ভাবে প্রতিবাদ করেছে।
মঙ্গলবার ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির অডিটেও ‘দ্য ভেজিটেরিয়ান’ নিয়ে বিতর্কও উঠে আসে।
এতে জানা গেছে, গত বছর গিয়ংগি শিক্ষা অফিসে রক্ষণশীল কয়েকটি গোষ্ঠী একাধিক বিবৃতি পাঠিয়েছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই অঞ্চলের বেশ কয়েকটি স্কুল যৌন বিষয়বস্তু নিয়ে উদ্বেগের কথা উল্লেখ করে ‘দ্য ভেজিটেরিয়ান’ সহ ২,৫০০ টিরও বেশি বই বাতিল করেছিল।
জাতীয় পরিষদের অধিবেশন চলাকালীন গিয়ংগি প্রদেশের শিক্ষা সুপারিনটেনডেন্ট ইয়িম তাই-হি বলেছিলেন, ”আমি ‘দ্য ভেজিটেরিয়ান’ পড়েছি, এটি একটি গভীর চিন্তাশীল সৃষ্টি।”
তিনি আরও বলেন, ‘তবে এর কিছু অংশ নিয়ে আমি অস্বস্তি বোধ করেছি এবং আমি মনে করি শিক্ষার্থীরাও একইরকম অস্বস্তি বোধ করতে পারে।’
এর প্রতিক্রিয়ায়, বিরোধী ‘ডেমোক্র্যাটিক পার্টি অব কোরিয়া’র প্রতিনিধি জিয়ং ইউল-হো এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে এটিকে ‘বইয়ের সেন্সরশিপের আধুনিক রূপ’ বলে অভিহিত করেছেন।
তার দলের আরেক আইনপ্রণেতা কো মিন-জং গিয়ংগি শিক্ষা অফিসের নিন্দা জানিয়েছেন। কারণ তারা স্কুলগুলোকে কোন বই পড়ানো হবে বা হবে না, সে সম্পর্কে একাধিক নির্দেশনা দিয়েছে।
তিনি বলেছেন, এগুলো আসলে ‘সেন্সরশিপ বা জবরদস্তির’ বলেই গণ্য হয়।