লেনদেনের ভারসাম্যের সার্বিক ঘাটতি কমেছে প্রায় ৫০০ কোটি ডলার

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের জুলাই-ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময়ে লেনদেনের ভারসাম্যের সার্বিক ঘাটতি দাঁড়িয়েছে সাড়ে ৬৫ কোটি ডলার। গত অর্থবছরের একই সময় শেষে এই ঘাটতি ছিল ৫৫৭ কোটি ডলার। অর্থাৎ আগের অর্থবছরের তুলনায় কমেছে প্রায় ৮৮ শতাংশ।
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই মাসের পর থেকে দীর্ঘসময় সামষ্টিক অর্থনীতিতে অস্থিতিশীলতা থাকার পরও— অর্থপাচার কমে যাওয়া, রেমিট্যান্স প্রবাহে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি এবং আমদানির তুলনায় রপ্তানির উচ্চ প্রবৃদ্ধিসহ বেশকিছু ইতিবাচক প্রবণতার ফলে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) দেশের লেনদেনের ভারসাম্যের (ব্যালেন্স অব পেমেন্ট) সার্বিক ঘাটতি গত অর্থবছরের তুলনায় ৪৯১ কোটি ডলার কমে এসেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের জুলাই-ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময়ে লেনদেনের ভারসাম্যের সার্বিক ঘাটতি দাঁড়িয়েছে সাড়ে ৬৫ কোটি ডলার। গত অর্থবছরের একই সময় শেষে এই ঘাটতি ছিল ৫৫৭ কোটি ডলার। অর্থাৎ আগের অর্থবছরের তুলনায় কমেছে প্রায় ৮৮ শতাংশ।
অল্প কমেছে বাণিজ্য ঘাটতি
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, আমদানির চেয়ে দেশের রপ্তানির প্রবৃদ্ধি বেশি হওয়ায়—গত অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিলের তুলনায় চলতি অর্থবছরের একই সময় শেষে আমদানি ও রপ্তানির পার্থক্য বা বাণিজ্য ঘাটতি অল্প কমেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল শেষে বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৮২৩ কোটি ডলার, যা আগের অর্থবছরে ছিল ১ হাজার ৮৭০ কোটি ডলার। অর্থাৎ, এখানেও ঘাটতি প্রায় ২ দশমিক ৫১ শতাংশের মতো কমেছে।
অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে দেশের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮.৬ শতাংশ, যা বিপরীতে আমদানি বেড়েছে ৪.৬ শতাংশ।
চলতি হিসাবের ঘাটতি হ্রাস ৭৭ শতাংশ
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল শেষে দেশের চলতি হিসাবের ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১৩৯ কোটি ডলার, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৬০৩ কোটি ডলার। অর্থাৎ ঘাটতি কমেছে ৭৭ শতাংশ বা ৪৬৪ কোটি ডলার।
আমদানি ও রপ্তানির পার্থক্য— বা বাণিজ্য ভারসাম্যের সঙ্গে প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি নেট ইনকাম যোগ করে চলতি হিসাবের ভারসাম্য বের করা হয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, চলতি বছরের প্রথম ১০ মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ২ হাজার ৪৫৪ কোটি ডলার। গত বছরের এই সময় শেষে রেমিট্যান্স এসেছিল ১ হাজার ৯১২ কোটি ডলার। অর্থাৎ, রেমিট্যান্সের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৮.৩ শতাংশ; বা গত অর্থবছরের তুলনায় বেশি রেমিট্যান্স এসেছে ৫৪২ কোটি ডলার—চলতি হিসাবের ভারসাম্যের ঘাটতি পূরণের সহায়ক হয়েছে।
আর্থিক হিসাবের উদ্বৃত্ত কমেছে
আলোচ্য সময়ে (জুলাই-এপ্রিল) দেশের লেনদেনের ভারসাম্যের অন্যতম উপাদান আর্থিক হিসাব (ফাইন্যান্সিয়াল একাউন্ট) এর উদ্বৃত্ত কমে ১৯৬ কোটি ডলার হয়েছে। মূলত, বিদেশি বিনিয়োগ ও বিভিন্ন দাতা সংস্থা থেকে সহায়তা আসা কমে যাওয়ায় আর্থিক হিসাবের ভারসাম্যে এই পরিবর্তন এসেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল শেষে দেশের আর্থিক হিসাবের উদ্বৃত্ত ছিল ২২৫ কোটি ডলার, অর্থাৎ চলতি অর্থবছরে উদ্বৃত্ত প্রায় ২৮ কোটি ৬০ লাখ ডলার কমেছে।