লেবাননের সাবেক গভর্নরের ওপর যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য-কানাডার নিষেধাজ্ঞা
গত ফেব্রুয়ারিতে সালামেহর বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ, অর্থপাচার ও করফাঁকির অভিযোগ আনা হয়।
দুর্নীতির অভিযোগে লেবাননের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর রিয়াদ সালামেহর ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও কানাডা।
বৃহস্পতিবার তার ওপর এই ৩ দেশ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বলে আল-জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়।
এতে বলা হয়েছে, ওই ৩ দেশের অভিযোগ, দুর্নীতিমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে লেবাননে আইনের শাসন ভুলুণ্ঠিত করতে ভূমিকা রেখেছেন এবং নিজে ও সহযোগীদের সম্পদশালী করেছেন রিয়াদ সালামেহ।
তবে, দুর্নীতির এই অভিযোগ অস্বীকার করে সালামেহ বলেছেন, তিনি এসব অভিযোগ আইনিভাবে মোকাবিলা করবেন।
সালামেহর বেশ কিছু সম্পদ আগেই জব্দ করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, সাবেক এই গভর্নরের ভাই রাজা সালামেহ ও তার সাবেক সহকারী মারিয়ানে হোয়ায়েকের ওপরও এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে। সালামেহর এক সন্তানের মা আন্না কোসাকোভার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ওয়াশিংটন ও লন্ডন। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র রিয়াদ সালামেহর ছেলে নাদি সালামেহর ওপরও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
নিষেধাজ্ঞা বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘সালামেহ তার ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। বিভিন্ন শেল কোম্পানির মাধ্যমে ইউরোপিয়ান রিয়েল এস্টেটে মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের মাধ্যমে সালামেহ নিজেকে ও সহযোগীদের সম্পদশালী করেছেন, যার মধ্য দিয়ে তিনি লেবাননের আইন লঙ্ঘন করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।’
এই নিষেধাজ্ঞার ফলে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও কানাডায় রিয়াদ সালামেহ ও তার সহযোগীদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হবে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও তাদের লেনদেনে নিষেধাজ্ঞা থাকবে।
কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেলানি জোলি বলেছেন, নিষেধাজ্ঞা এই বার্তা দিচ্ছে যে, যেসব দুর্নীতিমূলক কর্মকাণ্ড লেবাননের অর্থনীতিতে ধস নামিয়েছে, সেগুলো এসব দেশ (যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও কানাডা) বরদাশত করবে না।
১৯৯৩ সাল থেকে লেবাননের গভর্নর হিসেবে ছিলেন রিয়াদ সালামেহ। দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর চলতি বছরের ৩১ জুলাই তিনি গভর্নর পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
গত ফেব্রুয়ারিতে সালামেহর বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ, অর্থপাচার ও করফাঁকির অভিযোগ আনা হয়।
মে’তে ফ্রান্স ও জার্মান কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। একইসঙ্গে ইন্টারপোলের রেড নোটিশে তাকে অর্থপাচারের অভিযোগে উভয় দেশের কাছে ওয়ান্টেড ঘোষণা করে।
গত বছরের মার্চে ফ্রান্স, জার্মানি ও লুক্সেমবার্গ সালামেহর সম্পদের তদন্ত করতে গিয়ে তার ১২০ মিলিয়ন ইউরো (১৩৫ মিলিয়ন ডলার) মূল্যের সম্পদ জব্দ করে।
শিগগিরই প্যারিসে সালামেহর বিচার হবে বলে ইউরোপীয় কূটনৈতিক সূত্রের বরাত দিয়ে আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।