Bangladesh

শান্ত হয়ে আসছে দেশ, গুজব স্থবিরতার নেপথ্যে কারা?

রক্তাক্ত একটি অধ্যায় পেরিয়ে ক্রমশ শান্ত হয়ে আসছে বাংলাদেশ। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার কাজ শুরু করেছে। উপদেষ্টারা অফিস করছেন। সশস্ত্র বাহিনী জনগণের  নিরাপত্তায় কাজ করছে। থানা সক্রিয় হচ্ছে। পুলিশের অনেকে কাজে ফিরেছেন।

তবে দেশে স্থবিরতা কাটেনি। গুজব মেশিন সক্রিয়। মিনিটে মিনিটে নানা গুজব ছড়াচ্ছেন তারা। বিশেষত সোশ্যাল মিডিয়ায়। সূত্রগুলো বলছে, একধরনের অস্থিরতা তৈরির চেষ্টার অংশ হিসেবেই এটা করা হচ্ছে।

প্রশাসন এখনো পুরোমাত্রায় কাজে ফেরেনি। সেখানেও একধরনের শৈথিল্য বহাল রাখার চেষ্টা চলছে। পুলিশ বাহিনীকে নিয়েও নানা ধরনের গুজব ছড়ানো হচ্ছে। যেন তারা পুরোপুরি সক্রিয় না হয়। এর বাইরে ‘সংখ্যালঘু’ ইস্যুটি সামনে আনার চেষ্টা করছেন কেউ কেউ। এ লক্ষ্যে প্রচারণাও চালানো হচ্ছে। ঢাকায় তাদের বড় জমায়েতের চেষ্টা চালাচ্ছে একটি মহল। এ প্রক্রিয়ার নেপথ্যে সুনির্দিষ্টভাবে দুই জন ব্যক্তির নাম শোনা যাচ্ছে। গত সোমবার শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি স্থাপনায় হামলা হয়েছে। আক্রান্ত হয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরাও। তাদের বসত বাড়িতেও হামলা হয়েছে। যেসব আওয়ামী লীগ নেতার বাসায় হামলা হয়েছে তাদের কেউ কেউ হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ। ঢাকার একজন বিশ্লেষক বলেন, দৃশ্যত হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ হিসেবে কারও বাড়িতে হামলা হয়েছে- এমন প্রমাণ পাওয়া যায় না। মূলত আওয়ামী লীগ নেতা হওয়ার কারণেই তাদের বাড়িতে হামলা হয়েছে। তবে এসব হামলার বিরুদ্ধে এরইমধ্যে সামাজিক প্রতিরোধ তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় মাদ্রাসার শিক্ষার্থী, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মী-সমর্থকরা মন্দির পাহারা দিচ্ছেন। ভারতের কংগ্রেস নেতা শশী থারুরের নজরেও বিষয়টি পড়েছে। তিনি যেটা বলেছেন, ভারতীয় মিডিয়ার হামলার খবর আসছে। কিন্তু জনগণের যে তৎপরতা সে খবর আসছে না।

গত ১৪ই জুলাই সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনার একটি মন্তব্য ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। পরদিন ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগ। ১৫ই জুলাই থেকে ৫ই আগস্ট। হঠাৎই বদলে গেছে বাংলাদেশের দৃশ্যপট। প্রাণ দিতে হয়েছে বহু মানুষকে। কতো মানুষ এ ক’দিনে নিহত হয়েছেন তার সুনির্দিষ্ট কোনো হিসাব নেই। কয়েকশ’ মানুষ নিহত হয়েছে। ৫ই আগস্ট শেখ হাসিনা দেশ ত্যাগের পর সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। গণভবন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় কব্জায় নেয় জনতা। লুটপাট চলে সেখানে। এ ছাড়া, ঢাকা থেকে শুরু করে দেশের বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বাড়ি এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা হয়। হামলা হয় থানায় থানায়। সব পুলিশ সদস্য তাদের কর্মস্থল থেকে সরে পড়েন। আধুনিক পৃথিবীতে কোথাও এ ধরনের ঘটনা আগে ঘটেনি বলে জানিয়েছেন এক সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা। মূলত এই অবস্থায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি ঘটে। তবে সেনাবাহিনী তৎপর হয়। বিভিন্ন এলাকায় শিক্ষার্থী-জনতাও সক্রিয় হয়। নিরাপত্তা এবং সড়কে শৃঙ্খলা রক্ষায় জোর তৎপরতা চালাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। রাজনৈতিক দলগুলোও সক্রিয় হয়েছে। বিএনপি’র সহযোগী সংগঠনগুলো হামলায় সম্পৃক্ততার অভিযোগ ওঠায় বেশ কিছু নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে। জামায়াতের শীর্ষ নেতারা মন্দির পরিদর্শনে গেছেন। হিন্দু সম্প্রদায়ের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন। এই অবস্থায় পরিস্থিতি বেশ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। কিন্তু ক্ষমতাচ্যুত সরকার সমর্থিত ব্যক্তিরা বিভিন্নস্থানে বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা করছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো দাবি করছে। প্রশাসন ও পুলিশ যেন পুরোদমে সক্রিয় হতে না পারে সে চেষ্টা তারা করছেন। এমনকি মেট্রোরেলেও অচলাবস্থা বহাল রাখার চেষ্টা চলছে। এ ছাড়া, নানা গুজব ছড়িয়েও তারা সমাজে বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা করছেন। শুক্রবার দিনভর গুজব ছিল একজন ইসলামী বক্তা নিখোঁজ। কিন্তু গতকাল তিনি লাইভে এসে জানান তিনি ঠিক আছেন। চট্টগ্রামেও একটি কিডন্যাপের ভুল খবর ছড়ানো হয়েছে। এক ধরনের ডাকাতির আতঙ্ক তৈরির চেষ্টা চলছে।
বিগত শাসনের সুবিধাভোগী অনেকে এখনো বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়ে গেছেন। তাদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন বাড়ছে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
Toto Slot
slot gacor
slot gacor
slot toto
Bacan4d Login
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot bacan4d
bacan4d togel
bacan4d game
slot gacor
bacan4d login
bacantoto 4d
toto gacor
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
slot77 gacor
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
bacansports
slot toto
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor