শিশুর প্রাণরক্ষাকারী ওষুধ নিয়ে ভয়ংকর জোচ্চুরি
‘রোফাইল্যাক ৩০০’– অন্তঃসত্ত্বার গর্ভস্থ সন্তানের কিছু জটিলতার ক্ষেত্রে সুরক্ষায় ইনজেকশনটি পুশ করার পরামর্শ দেন চিকিৎসক। বিদেশি ইনজেকশনটি আমদানি করে বাংলাদেশের একটি প্রতিষ্ঠান। তবে ওই প্রতিষ্ঠান ছাড়াও এটি বাজারে সরবরাহ করত একটি অসাধু চক্র। ওই চক্রে ৯ সদস্য। তারা ১০ বছর ধরে তৈরি করে আসছিল নকল ওষুধ। রোফাইল্যাক ছাড়াও রয়েছে হেপাটাইটিস বি ভ্যাকসিন, কোনাকিওন এমএম ও অ্যালবুমিন গ্রিফোলস। নকল ওষুধ এতটাই নিখুঁত, সাধারণের পক্ষে তা বোঝা বেশ কঠিন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভয়ংকর ব্যাপার হলো– এসব নকল ওষুধ রোগ নিরাময় তো করেই না, উল্টো জনস্বাস্থ্যের জন্য ভীষণ ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সন্দেহ হওয়ায় তিন মাস আগে বাজার থেকে রোফাইল্যাকের কয়েকটি নমুনা সংগ্রহ করে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। আমদানিকারক ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি (বিডি) লিমিটেডের সহায়তায় মূল ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান সুইজারল্যান্ডের সিএসএল বেরিং-এর কাছে নমুনা পাঠানো হয়। ল্যাবরেটরিতে রাসায়নিক পরীক্ষা ও বিশ্লেষণের পর তারা প্রতিবেদন পাঠায় বাংলাদেশে। তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, তিনটি নমুনাই নকল। সেগুলোয় মূল ওষুধের কোনো উপাদানই নেই; বরং ক্ষতিকর অণুজীবে ভরা।
সম্প্রতি নকল ওষুধ তৈরিতে জড়িত চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ ও আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে উঠে এসেছে জালিয়াতির আদ্যোপান্ত। এর মাধ্যমে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর জানতে পারে, চক্রটি নকল রোফাইল্যাক তৈরি করে আসছিল। তবে প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা রহস্যজনক কারণে এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে রাজি হননি।
ডিবি মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার রাজীব আল মাসুদ বলেন, ওষুধ জালিয়াত চক্রকে ধরতে অনেক দিন ধরেই চেষ্টা চলছিল। সর্বশেষ গত ১৪ নভেম্বর রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও কেরানীগঞ্জে অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলেন– আশফাক আহম্মেদ আলী সুমন, জসিম উদ্দিন ও শুভ বর্মণ। তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলেছে।
শিশুর মৃত্যু ঠেকানোর ওষুধ
ঔষধ প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানান, রক্তে রেসাস ফ্যাক্টর ডি (আরএইচডি) অ্যান্টিজেন থাকলে তাকে বলা হয় আরএইচ পজিটিভ, আর না থাকলে নেগেটিভ। আরএইচ নেগেটিভ রক্তের কোনো নারীর সঙ্গে আরএইচ পজিটিভ পুরুষের বিয়ে হলে তাদের সন্তানের ক্ষেত্রে এটি বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। প্রথম সন্তানের ক্ষেত্রে জটিলতা না হলেও দ্বিতীয়বার গর্ভধারণে সমস্যা দেখা দিতে পারে। ভ্রুণ নষ্ট, গর্ভপাত, বিকলাঙ্গ শিশুর জন্ম, এমনকি জন্মের পরও শিশুর মৃত্যু হতে পারে। এসব সমস্যা এড়াতে অন্তঃসত্ত্বা নারীদের রোফাইল্যাক ইনজেকশন দেওয়া হয়।
সিএসএল বেরিং-এর প্রতিবেদন
সিএসএল বেরিং-এর পাঠানো প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নমুনাগুলো তাদের তৈরি নয়; বরং সম্ভাব্য ক্রেতাদের সঙ্গে প্রতারণার জন্য তৈরি করা হয়েছে। নমুনার তরলের রাসায়নিক বিশ্লেষণে অত্যন্ত উচ্চমাত্রার দূষণকারী অণুজীবের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। এগুলোতে কোনো রোগ প্রতিরোধক উপাদানও পাওয়া যায়নি। এসব নকল পণ্য জনস্বাস্থ্যের জন্য ভীষণ ঝুঁকিপূর্ণ। প্রশাসনকে অবশ্যই নকল ওষুধের বিরুদ্ধে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রতিবেদনের আরেক স্থানে শঙ্কা করা হয়েছে, নকল ইনজেকশন তৈরিতে আসল সিরিঞ্জের আলাদা অংশ ব্যবহৃত হয়েছে। তাই ব্যবহৃত সিরিঞ্জ সঠিকভাবে বিনষ্টের পরামর্শও দেওয়া হয়।
এক ইনজেকশনেই লাভ ৩৯০০ টাকা
ডিবি মতিঝিল বিভাগের সহকারী কমিশনার এরশাদুর রহমান বলেন, জালিয়াত চক্রের সদস্যরা পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালসের তৈরি টিটেনাসের ইনজেকশন টিটি ভ্যাক্স কেনেন। এরপর অন্য কিছু উপাদান মিশিয়ে লেবেল বদলে ও নকল মোড়কে ভরে সেগুলো রোফাইল্যাক হিসেবে সরবরাহ করেন। এতে তাদের তৈরির খরচ পড়ে মাত্র ১০০ টাকা। বিক্রি করা হয় ৪ হাজার ১৫ টাকায়। গ্রেপ্তার জসিম তাঁর জবানবন্দিতে চক্রের আরও ছয়জনের নাম বলেছেন। তারা নকল ওষুধ তৈরির কাঁচামাল সরবরাহ, মোড়ক ছাপানো, প্যাকেজিংসহ অন্য কাজগুলো করেন। তাদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।
তদন্ত-সংশ্লিষ্টরা জানান, জসিম নকল হেপাটাইটিস বি ভ্যাকসিন সরবরাহের জন্যও পরিচিত। অনেক ব্যবসায়ী জেনেবুঝে তাঁর কাছ থেকে নকল ওষুধ নেন। চক্রটি ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালসের তৈরি কেএমএম ইনজেকশন কিনে কিছু উপাদান মিশিয়ে ও মোড়ক-লেবেল বদলে ফ্রান্সের তৈরি কোনাকিওন হিসেবে বিক্রি করত। এ ওষুধটি শিশুদের জন্ডিস ও ভিটামিন কে-এর ঘাটতি রোধে ব্যবহার করা হয়। ভারতের তৈরি অ্যালবুমিন ইনজেকশন কিনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি অ্যালবুমিন গ্রিফোলস হিসেবে লেবেল সেঁটে বিক্রি করা হতো। এটি কিডনি রোগীর ডায়ালাইসিসে ব্যবহৃত হয়।
১০ বছর ধরে নকলের কারবার
তদন্ত সূত্র জানায়, ১০ বছর ধরে নকল ওষুধ তৈরি করে ঢাকার মিটফোর্ড মার্কেট ও শাহবাগের ওষুধের দোকানে সরবরাহ করছিল চক্রটি। করোনার সময় বহুল ব্যবহৃত একটি ওষুধও তারা নকল করেছে। ফার্মেসি মালিকরা চাহিদা জানালে তারা রাতারাতি সেই পরিমাণ ওষুধ তৈরি করে দেয়। এজন্য আগে থেকেই সব উপাদান মজুত থাকে। চক্রটিকে ধরতে গোয়েন্দারা ক্রেতা সেজে ১০০ পিস নকল ওষুধ চান। এক রাতেই তারা সেগুলো তৈরি করে ফেলে। এ চক্রে সব সময় একই সদস্য থাকে না। দলের হোতা গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে গেলে আরেকজন দায়িত্ব নিয়ে কারবার শুরু করে।
প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন, সমিতির ভেতর ‘ঘাপলা’
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মুখপাত্র উপপরিচালক নুরুল আলম বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই। ডিবির অভিযানের ব্যাপারে তারাই ভালো বলতে পারবে।’
ডিবির অভিযান নয়, বরং নকল ওষুধ ঠেকাতে তাঁর প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা জানতে চাওয়া হচ্ছে– এমনটা জানালে তিনি বলেন, ‘আমি কোনো তথ্য দিতে পারব না।’
প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক মো. সালাহউদ্দিনসহ দুই কর্মকর্তা এ প্রসঙ্গে কথা বলতে চাননি।
বাংলাদেশ কেমিস্টস্ অ্যান্ড ড্রাগিস্টস্ সমিতির সভাপতি শাহজালাল বাচ্চুকে বারবার ফোন করে, পরে মেসেজ পাঠিয়েও সাড়া মেলেনি। তবে সমিতির পরিচালক জাকির হোসেন রনি বলেন, নকল ওষুধ বন্ধে অনেক দিন থেকেই পদক্ষেপ নেওয়ার চেষ্টা চলছে। কিন্তু সমিতির ভেতরেও কেউ কেউ জালিয়াত চক্রকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তা ছাড়া ২০১৭ সালে একটি টাস্কফোর্স গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। সেটি এখনও বাস্তবায়ন হয়নি।
It’s hard to come by educated people about this topic, however, you seem like you know what
you’re talking about! Thanks
Your style is unique compared to other folks I have read
stuff from. I appreciate you for posting when you have
the opportunity, Guess I’ll just bookmark this page.
Hi friends, how is everything, and what you wish for to say about this paragraph, in my view its really awesome designed for me.
Please let me know if you’re looking for a
author for your blog. You have some really
great articles and I believe I would be a good asset.
If you ever want to take some of the load off, I’d love
to write some articles for your blog in exchange for a link back to mine.
Please shoot me an e-mail if interested. Kudos!
Paragraph writing is also a fun, if you be familiar with then you can write if not it is difficult to write.
I blog quite often and I really thank you for your information. This great article has truly peaked my interest.
I will bookmark your website and keep checking for new details about once a week.
I opted in for your RSS feed as well.
My family members every time say that I am wasting my time here
at net, except I know I am getting experience daily by reading such good articles.
After going over a few of the blog posts on your site,
I really appreciate your technique of blogging.
I saved as a favorite it to my bookmark website list and will be checking back
soon. Take a look at my web site too and let me know how
you feel.