Bangladesh

শীর্ষ সন্ত্রাসীদের ধরতে আরো কঠোর হচ্ছে সেনাবাহিনী

গা-ঢাকা দিচ্ছে দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসীরা, দেশ ছাড়ার পরিকল্পনা

ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসীরা অনেকে সেনা অভিযান টের পেয়ে গা-ঢাকা দিয়েছে। কেউ কেউ ছদ্মবেশ ধারণ করে গ্রেফতার এড়ানোর চেষ্টা করছে।

দেশের শীর্ষ দুই ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন ও মোল্লা মাসুদকে সম্প্রতি গ্রেফতার করে সেনাবাহিনী। একই দিন মোহাম্মদপুর এলাকার সন্ত্রাসী ও কিশোর গ্যাংয়ের গডফাদার বাবুকে গ্রেফতার করার পর রাজধানীসহ সারা দেশে সন্ত্রাসী গডফাদারদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। তারা রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের টার্গেট কিলিংসহ দেশকে অস্থিতিশীল করতে পরিকল্পিত মিশন বাস্তবায়নের জন্য অত্যাধুনিক অস্ত্র এবং স্যাটেলাইট ফোন ব্যবহার করছে।

সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজদের ধরতে আরো কঠোর অবস্থান নিয়ে অভিযানে নেমেছে তারা। একের পর এক চিহ্নিত ভয়ানক সন্ত্রাসী গ্রেফতারের ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে ধীরে ধীরে স্বস্তি ফিরছে। বিভিন্ন পর্যায়ে আলাপকালে এসব তথ্য জানা গেছে।

সেনাবাহিনী সূত্র জানায়, চিহ্নিত সন্ত্রাসী বা অপরাধী, অস্ত্রবাজ ও সামাজিক বিশৃঙ্খলাকারী এবং গুজবকারীদের ধরতে নিয়মিত সাঁড়াশি অভিযান চলছে। গত কয়েক দিনে দু’জন শীর্ষ সন্ত্রাসীসহ বেশ কিছু চিহ্নিত দুর্ধর্ষ অপরাধীকে আটক করেছে সেনাবাহিনী। যার ফলে ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসীরা অনেকে সেনা অভিযান টের পেয়ে গা-ঢাকা দিয়েছে। কেউ কেউ ছদ্মবেশ ধারণ করে গ্রেফতার এড়ানোর চেষ্টা করছে। কেউ কেউ আবার দেশের বাইরে পালানোরও সুযোগ খুঁজছে বলে জানা গেছে।

অপরাধ বিশেষজ্ঞ ও নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী শান্তি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে অনন্য ভূমিকা পালন করে থাকে, তেমনি অপরাধ দমনেও তারা পরীক্ষিত বা দক্ষ। কোথায় কিভাবে কী করতে হবে, তা উচ্চপ্রশিক্ষিত সেনাবাহিনী ভালোভাবেই জানে। কাজেই চিহ্নিত সন্ত্রাসী বা যারা সমাজকে অরাজকতার দিকে নিয়ে যাবে, তাদের জন্য সেনাবাহিনীর কঠোর পদক্ষেপ নেয়াটাই স্বাভাবিক। কারণ সাধারণ মানুষের ভরসার প্রধান জায়গায় রয়েছে সেনাবাহিনী।

গতকাল বরিশাল থেকে ঢাকায় আসা কলেজশিক্ষার্থী আল আমিন ও তার তিন বন্ধু জানান, সম্প্রতি ঢাকায় ছিনতাইকারীদের যে উৎপাত দেখেছি তাতে ঢাকায় আসতেও ভয় হয়। আমরা তিন বন্ধু ঢাকায় এসেছি অনার্সের ভর্তি পরীক্ষার জন্য। তিনি বলেন, সেনাবাহিনীর অভিযানে চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের খবর শুনে খুব ভালো লাগছে। শীর্ষ যে দুই সন্ত্রাসীকে সেনাবাহিনী গ্রেফতার করেছে তাদের নাম শুনেছি। কিন্তু কখনো দেখিনি। সেদিন মিডিয়ায় তাদের দেখার পর বাবা-মা বলেছেন তারা ছিল ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী। দিন-দুপুরেই তারা মানুষকে হত্যা করত। আল আমিন ও তার তিন বন্ধু বলেন, মাঝখানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এতটা খারাপ দেখছিলাম, দিনে-দুপুরে কুপিয়ে ছিনতাই হচ্ছে, প্রকাশ্যে গুলি করে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে, সেখানে শীর্ষ সন্ত্রাসীসহ চিহ্নিত দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী এবং ছিনতাইকারীদের গ্রেফতারের বিষয়টি খুবই ইতিবাচক। আমাদের মতো সাধারণ মানুষের মনে সেনাবাহিনীর কঠোর অভিযান একধরনের স্বস্তি এনেছে। এ ছাড়া সামনে ঈদুল আজহায় অনেকেই ঢাকা ছেড়ে গ্রামে যাবেন। এই যে যাতায়াত, ফাঁকা ঢাকার নিরাপত্তা বা চলাফেরায় যে ঝুঁকি আমাদের উদ্বেগ বাড়ায়, সেখানে সেনাবাহিনীর কঠোর পদক্ষেপ বা সাঁড়াশি অভিযানকে সাধারণ মানুষ খুবই ভালোভাবে নিচ্ছেন। ঈদে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা যাতে না ঘটে সেদিকে সেনাবাহিনীর অভিযানকে আরো ত্বরান্বিত করা উচিত বলে তারা মন্তব্য করেন।

মতিঝিলে অটোচালক রিকশা চালক সাইদুর রহমান বলেন, তার বাড়ি উত্তরাঞ্চলের কুড়িগ্রামে। তিনি গত বছরের শুরুতে ঢাকায় আসেন। তিনি বলেন, ৫ আগস্টের পর সন্ত্রাসী ও ছিনতাইকারী যে যেভাবে পেয়েছে মারধর করে ঢাকা পয়সা সব ছিনিয়ে নিয়েছে। মতিঝিল এলাকায় বন্ধের দিন সন্ধ্যার পরই চলতো সন্ত্রাসীদের তাণ্ডব। তিনি বলেন, আমরা গরিব মানুষ, হয়তো আমাদের কথার দাম নেই। কিন্তু আমরাও অনেক কিছু বুঝি। দিন-রাত বিভিন্ন এলাকায় চলাচল করি, বিভিন্ন মহল্লায় যেতে হয়। যেসব ঘটনা দেখি বা শুনি তাতে অনেক সময় ভয়ও লাগে। তবে সেনাবাহিনী যখন বেশি অ্যাকশনে থাকে, তখন আমরা শান্তিতে থাকি। ভয় লাগে না। শুনলাম দুইডা শীর্ষ সন্ত্রাসীকে (সুব্রত বাইন ও মোল্লা মাসুদ) সেনাবাহিনী ধরে ফেলছে। আরো কয়েকটারে ধরার খবর মিডিয়াতে দেখছি। এইবার সন্ত্রাসীরা বুঝব। সেনাবাহিনীর ঠেলা সামলাক।

গত বৃহস্পতিবার রাতে টঙ্গীর কুখ্যাত মাদককারবারি রামরাজ ও তার স্ত্রীকে টঙ্গীবাজারে দেশীয় মদসহ আটক করা হয়। টঙ্গীর সবকটি বস্তি রামরাজের গোডাউন থেকে মদ সরবরাহ করা হয়। এসব বিষাক্ত মদ পান করে অনেকের মৃত্যু হলেও রামরাজকে গ্রেফতারে ব্যর্থ হয় অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। টঙ্গীর বাসিন্দারা বলেন, সন্ধ্যা হলেই রামরাজের বাসার সামনে মাতলামি শুরু হয়। নারী-শিশুদের সামনেই মদ পান করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। সেনাবাহিনীর অভিযানের কারণে অন্তত টঙ্গীবাসী স্বস্তিতে রয়েছে।

কয়েকটি ঘটনা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় তৎপর হয়েছে চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা। কোথাও কোথাও মব ভায়োলেন্স বা নৃশংস নানা ঘটনা ঘটতে দেখা যায়। এতে ঘটছে খুনোখুনিসহ সশস্ত্র হামলার ঘটনা। গত নভেম্বর মাস থেকে গত এপ্রিল মাস পর্যন্ত শুধু রাজধানীতেই খুনের ঘটনা ঘটেছে ১৩৯টি। ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে ৩৬টি। দস্যুতা ২৪৩টি এবং চুরির ঘটনা ঘটেছে ১০২৮টি।

এ ছাড়াও গত দুই মাসে রাজধানীতে তিনটি খুনের নেপথ্যেও শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন ও মোল্লা মাসুদের নাম আসে বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে জানা যায়। সর্বশেষ গত রোববার রাতে বাড্ডার গুদারাঘাট এলাকায় বিএনপি নেতা কামরুল আহসানকে গুলি করে হত্যা করা হয়।

গত ১৯ এপ্রিল হাতিরঝিলে ওয়ার্ড যুবদলের সদস্য আরিফ শিকদারকে গুলি ও ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। তার আগে এলিফ্যান্ট রোডের মাল্টিপ্ল্যান সেন্টারের ব্যবসায়ীসহ কয়েকজনকে গুলি করাসহ বেশ কিছু ঘটনায় শীর্ষ সন্ত্রাসীদের নাম উঠে আসে। এসব হত্যাকাণ্ড বা গোলাগুলির নেপথ্যে সুব্রত বাইন, মোল্লা মাসুদ, পিচ্চি হেলাল, ইমন, কিলার আব্বাস, টিটন, ফ্রিডম রাসু, ‘এক্সেল’ বাবুসহ এমন অনেকের নাম চলে আসে। যাদের বেশির ভাগই গত ৫ আগস্টের পর জামিনে মুক্ত হন। কিন্তু জামিনে বেরিয়েও তারা ফের অপরাধ জগৎ নিয়ন্ত্রণে মরিয়া হয়ে ওঠেন বলে জানিয়েছেন গোয়েন্দারা। মগবাজার, মতিঝিল, বাড্ডা, গুলশানসহ রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় এসব সন্ত্রাসীর তৎপরতা দেখেছেন স্থানীয়রা।

এ পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনীও কঠোর অবস্থানে যায়। গত ২০ মে রাজধানীর ভাসানটেক এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে চারটি বিদেশী পিস্তল, ২৮ রাউন্ড গুলিসহ স্থানীয় শীর্ষ সন্ত্রাসী হিটলু বাবুসহ তার গ্যাংয়ের ১০ সদস্যকে গ্রেফতার করে সেনাবাহিনী। এরপর গত মঙ্গলবার কুষ্টিয়া শহরের একটি বাসা থেকে শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন, মোল্লা মাসুদসহ চারজনকে গ্রেফতার করে সেনাবাহিনী। একই দিনে মোহাম্মদপুরের ত্রাস ও আলোচিত শীর্ষ সন্ত্রাসী ‘এক্সেল’ বাবুকেও গ্রেফতার করেছে সেনাবাহিনী।

এ বিষয়ে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. উমর ফারুক বলেন, শীর্ষ সন্ত্রাসীদের মতো দুর্ধর্ষ অপরাধীদের গ্রেফতারের বিষয়টি সত্যিকার অর্থেই খুবই প্রশংসার দাবি রাখে। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার স্বার্থে এই ধরনের অভিযান সেনাবাহিনীকে অব্যাহত রাখতে হবে। কিন্তু সবচেয়ে বেশি খেয়াল রাখতে হবে, যাতে গ্রেফতারের পর এসব চিহ্নিত বা দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী জামিনে মুক্তি না পায়। আইনের নানা ব্যাখ্যায় যাতে ওই সন্ত্রাসীদের বের হওয়ার সুযোগ দেয়া না হয়।

এ প্রসঙ্গে নিরাপত্তা বিশ্লেষক বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের সভাপতি মেজর জেনারেল (অব:) আ ন ম মুনীরুজ্জামান নয়া দিগন্তকে বলেন, চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যেভাবে অভিযান চালানো হচ্ছে, সেটা সেনাবাহিনীর জন্য প্রশংসনীয় পদক্ষেপ। দীর্ঘ প্রায় ১০ মাস ধরে সেনাবাহিনী মাঠে আছে, নিরলসভাবে কাজ করছে, অথচ এটা সেনাবাহিনীর নিয়মিত কাজ নয়। তারপরও সেনাবাহিনী যেভাবে অপরাধ ও অপরাধীদের বিরুদ্ধে কাজ করছে, সেটা সত্যি প্রশংসনীয়। এতে করে খুব স্বাভাবিকভাবেই আইনশৃঙ্খলার একটি স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরে আসবে। সাধারণ মানুষও ভয়হীন পরিবেশ পাবে।

এ প্রসঙ্গে মানবাধিকারকর্মী ও সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, বিচারব্যবস্থা বা আইনের দুর্বলতার কারণে চিহ্নিত সন্ত্রাসী বা দুর্ধর্ষ অপরাধীরাও সহজে জামিন পেয়ে যায়। তারা এই সুবিধা পাওয়ার কারণে বাইরে গিয়ে আবার একই ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ঘটাচ্ছে। এই চিত্র আমরা দীর্ঘদিন ধরেই দেখে আসছি। তবে ৫ আগস্টের পর সেটি আরো ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। তিনি বলেন, আইনজীবীরা যে কারো (আসামি বা বন্দী) বিষয়েই আদালতে আবেদন জানাতে পারেন। কিন্তু জামিন বা মুক্তির বিষয়টি সম্পূর্ণ আদালতের এখতিয়ার। কিন্তু সেখানেও সবকিছু যথাযথভাবে হচ্ছে না। আদালত অঙ্গনেও মব ভায়োলেন্স হচ্ছে। মব করে বিচারকদের বাধ্য বা প্রভাবিত করা হচ্ছে। এগুলো বন্ধ হওয়া জরুরি।

এদিকে গত সোমবার সেনাবাহিনীর আনুষ্ঠানিক ব্রিফিংয়ে সেনা সদরের অপারেশনস পরিদফতরের কর্নেল স্টাফ মো: শফিকুল ইসলাম বলেছেন, ‘ভবিষ্যতের দিনগুলোতে জানমালের ক্ষতিসাধন, মব ভায়োলেন্স ও জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করতে পারে এমন কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনী আরো কঠোর পদক্ষেপ নেবে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী একতাবদ্ধ হয়ে সর্বদা দেশের জনসাধারণের পাশে থেকে সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বদ্ধপরিকর।

কর্নেল মো: শফিকুল ইসলাম গত সোমবারের ব্রিফিংয়ে জানান, গত ৪০ দিনে (সোমবার পর্যন্ত) সেনাবাহিনী ২৪১টি অবৈধ অস্ত্র ও ৭০৯ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে। অন্যদিকে গত বছরের আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত (সোমবার) সর্বমোট ৯৬১টি অবৈধ অস্ত্র ও দুই লাখ ৮৫ হাজার ৭৬১ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া গত এক মাসে বিভিন্ন ধরনের অপরাধের সাথে জড়িত এক হাজার ৯৬৯ জনকে গ্রেফতার করা হয় এবং আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত মোট ১৪ হাজার ২৬৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
Toto Slot
slot gacor
slot gacor
slot toto
Bacan4d Login
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot bacan4d
bacan4d togel
bacan4d game
slot gacor
bacan4d login
bacantoto 4d
toto gacor
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
slot77 gacor
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
bacansports
slot toto
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d