Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
Trending

শুধু শিল্প নয়, উদ্যোক্তাদেরও মেরে ফেলা হচ্ছে

  • শিল্প বাঁচাতে না পারলে দুর্ভিক্ষের মতো অবস্থা হবে
  • আট মাসে এক টাকার বিনিয়োগও আসেনি

১৯৭১ সালে খুঁজে খুঁজে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয়েছে, আর ২০২৫ সালে শুধু শিল্প নয়, শিল্পোদ্যোক্তাদের মেরে ফেলা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বস্ত্রকলের মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল। তিনি বলেন, ‘এটাকে আমরা ষড়যন্ত্র মনে করি।’ শিল্প বাঁচাতে না পারলে দেশে দুর্ভিক্ষ হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

ঢাকার গুলশান ক্লাবে গতকাল রবিবার এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বিটিএমএ সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল।

চলমান বিদ্যুত্ ও জ্বালানি সংকট নিয়ে আয়োজিত এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। সম্মেলনে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, এলএফএমইএবি, বিসিআই ও আইসিসি-বাংলাদেশের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।

শওকত আজিজ রাসেল বলেন, ‘আমাদের উপদেষ্টা সাহেবরা মনে হয় উটপাখির মতো হয়ে গেছেন। চারদিকে কী হচ্ছে মনে হয় তাঁরা দেখতে পাচ্ছেন না।

প্রতিনিয়ত আমাদের কারখানা লে-অফ হচ্ছে। কিছুদিন পর মানুষ রাস্তায় নামবে। আরো ভয়াবহ পরিস্থিতি হবে। দুর্ভিক্ষের মতো অবস্থা হবে, যদি আপনি শিল্পকে বাঁচাতে না পারেন।

বিটিএমএ সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল বলেন, ‘আমরা তো গ্যাস বিল দিই, তাহলে গ্যাস আসবে না কেন। কারণ আমরা তো গ্যাসের ওপর নির্ভর করেই ইন্ডাস্ট্রি করেছি। এখন ব্যাংক চাচ্ছে ব্যাংকের টাকা দ্রুত ফেরত দাও, কিন্তু কারখানা তো চলে না, আমি কোথা থেকে টাকা এনে দেব। ব্যাংকঋণের সুদ এত বেশি কেন? আর কত জুলুম হবে আমাদের ওপর। শিল্প না বাঁচাতে পারলে দুর্ভিক্ষ হয়ে যাবে।’

আলোচনায় বক্তারা আরো বলেন, বিপুল পরিমাণ গ্যাস বিল দিতে হলেও পর্যাপ্ত গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে না। এগুলো শিল্প ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র। উদ্যোক্তাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। আর টিকে থাকার উপায় নেই বলে মন্তব্য করেছেন তাঁরা।

তাঁরা বলেন, ৬০ শতাংশের বেশি উত্পাদন হচ্ছে না। ব্যাংকে সুদ বেড়েছে, গ্যাস নেই। আইন-শৃঙ্খলার অবনতি। এনবিআরে অবরোধ—সব মিলিয়ে শিল্প বন্ধ হওয়ার পথে। তাঁরা বলেন, ‘শিল্প বন্ধ হলে সরকারকে এই দায় নিতে হবে। ব্যবসায়ীরা বলেন, এদিকে শিল্প চালাতে সহায়তা করছে না, অন্যদিকে  সময় বেঁধে দিয়ে বেতন দেওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আর দেশি উদ্যোক্তাদের জিন্দা লাশ বানিয়ে বিদেশি বিনিয়োগ এনে কর্মসংস্থান করার চিন্তা করা হচ্ছে।’

আট মাসে এক টাকার বিনিয়োগও আসেনি উল্লেখ করে বিটিএমএ সভাপতি আরো বলেন, বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-বিডা বড় বড় বিনিয়োগের কথা বলে, সরকার টু সরকার আলোচনা হলেও দৃশ্যমান কিছু নেই, কারণ এখানে ব্যবসায় খরচ অনেক বেশি। তাই তারা আসবে না। এ ছাড়া এখানে বিনিয়োগ করে উত্পাদনে যেতেও পাঁচ বছর লাগবে।

সরকারের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে তিনি আরো বলেন, কিছুদিন আগে বই ছাপানোর নামে ১০ হাজার টন কাগজ নিয়ে আসা হয়েছে। যখন কাগজ দেশে পৌঁছেছে তখন বই ছাপানো শেষ। সেই পেপারের এখনো ডিউটিও দেয়নি। পোর্ট ডেমারেজও দেওয়া হয়নি। সেটা এখন খোলাবাজারে বিক্রি হচ্ছে। এতে আমাদের স্থানীয় শিল্প হুমকির মুখে পড়ছে। নতুন করে আরো ৩০ হাজার টন কাগজ আমদানি করা হচ্ছে ডিউটি ফ্রি ও ডেমারেজ ফ্রিতে। সরকার নিজেই স্থানীয় কাগজ কলগুলোকে গলা টিপে মেরে ফেলছে। চিনিকল থাকার পরও চিনি আমদানি করা হচ্ছে, যা স্থানীয় শিল্পবিরোধী নীতি।

বিসিআইয়ের সভাপতি আনোয়ার উল আলম চৌধুরী পারভেজ বলেন, ‘ব্যাংকঋণের সুদের হার বেড়ে গেছে। গ্যাস সংকটের কারণে ৬০ শতাংশের বেশি উত্পাদন হচ্ছে না কারখানায়। তিন মাস সুদ না দিলেই ঋণখেলাপি করছে ব্যাংক। আবার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বেতন পরিশোধের ধমক দিচ্ছে সরকার।’

কর্মসংস্থান ঝুঁকিতে পড়বে উল্লেখ করে আনোয়ারুল আজিম চৌধুরী পারভেজ বলেন, অর্থনীতি যদি ঠিক না থাকে, বিদ্যমান শিল্প রক্ষা করা না গেলে যে চলমান কারখানায় শ্রমিকরা কাজ করছেন তাঁরা যদি কর্মহীন হয়ে পড়েন, তাহলে দেশের অস্তিত্ব সংকটে পড়বে বলে আশঙ্কা করেন তিনি। 

বাংলাদেশ টেরি টাওয়েল অ্যান্ড লিলেন ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিটিএলএমইএ) চেয়ারম্যান হোসেন মেহমুদ বলেন, ‘গ্যাসের অভাবে এরই মধ্যে পাঁচ-ছয়টি কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। এই সমস্যা সমাধান করতে না পারলে সামনে আরো ভয়াবহ পরিস্থিতি অপেক্ষা করছে।’

তিনি আরো বলেন, সব দোষ কী শুধু ব্যবসায়ীদের। সরকার গ্যাস-বিদ্যুত্ দিতে পারছে না, এটা কি দোষ নয়? গ্যাসসংকট মোকাবেলায় এখন থেকে কূপ খননে নজর দেওয়া উচিত মন্তব্য করে রাজীব বলেন, তা না হলে আগামী পাঁচ-ছয় বছরের মধ্যে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হবে। ভোলার গ্যাস ঢাকায় আনতে পাইপলাইন স্থাপন ও সমুদ্রে অফশোর গ্যাসকূপ খননে মনোযোগী হতে হবে। কয়লা উত্তোলনে নীতি প্রণয়ন করতে হবে। কারণ কয়লার জন্য রামপাল বিদ্যুত্ কেন্দ্র চলে না। অথচ কয়লা মাটির নিচে পড়ে আছে। পরিবেশের প্রভাব পর্যালোচনা করে এ ব্যাপারে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

বিটিএমএ  পরিচালক খোরশেদ আলম বলেন, ‘সরকার কী টেক্সটাইল শিল্প বাঁচিয়ে রাখতে চায়, নাকি পাট ও চিনিশিল্পের মতো অন্যরা হাতিয়ে নিতে চায়, তা বুঝতে পারছি না। গ্যাস না থাকলেও অদ্ভূত বিল করা হচ্ছে।’

বিটিএমএর সহসভাপতি সালেহ-উদ-জামান খান বলেন, ‘গ্যাসসংকটের কারণে কারখানায় দিনের বেশির ভাগ সময় উত্পাদন বন্ধ থাকছে। অথচ আমার কারখানায় প্রতিদিন বেতন আসে ৬০ লাখ টাকা। শ্রমিকরা শুয়ে-বসে সময় কাটিয়ে বাড়িতে চলে যাচ্ছে। গত পাঁচ-ছয় মাস যাবত্ শ্রমিকদের বসিয়ে বসিয়ে বেতন দিচ্ছি। তার ওপর ‘পালস মিসিং’-এর নামে গ্যাস কম্পানিগুলো অনেক বিল নিয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশের শিল্পমালিকরা আগামী দিনে কিভাবে টিকে থাকবেন। যে অবস্থা চলছে আগামী দিনে কেউ আর ব্যবসায়ী হতে চাইবেন না।’

তিনি আরো বলেন, ১৯৭১ সালে বুদ্ধিজীবীদের খুঁজে খুঁজে মারা হয়েছে, ভবিষ্যত্ নষ্ট করার জন্য। আর আজ গ্যাস-বিদ্যুতের সাপ্লাই বন্ধ করে দিয়ে শিল্পোদ্যোক্তাদের মেরে ফেলা হচ্ছে। গ্যাস-বিদ্যুতের সংকট চলমান থাকলে আগামী এক-দুই মাসের মধ্যে অর্ধেক কারখানা শাটডাউন হয়ে যাবে।

বিটিএমএ সহসভাপতি সালেহ-উদ-জামান খান বলেন, যেভাবে চলছে এভাবে চললে আগামী এক-দুই মাসের মধ্যে দেশের ৫০ শতাংশ ফ্যাক্টরি বন্ধ হয়ে যাবে। সরকার বলে দিচ্ছে ৭ তারিখের মধ্যে শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন দিতে হবে। না হলে অ্যাকশনে যাবে। তাহলে একজন শিল্প মালিক যদি তাঁর শ্রমিক কাজ না-ও করে প্রতি মাসে ১৫ কোটি টাকা দিতে হয়। তাহলে আমার মতো ফ্যাক্টরির মালিক কোথা থেকে তা দেবেন। আমার ফ্যাক্টরি গত পাঁচ থেকে ছয় মাস যাবত্ শ্রমিকদের বসিয়ে বসিয়ে বেতন দিচ্ছি। গ্যাস কম্পানিগুলো গ্যাস সাপ্লাই না করে বিল নিচ্ছে। ফ্যাক্টরিতে ১০ কোটি টাকা গ্যাস বিল দিতে হচ্ছে গ্যাস ব্যবহার না করে। আমরা জানতে চাই, কিভাবে বাংলাদেশের শিল্প ও মালিকরা টিকে থাকবেন। আপনার কাছে যদি টাকা থাকে হয়তো বাপের জায়গা বিক্রি করে ভবিষ্যতে ব্যবসায়ী হতে পারবেন। কিন্তু আজকে যে শিল্প মালিকরা মারা যাবেন। বাংলাদেশে শিল্প-মালিক উদ্যোক্তা কিন্তু আর হবে না?’

সালেহ-উদ-জামান খান বলেন, ‘ব্যাংকের সুদের হার আজকে ১৪ থেকে ১৫ শতাংশ। যে জায়গায় আগে আমরা ২ থেকে ৩ শতাংশ দিতাম। তাহলে আপনারাই বলেন, কিভাবে একটা শিল্পমালিক বাঁচবে। যদি এভাবে চলতে থাকে আমি মনে করি, আগামী এক-দুই মাসের মধ্যে দেশের ৫০ শতাংশ ফ্যাক্টরি বন্ধ হয়ে যাবে। তা আর জীবনে খোলা হবে না।’

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacantoto4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d toto
slot toto
bacan4d
bacan4d
togel online
Toto Slot
saraslot88
Bacan4d Login
bacantoto
Bacan4d Login
bacan4d
bacan4drtp
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot maxwin
slot bacan4d
slot maxwin
bacan4d togel
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d login
bacantoto 4d
slot gacor
bacansport
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot77 gacor
JAVHD
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
gacor slot
slot gacor777
slot gacor bacan4d
bacan4d
bacansport
toto gacor
bacan4d
bacansports login
slot maxwin
slot dana
slot gacor
slot dana
slot gacor
bacansports
bacansport
bacansport
bacansport
bawan4d
bacansports
bacansport
slot gacor
judi bola
slot maxwin
slot maxwin
bacansport
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot demo
slot gacor
slot gacor
slot gacor
toto slot
slot gacor
demo slot gacor
slot maxwin
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot toto