Bangladesh

শুল্ক কমানোর প্রভাব নেই বাজারে, উলটো বাড়ছে বিভিন্ন পণ্যের দাম

পণ্যের দাম কমাতে, এলসি মার্জিন শিথিল ও আমদানি শুল্ক কমানোসহ একাধিক উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। পাশাপাশি বাজারে বাড়ানো হয়েছে তদারকি। তারপরও কমছে না নিত্যপণ্যের দাম। কারণ প্রতিবছরের মতো এবারও আসন্ন রমজান ঘিরে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট অতি মুনাফার ছক তৈরি করেছে। 

তারা কারসাজি করে রোজার ৩ মাস আগ থেকেই (গত বছরের ডিসেম্বর) বাড়াচ্ছে দাম। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে চাঁদাবাজি। পণ্যবোঝাই যানবাহন থেকে ঘাটে ঘাটে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি নিয়ে জাতীয় সংসদে আলোচনা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে এ নিয়ে কথা বলেছেন, দিয়েছেন নির্দেশনা। 

ব্যবসায়ীরা একই বিষয়ে কথা বলছেন। তারা ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করছেন মূল্যবৃদ্ধির। প্রায় সর্বত্র পণ্যমূল্য নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি পদক্ষেপ নেওয়া হলেও তেমন কাজ হচ্ছে না। দাম খুব বেশি কমছে না, উলটো বেড়েই চলেছে।

ছক অনুযায়ী সিন্ডিকেট গত কয়েক মাসে ধীরে ধীরে পণ্যের দাম বাড়িয়ে চলেছে। রোজার আগে এই বৃদ্ধি বিশেষভাবে নজর কেড়েছে সবার। এরপর থেকে সিন্ডিকেটে হাত না দিয়ে পণ্যমূল্য কমাতে নানা ধরনের উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। কিন্তু সেগুলো খুব বেশি কাজে আসছে না বলে জানান ক্রেতা ও বিক্রেতারা। খুচরা বিক্রেতারা বলেন প্রতি কেজি ছোলা নভেম্বরের তুলনায় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ২৫ টাকা বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। ১৩৫ টাকা কেজির চিনি এখন সর্বোচ্চ ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মসুর ডাল কিনতে ক্রেতার গুনতে হচ্ছে ১৪০ টাকা, যা ১৩০ টাকা ছিল। এছাড়া পেঁয়াজের কেজি এখনো ১২৫ টাকা। বাড়তি মাছ-মাংসের দামও। ফলে রোজার আগেই ক্রেতাদের দুশ্চিন্তা বাড়ছে।

বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, বছরের পর বছর এমন অবস্থা চললেও সরকারের একাধিক সংস্থা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না। শুধু হাঁকডাকের মধ্যেই তাদের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রেখেছে। এতে বাজারে ক্রেতাসাধারণ প্রতারিত হচ্ছেন। আর এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বছরে কয়েক দফায় ভোক্তার পকেট কাটছে সেই চিহ্নিত সিন্ডিকেট সদস্যরা। তারা হাতিয়ে নিচ্ছে হাজার কোটি টাকা।

বুধবার সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেষ হাসিনা বলেছেন, রোজায় দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখার জন্য নিত্যপণ্যের পর্যাপ্ত জোগানের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন পাইকারি ও খুচরা বাজার নিয়মিত পরিদর্শন করে দ্রব্যমূল্য ও পণ্য মজুত এবং সরবরাহ পরিস্থিতি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। কোনো ধরনের অস্বাভাবিক পরিস্থিতি দেখা গেলে তাৎক্ষণিকভাবে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে। 

এছাড়া দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখতে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ঢাকা মহানগরীসহ সারা দেশে বাজার মনিটরিং কার্যক্রম পরিচালনা করছে। দ্রব্যমূল্য যৌক্তিক পর্যায়ে রাখতে সারা দেশে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের নেতৃত্বে জেলা-উপজেলায় গঠিত টাস্কফোর্স নিয়মিত সভা করে থাকে। ওই টাস্কফোর্স বাজারে নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনাসহ বাজার নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে।

বুধবার ব্যবসায়ীদের সংগঠন এফবিসিসিআই আয়োজিত এক সভায় কাওরান বাজার পাইকারি কাঁচাবাজার ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুজন চৌধুরী বলেন, পণ্যবোঝাই ট্রাক ঢাকায় আনতে পথে পথে চাঁদা দিতে হয়। এই চাঁদা দেওয়ার কারণে ট্রাক ভাড়া বাড়ে। আর ট্রাক ভাড়া বাড়ার প্রভাব পণ্যের ওপরে পড়ে। সড়কে চাঁদাবাজির কথা তুলে ধরে এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক সৈয়দ মো. বখতিয়ার বলেন, রাস্তায় পুলিশ চাঁদাবাজি করে, শ্রমিক সংগঠনের নামে চাঁদাবাজি হয়, বাজারে চাঁদাবাজি হয়, সব জায়গায় চাঁদাবাজি হয়। 

এই চাঁদাবাজি বন্ধ না করলে দ্রব্যমূল্য কমানো সম্ভব নয়। এ সময় পরিবহণে চাঁদাবাজি বন্ধে প্রশাসনের নীরব ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন অন্য ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পরিবহণে চাঁদাবাজির বিষয়ে সরকারের উচ্চপর্যায়ে কথা বলার আশ্বাস দেন এফবিসিসিআই সভাপতি। সূত্র জানায়, আন্তর্জাতিক বাজারে কিছু পণ্যের দাম কমেছে। ৮ পণ্য আমদানির এলসি মার্জিন ও ৪ পণ্যের শুল্ক কমানো হয়েছে। কিন্তু বাজারে এর প্রভাব নেই। উলটো দাম বাড়ছে। অন্যবারের মতো এবারও বাজারে সিন্ডিকেটের থাবা পড়েছে রমজাননির্ভর পণ্যের ওপর। এতে ভোক্তার জন্য সরকারের ছাড়ের সুবিধা চলে যাচ্ছে অসাধু ব্যবসায়ীদের পকেটে। ফলে সরকারের বহুমুখী পদক্ষেপের সুফল পাচ্ছেন না ভোক্তারা। 

এছাড়া এবারই প্রথমবারের মতো নিত্যপণ্যের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তিনটি মন্ত্রণালয় ও দপ্তর সমন্বয় করে পদক্ষেপ নিচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে-বাণিজ্য, কৃষি এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। ইতোমধ্যে কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুস শহীদ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী মো. আব্দুর রহমান ও বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু একটি বৈঠক করেছেন। ওই বৈঠকের ধারাবাহিকতায় রোজা সামনে রেখে চিনি, ভোজ্যতেলসহ কয়েকটি পণ্যের শুল্ক কমানোর প্রস্তাব করা হয়। ইতোমধ্যে সেটি কার্যকর করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এছাড়া রোজায় পণ্যের চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ বাড়ানোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। পণ্যের আমদানি বাড়াতে ডলারের জোগান দেওয়া হচ্ছে।

এদিকে রোজা সামনে রেখে ২৯ জানুয়ারি মন্ত্রিসভার বৈঠকে ভোজ্যতেল, চিনি, খেজুর ও চালের ওপর শুল্ক কমানোর নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ৮ ফেব্রুয়ারি পাঁচটি আলাদা প্রজ্ঞাপনে এসব পণ্যের শুল্ক বিভিন্ন পর্যায়ে কমানোর ঘোষণা দেয়। এগুলো প্রজ্ঞাপন জারির দিন থেকেই কার্যকর হয়েছে। ফলে যেসব পণ্য বন্দর দিয়ে খালাস হবে ওইসব পণ্যে কম শুল্ক দিতে হবে। এর মধ্যে অপরিশোধিত চিনির আমদানির শুল্ক টনপ্রতি দেড় হাজার টাকা থেকে কমিয়ে এক হাজার টাকা করা হয়েছে। 

এতে প্রতি টনে শুল্ক কমেছে ৫০০ টাকা। পরিশোধিত চিনির টনপ্রতি শুল্ক ৩ হাজার টাকা থেকে কমিয়ে ২ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। ৩১ মার্চ পর্যন্ত কম শুল্কে চিনি আমদানির সুযোগ পাবেন আমদানিকারকরা। ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত পরিশোধিত-অপরিশোধিত সয়াবিন তেল ও পাম অয়েল আমদানিতে ভ্যাট ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছে। ভ্যাটের হার কমেছে ৫ শতাংশ। চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে আমদানি পর্যায়ে সেদ্ধ ও আতপ চাল আমদানিতে আরোপিত ৫ শতাংশ শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়েছে। 

একই সঙ্গে সংরক্ষণমূলক শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে। ফলে চাল আমদানিতে শুল্ক ৩০ শতাংশ থেকে ২৫ শতাংশ কমানো হয়েছে। এখন থেকে চাল আমদানিতে শুল্ক দিতে হবে ৫ শতাংশ। তবে চাল আমদানির আগে প্রতি এলসির বিপরীতে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিতে হবে। আর ১৫ মে পর্যন্ত হ্রাসকৃত শুল্কে চাল আমদানি করা যাবে। এছাড়া সব ধরনের খেজুরের আমদানি শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে শুল্ক কমেছে ১০ শতাংশ। ৩০ মার্চ পর্যন্ত কম শুল্কে খেজুর আমদানি করা যাবে। তবে শুল্ক কমার পরও বাজারে এখনো পণ্যের দাম কমছে না। বরং বাড়তি দরেই বিক্রি হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার খুচরা বাজারের পণ্যমূল্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, প্রতি কেজি তিউনেশিয়ান খেজুর নভেম্বরে ৩০০ টাকা বিক্রি হলেও ফেব্রুয়ারিতে বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা। দেখা যায় তিন মাসের ব্যবধানে কেজিপ্রতি ২০০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে ভোজ্যতেলের মধ্যে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল নভেম্বরে ১৫০ টাকা, ফেব্রুয়ারিতে দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৫৫ টাকা। বোতলজাত সয়াবিন তেল নভেম্বরে প্রতি লিটার বিক্রি হয়েছে ১৬৮ টাকা, ফেব্রুয়ারিতে ১৭৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে আজ (১ মার্চ) থেকে লিটারে ১০ টাকা কমে ১৬৩ টাকা বিক্রি হওয়ার কথা রয়েছে। এছাড়া প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা, আর নভেম্বরে ছিল দাম ছিল ১৮৫ টাকা। অন্যদিকে নভেম্বর থেকে কমতে থাকে গরুর মাংসের দাম। সে সময় প্রতি কেজি বিক্রি হয় ৬০০ টাকা। নির্বাচনের পর দাম কিছুটা বেড়ে ৬০০-৬৫০ টাকা হয়। এরপর ফেব্রুয়ারিতে প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭০০-৭৫০ টাকা। 

চিনি আমদানিকারকরা জানান, এমনিতেই দেশে ডলার সংকটের কারণে এলসি খোলা নিয়ে নানা ধরনের জটিলতা রয়েছে। তাই চাইলেও আগের মতো চিনি আমদানি করা সম্ভব হচ্ছে না। পাশাপাশি বিশ্ববাজারে এখন চিনির দাম আগের তুলনায় বেশি। বেড়েছে পরিবহণ ব্যয়। সব মিলিয়ে আমদানিতে খরচ বেড়েছে। কিন্তু সরকার চিনি আমদানিতে কেজিপ্রতি ৬৮ পয়সার মতো শুল্ক কমিয়েছে। তাই নামমাত্র শুল্কছাড়ে বাজারে চিনির দাম দাম কমানোর জন্য যথেষ্ট নয়।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইম্পোর্টার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, রোজার আগে সরকার খেজুরের আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশ কমালেও তা যথেষ্ট নয়। রমজানে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টন খেজুরের চাহিদা রয়েছে। অতীতে যে শুল্ক ধরা হতো, তা আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ থাকলেও বর্তমানে যে শুল্ক, তা বাজারমূল্য থেকে অনেক বেশি। তাই চাহিদা অনুযায়ী আমদানি করা হয়নি। তিনি জানান, খেজুর আমদানিতে পিপি ব্যাগে আগের শুল্কায়ন মূল্য ছিল কেজিপ্রতি ৫.৪৫ টাকা, আর বর্তমানে করা হয়েছে ৬৫ টাকা। ড্রাই কনটেইনারে ছিল ১০.৯৩ টাকা, যা বর্তমানে ধরা হয়েছে ১৬৪ টাকা। 

এছাড়া হিমায়িত কনটেইনারে ছিল কেজিপ্রতি ১০ টাকা, যা এখন ২৬২ টাকা। রিটেইল প্যাকেটজাত কার্টন ছিল ২১.৮৪ টাকা, যা বর্তমানে ১৮০ টাকা। তাই শুল্ক আরও না কমালে খেজুরের মূল্য অস্বাভাবিক বেড়ে নিু আয়ের মানুষের কেনা কষ্টসাধ্য হয়ে উঠবে। খেজুরে যেভাবে ডিউটি কমানোর কথা, সেভাবে তো কমেনি, বরং আমদানির চেয়ে ৩ গুণ শুল্ক ধরা হয়েছে।

জানতে চাইলে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, বাজারে সব ধরনের পণ্যের দাম বেড়েছে। রোজার পণ্যের দামও বাড়ানো হয়েছে। তদারকিতে শুধুই হাঁকডাক, কার্যকর কোনো পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। তাই পণ্যের দাম যৌক্তিকভাবে বেড়েছে কিনা, তা সংশ্লিষ্টদের দেখতে হবে। কোনো অনিয়ম পেলে অসাধুদের আইনের আওতায় এনে ভোক্তাকে স্বস্তি দিতে হবে।

বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু জানান, যারা নিয়ম মোতাবেক ভোক্তার অধিকার সংরক্ষণ করে সাধারণ মানুষের কষ্টের কারণ হবে না, সেই আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীদের আমরা নীতি সহায়তা দিয়ে যাব। কিন্তু কেউ মজুতদারি করে মূল্য শৃঙ্খলে ব্যত্যয় ঘটালে তাকে বা তাদের কঠোর হাতে নিয়ন্ত্রণ শুরু হয়েছে। এটি অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, পণ্যের দাম ক্রেতার সহনীয় পর্যায়ে আনার জন্য সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। আর কেউ কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি, অবৈধ মজুত গড়ে পণ্য সরবরাহে বাধা সৃষ্টি করলে তাদের বিরুদ্ধে বিশেষ আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
Situs Toto
toto togel
slot toto
Toto slot gacor
bacan4d
totoslotgacor
bacan4d
bacan4d slot gacor
bacan4d login
Bacan4d
bacan4d
bacan4d bonus
Toto gacor
Toto gacor
slot gacor hari ini
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d link alternatif
slot gacor bett 200
situs toto
SITUS TOTO
toto 4d
toto gacor
Slot Toto
Slot Toto
Slot Toto
Situs toto
Slot toto
Slot Dana
Slot Dana
Judi Bola
Judi Bola
Slot Gacor
toto slot
bacan4d toto
bacan4d akun demo slot
bacantogel
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacantoto
bacan4d
Bacan4d Login
slot demo
Bacan4d Toto
toto gacor
Slot Gacor
Live Draw
Live Draw Hk
toto slot
Bacan4d slot gacor
toto macau
toto slot
Toto Gacor
slot dana
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
Slot Dp Pulsa
Bacan4d Login
toto slot
Bacansports/a>
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
toto slot
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
slot gacor
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
toto slot
slot demo
toto slot gacor
bacansports Slot toto toto slot Slot toto Slot dana Slot toto slot maxwin slot maxwin toto slot toto slot slot dana
Toto Bola
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
bacan4d
ts77casino
situs toto
slot pulsa
bacansports
situs toto
slot toto
situs toto
slot toto
situs toto
toto slot
bacansport
bacansport
bacansports
slot toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
situs toto
situs toto
xx1toto
toto slot
xx1toto
xx1toto
slot qriss
Slot Toto
slot dana
situs toto
slot toto
slot dana
Situs Toto Slot Gacor
xx1toto
xx1toto
bacan4d
xx1toto
xx1toto
toto slot
situs toto slot gacor
toto gacor
toto gacor
toto gacor
toto gacor
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
situs toto
Slot Toto
Toto Slot
Slot Gacor
Slot Gacor
Slot Gacor
slot toto
Toto Slot
slot gacor
situs togel
Toto Slot