Hot

শেষ ধাপে ভোট সবচেয়ে কম: উপজেলা নির্বাচন

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চতুর্থ ও শেষ ধাপে ভোটার উপস্থিতি সবচেয়ে কম। তবে এই ধাপের ভোটেও সহিংসতা, জাল ভোট দেওয়া, ব্যালট পেপার ছিনতাইসহ নানা অনিয়ম হয়েছে। ব্যালট পেপার ছিনতাইয়ের কারণে কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলায় ভোট স্থগিত হয়েছে। এসব অনিয়মে জড়িত ২৮ জনকে গ্রেপ্তার ও ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে দণ্ড দেওয়া হয়েছে।  

গতকাল বুধবার ৬০ উপজেলায় ভোট গ্রহণ হয়। বিকেলে ভোট গ্রহণ শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল জানিয়েছেন, এই ধাপে ভোটার উপস্থিতি ৩৪ দশমিক ৩৩ শতাংশ। ভোটার উপস্থিতি নয়, শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিয়ে সন্তুষ্ট তিনি। 

ইসির পক্ষ থেকে ভোটার উপস্থিতি ৩৪ শতাংশের বেশি বলা হলেও দিনভর অনেক ভোটকেন্দ্রই ছিল ফাঁকা। সকাল ৮টায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়। ভোট কারচুপি নিয়ে প্রার্থীদের অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগ ও বিচ্ছিন্ন সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে বিকেল ৪টায় ভোট গ্রহণ শেষ হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভোটের পর প্রতিপক্ষের গুলিতে এক তরুণ নিহত হয়েছেন। সংঘর্ষে বরিশালসহ বিভিন্ন স্থানে বেশ কয়েকজন আহত হন। উপজেলাগুলোর মধ্যে ছয়টিতে ইভিএমে এবং বাকিগুলোতে ব্যালটে ভোট নেওয়া হয়। এদিকে ঘূর্ণিঝড় রিমালের কারণে স্থগিত হওয়া ২০টি উপজেলায় আগামী ৯ জুন ভোট গ্রহণ করা হবে।

চতুর্থ ধাপে একজন চেয়ারম্যান, তিনজন ভাইস চেয়ারম্যান ও একজন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ২৫১ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২৬৫ ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২০৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। 

ষষ্ঠ উপজেলা নির্বাচনে প্রথম ধাপে ১৩৯ উপজেলায় ভোট হয় ৮ মে। ভোটের হার ছিল ৩৬ দশমিক ১ শতাংশ। দ্বিতীয় ধাপে ১৫৬ উপজেলায় ২১ মে ভোট পড়ে ৩৭ দশমিক ৫৭ শতাংশ। ২৯ মে তৃতীয় ধাপে ৮৭ উপজেলায় ভোট পড়ে ৩৬ দশমিক ২৪ শতাংশ। 

এই নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করতে আওয়ামী লীগ কাউকে দলীয় প্রতীক না দিয়ে উন্মুক্ত করে দিয়েছিল। তবে ভোটার উপস্থিতি বাড়ানো যায়নি। অন্যদিকে, বিএনপি ও তার মিত্র দলগুলোসহ বেশির ভাগ দল নির্বাচন বর্জন করলেও বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতা নির্বাচনে অংশ নেন, যাদের দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। কয়েকজন বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা নির্বাচিত হয়েছেন।

গতকাল বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সংবাদ সম্মেলনে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল জানান, চতুর্থ ধাপে ৩৪ দশমিক ৩৩ শতাংশ ভোট পড়েছে। ভোট শান্তিপূর্ণ হয়েছে। কিছু ঘটনা ঘটেছে। এ জন্য ২৮ জনকে গ্রেপ্তার ও ৯ জনকে বিভিন্ন অপরাধে দণ্ড দেওয়া হয়েছে।

ব্যালট পেপার ছিনতাইয়ের ঘটনায় ভৈরব উপজেলায় ভোট স্থগিত করা হয়েছে। বরিশালে সংঘর্ষে পাঁচজন আহত হয়েছেন। তবে ইভিএমে ভালো কাজ হয়েছে। ভোট নিয়ে সন্তুষ্ট কিনা– এ প্রশ্নে সিইসি বলেন, শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়েছে, এটা নিয়ে সন্তুষ্ট। তবে রাজনৈতিক বিচার-বিশ্লেষণ করব না।

ঘূর্ণিঝড় রিমালের কারণে তৃতীয় ধাপে ২২টি উপজেলায় নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছিল। এর মধ্যে দুটি উপজেলায় ভোট হয়েছে গতকাল। স্থগিত অন্য ২০ উপজেলায় ৯ জুন ভোট হবে। সেগুলো হলো– বাগেরহাটের শরণখোলা, মোরেলগঞ্জ, মোংলা; খুলনার কয়রা, পাইকগাছা ও ডুমুরিয়া; বরিশালের গৌরনদী, আগৈলঝাড়া; পটুয়াখালীর সদর, মির্জাগঞ্জ ও দুমকী; পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া; ভোলার তজুমদ্দিন, লালমোহন; ঝালকাঠির রাজাপুর, কাঁঠালিয়া; বরগুনার বামনা, পাথরঘাটা; রাঙামাটির বাঘাইছড়ি ও নেত্রকোনার খালিয়াজুরী।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button