International

সন্তানদের চোখের সামনেই বৃদ্ধা মাকে পিষে দিলো ইসরায়েলি ট্যাংক

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার গাজা সিটিতে ছেলের সামনে ৬৫ বছর বয়সী বৃদ্ধা মাকে পিষে দিয়েছে দখলদার ইসরায়েলের একটি ট্যাংক। গত বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) এই ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ সংস্থা ইউরো-মেড। খবর দ্য নিউ আরবের। 

সংস্থাটি জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার গাজা সিটির সেজায়াতে এক বাড়িতে বোমা হামলা চালায় ইসরায়েলি সেনারা। ওই বাড়িতে ৬৫ বছর বয়সী সাফিয়া হাসান মুসা আল-জামাল তার চার সন্তান এবং দেড় বছরের নাতনিকে নিয়ে থাকতেন।

সাফিয়ার ছেলে মুহান্নাদ আল-জামাল বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে ইসরায়েলি সেনারা বোমা ছুঁড়তে ছুঁড়তে গাজা সিটির আল-শুজাইয়া শহরে ঢুকে পড়ে। আমার মা প্রাণ বাঁচাতে আমাদের সবাইকে নিয়ে বাড়ির নিচ তলায় চলে যান। এরপর সন্ধ্যার দিকে আমাদের বাড়িতে প্রবেশ করে ইসরায়েলি সেনারা। তারা বাড়িতে ঢুকেই এলোপাতাড়ি গোলাগুলি শুরু করে। এতে আমি ও আমার মা বেশ আহত হই।’

ওই সময় সন্তানরা তাদের বৃদ্ধ মা সাফিয়াকে হাসপাতালে নেওয়ার অনুরোধ জানালেও ইসরায়েলি সেনারা তাতে কর্ণপাত করেনি।

মুহান্নাদের বোন আরেজি মানবাধিকার এই সংস্থাটিকে জানিয়েছেন, তাদের মাকে প্রথমে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন এক নারী সেনা। এরপর বলা হয় তাদের মাকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হবে।

এরপরের ঘটনা বলেন মুহান্নাদ। তিনি বলেন, ‘মাকে ট্যাংকে করে নিয়ে যাওয়া হয় মুস্তাহা চত্বরে। সেখানে তাকে রাস্তার ওপর শোয়ানো হয়। এরপর একটি ট্যাংক চলে যায় মায়ের শরীরের ওপর দিয়ে। মা সঙ্গে সঙ্গে মারা যান।’

ভয়াবহ সেই ঘটনার কথা মনে করে মুহান্নাদ বলেন, ‘চোখের সামনে যখন আমার মায়ের ওপর ট্যাংক তুলে দেওয়া হলো, আমি যেন পাগল হয়ে গেলাম। চিৎকার করে কাঁদতে শুরু করি। কিন্তু তখনই সেখানে গোলাগুলি শুরু হলে আমি পালিয়ে যেতে বাধ্য হই।’

নিউ আরব বলেছে, এ ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর কাছে মন্তব্য চানতে চাইলে, তারা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।

ইউরো মেড হিউম্যান রাইটস মনিটর জানিয়েছে, তারা এর আগেও তারা ইসরায়েলি বাহিনীর এ ধরনের নৃশংস ঘটনা নথিভুক্ত করেছে। কিছুদিন আগে আহত এক ফিলিস্তিনিকে গাড়ির সামনে বেধে নিয়ে গাড়ি চালানোর ঘটনাও নথিভুক্ত করেছে তারা।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button