সফটফেক কী, কেন আলোচনায়?
প্রাচ্য থেকে পাশ্চাত্য নির্বাচনী প্রচারে প্রাধান্য পাচ্ছে সফটফেক। সম্প্রতি ইউরোপ-আমেরিকার নির্বাচনে এ প্রবণতা দেখা গেছে। নির্বাচনী প্রচারণায় এ ধরনের সফটফেক ব্যবহার ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইউরোপীয় নির্বাচনের জন্য তৎকালীন এএফডি প্রধান প্রার্থী ম্যাক্সিমিলিয়ান ক্রাহ তার টিকটক অ্যাকাউন্টে প্রচুর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ছবি পোস্ট করেছিলেন। এসব ছবিতে দেখানো মানুষরা কেউই আসল নয়।
ফ্রান্সেও ইইউ এবং রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের আগে এ ধরনের সফটফেক ছবি ও ভিডিও ব্যবহার দেখা গেছে। রাজনৈতিক দলগুলো এআই চিত্র তৈরি করেছে মূলত মানবিক আবেগকে জাগিয়ে তোলার উদ্দেশ্যে।
নির্বাচনী প্রচারের সময় সব ফরাসি দলের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট নিয়ে করা এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, অতি ডানপন্থি দলগুলো এ ধরনের সফটফেক ব্যবহারে এগিয়ে ছিল। ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নির্বাচনের আগে আচরণবিধিতে এ ধরনের ছবি বা ভিডিও শনাক্তে দলগুলো সম্মত হলেও একটি ছবিকেও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় উৎপাদিত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়নি।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে উৎপাদিত বিষয়বস্তু বিষয়ে আচরণবিধিতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা ছিল যে, দলগুলোকে বিভ্রান্তিকর বিষয় তৈরি, ব্যবহার বা প্রচার থেকে বিরত থাকতে হবে। তারপরও দ্য প্যাট্রিয়টস, ন্যাশনাল র্যালি এবং রিকনকুয়েটের মতো দলগুলো এ ধরনের বিষয়বস্তু ব্যাপকভাবে ব্যবহার করেছে। তবে সেগুলো কৃত্রিম উপায়ে তৈরি বলে চিহ্নিত করা যায়নি।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগেও এ ধরনের ছবি দেখা গেছে। প্রাক্তন মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প একজন নারীর ছবি পোস্ট করেছেন, যা দেখতে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট ও প্রতিদ্বন্দ্বী কমলা হ্যারিসের মতো। কৃত্রিম ওই নারীকে দেখা যাচ্ছে কমিউনিস্ট নেতার মতো পোশাক পরা এবং জনতাকে সে সম্বোধনও করছে সেই ভঙ্গিতে। যা কমলা হ্যারিসকে কমিউনিস্ট বলে দাবি করার একটি চক্রান্ত।
ডয়চে ভেলে বলছে, এ ধরনের ছবির সমস্যা হলো তা ভুল তথ্য বা ভুয়া খবরের বাইরে অন্য রাজনৈতিক অর্থ তৈরি করে। জনগণের সামনে একটি কৃত্রিম বাস্তবতা তৈরি করে। কমলা হ্যারিসকে কমিউনিস্ট হিসেবে প্রচারের কারণে অনেকে তার প্রতি বিরূপ হয়ে উঠতে পারে। ভোটার কমে যেতে পারে কমলার। কারণ যুক্তরাষ্ট্রে কমিউনিস্ট বিরোধী ভোটারই বেশি। এভাবে একটি কৃত্রিম ছবি বাস্তব ঘটনার চেয়েও গুরুতর হিসেবে চিত্রিত হয়।