Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
Bangladesh

সাইফুজ্জামানের সম্পদ নেই কোন দেশে?

বাইরে ফিটফাট আসলে ‘মহাদুর্নীতিবাজ’

আফ্রিকার দেশ কেনিয়া। কেনিয়ার নাইরোবিতেই উঁচু টাওয়ারে জ্বলজ্বল করছে জিটিএস প্রপার্টিজ এলএলসির সাইনবোর্ড। এ প্রতিষ্ঠানটি আর কারও নয়, বাংলাদেশের সাবেক ভূমিমন্ত্রী, বর্তমানে পলাতক আওয়ামী লীগ নেতা সাইফুজ্জামান চৌধুরীর। শুধু কেনিয়া নয়, জিটিএস প্রপার্টিজের অফিস রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা, রুয়ান্ডা এবং জিম্বাবুয়েও। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, সাইফুজ্জামান চৌধুরী আফ্রিকারই আটটি দেশে তার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান সম্প্রসারণ করেছেন। এসব ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের প্রধান কার্যালয় হিসেবে দেখানো হয়েছে দুবাই। মূলত দুবাই থেকে আফ্রিকায় লুটের সম্পদের বিস্তার ঘটিয়েছেন সাইফুজ্জামান চৌধুরী। শুধু আফ্রিকা নয়, ইউরোপের দেশ পর্তুগালেও রয়েছে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বিপুল সম্পদ। হাঙ্গেরিতে সাইফুজ্জামান চৌধুরী নতুন অফিস করেছেন। সেখানে তিনি অস্ত্রের ব্যবসা নতুন করে শুরু করেছেন ২০২৩ সাল থেকে। ইউরোপের আরেক দেশ গ্রিসেও সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বিনিয়োগের খবর পাওয়া যাচ্ছে। এভাবে বিশ্বের প্রায় ৩২টি দেশে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর লুটের অর্থ বিনিয়োগ করা হয়েছে। কোথায় নেই সাইফুজ্জামান চৌধুরীর লুটের অর্থ? ২০২৩ সালে প্রথম ‘আলজাজিরা’ সাইফুজ্জামান চৌধুরী ওরফে জাভেদের যুক্তরাজ্যের সম্পদের তথ্য প্রকাশ করে। সেখানে তার ৩৬০টি বাড়ির কথা প্রকাশ করে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে। এরপর আরও অনুসন্ধানে দেখা যায়, শুধু যুক্তরাজ্য নয়, দুবাই, যুক্তরাষ্ট্রেও রয়েছে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বিপুল সম্পদ। কিন্তু এসব সম্পদের বাইরেও তার বিপুল সম্পদের তথ্য বেরিয়ে আসছে প্রতিদিন। এ নিয়ে অনুসন্ধান চালিয়ে ‘বাংলাদেশ প্রতিদিন’ পেয়েছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। দেখা যাচ্ছে যে, এশিয়া, আফ্রিকা, ইউরোপ, আমেরিকা সব মহাদেশে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর লুটের অর্থ সম্প্রসারিত হয়েছে। সব দেশে তিনি বিনিয়োগ করেছেন। সাইফুজ্জামান চৌধুরী এখন দুবাইয়ে অবস্থান করছেন। যুক্তরাজ্যে তার সম্পদ জব্দ এবং সম্পদের ওপর বিক্রয় নিষেধাজ্ঞা জারির পর সাইফুজ্জামান চৌধুরী তার ঘনিষ্ঠদের কাছে হেসে বলেছেন, ‘আমার কত সম্পত্তি জব্দ করবে। এমন সম্পদ আমার কাছে আছে যেগুলোর হিসাব কেউ কোনোদিন জানবে না।’ বাস্তবিকই তাই। সাইফুজ্জামান চৌধুরীর মালিকানাধীন দুবাইয়ের দুটি প্রতিষ্ঠানের তথ্যাধি যাচাই করে দেখা যায়, এ দুটি প্রতিষ্ঠানের ৩২টি দেশে শাখা রয়েছে। এসব দেশে তার বিনিয়োগের পরিমাণ বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকা। আরামিট প্রপার্টিজ এলসি এবং জিটিএলসি প্রপার্টিজ ছাড়াও আরামিট এক্সপোর্ট-ইম্পোর্ট এবং জিটিএলসি মাল্টি ট্রেড নামে এ প্রতিষ্ঠান দুটি দুবাইয়ে নিবন্ধিত। দুবাইয়ের নিবন্ধিত কোম্পানির মাধ্যমে তিনি আফ্রিকা, ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশে শাখা করেছেন। এসব দেশে বিনিয়োগ করেছেন বিপুল পরিমাণ সম্পদ। কেনিয়া থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, সেখানে তিনি বিপুল পরিমাণ কৃষি জমি কিনেছেন। এসব কৃষি জমি তিনি ইজারা দিয়েছেন ভারতীয় এক কৃষি ফার্মকে। অংশীদারি চুক্তিতে কৃষি জমি থেকে তিনি অর্থ উপার্জন করছেন নিয়মিত। এ ছাড়া কেনিয়ায় একটি তেল শোধনাগার স্থাপন করেছেন সরকারের সঙ্গে অংশীদারত্বের মাধ্যমে। এজন্য সাইফুজ্জামান চৌধুরী সেখানে বিনিয়োগ করেছেন ৩০ মিলিয়ন ডলার। এ তেল শোধনাগারটি কাজ শুরু করবে আগামী বছরের মাঝামাঝি। সাইফুজ্জামান চৌধুরীর তেল শোধনাগারের কাগজপত্রে দেখা যায়, তার স্ত্রী সেখানে অংশীদার হিসেবে তালিকাভুক্ত রয়েছেন।

জিম্বাবুয়েতে সাইফুজ্জামান চৌধুরী এক্সপোর্ট-ইম্পোর্ট ব্যবসা সম্প্রসারণ করেছেন। ২০২২ সাল থেকে জিটিএস এক্সপোর্ট-ইম্পোর্ট জিম্বাবুয়ে পশ্চিমা দেশের পণ্যগুলো রপ্তানি করে। নিষেধাজ্ঞা থাকায় জিম্বাবুয়ে ডলারসংকটে তীব্রভাবে জর্জরিত। আর এ সংকটের সুযোগ নিয়ে জিম্বাবুয়ে ব্যাপক সম্পদ পাচার করেছেন সাইফুজ্জামান চৌধুরী। জিম্বাবুয়ের নিয়ম অনুযায়ী, সেখানে কেউ যদি নগদ ডলার নিয়ে যায়, তাহলে তাকে বিমানবন্দরে আটকানো হয় না। নির্দিষ্ট সংখ্যক একটি জরিমানা দিয়ে সেই টাকা জিম্বাবুয়ের ব্যাংকে রাখার অনুমতি দেওয়া হয়। আর এ সুযোগ নিয়ে সাইফুজ্জামান চৌধুরী জিম্বাবুয়ে বিপুল বিনিয়োগ করেছেন। এসব বিনিয়োগের মধ্যে রয়েছে আরামিট প্রপার্টিজের নামে হারারেতে একটি বহুতল অ্যাপার্টমেন্ট, যেটি সরকারি কর্মকর্তাদের ভাড়া দেওয়া আছে। এ ছাড়া জিম্বাবুয়েতে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান জিটিএস একটি পাঁচ তারকা হোটেলের নির্মাণ সম্পন্ন করেছে। যে কোনো সময় এ হোটেলটি চালু হবে বলে জানা গেছে। দক্ষিণ আফ্রিকায় সাইফুজ্জামান চৌধুরী শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগ করেছেন। দুবাইয়ের আরামিট প্রপার্টিজ এবং জিটিসি প্রপার্টিজ দক্ষিণ আফ্রিকায় শেয়ার মার্কেটের তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠান। শেয়ার মার্কেটের মাধ্যমে দক্ষিণ আফ্রিকায় অন্তত ৯টি প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করেছে বলে দুবাইয়ে আরামিট প্রপার্টিজের তথ্যাধি যাচাই করে দেখা যায়। এ ছাড়া রুয়ান্ডায় সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বিনিয়োগের খবর পাওয়া গেছে। একাধিক সূত্র বলছে, বাংলাদেশে আরও কয়েকজন ব্যবসায়ী আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে বিনিয়োগ করেছেন। এমনকি গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আরামিট প্রপার্টিজ এলসি মিসরে বিনিয়োগের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এনিয়ে মিসর সরকারের সঙ্গে আরামিট প্রপার্টিজের প্রতিনিধির কথা হচ্ছে বলেও জানা গেছে।

এ তো গেল আফ্রিকায় সাইফুজ্জামান চৌধুরীর সাম্রাজ্যের খবর। আফ্রিকার বাইরে ইউরোপেও বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ করেছেন। অবশ্য বিভিন্ন সূত্র বলছে যে, ২০১৬ সাল থেকে ইউরোপে বিনিয়োগ করছেন সাইফুজ্জামান চৌধুরী। এ বিনিয়োগের খবর অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে রাখা হয়েছে।

একটি সূত্র বলছে, যুক্তরাজ্যে বিনিয়োগগুলো যেকোনো সময় প্রশ্নের মুখোমুখি হতে পারে। এ কারণে তিনি ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বিনিয়োগ করেছেন। দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ইউরোপের যেসব দেশে ট্যাক্স কড়াকড়ি নেই এবং অর্থ প্রবেশের ক্ষেত্রে নানারকম সুযোগ-সুবিধা আছে, সেসব দেশে বেছে বেছে বিনিয়োগ করেছেন সাইফুজ্জামান চৌধুরী। লক্ষণীয় ব্যাপার হলো- অর্থনীতিতে সংকট বা ধুঁকতে থাকা দেশগুলো সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বিনিয়োগের অন্যতম টার্গেট। পর্তুগালে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর আরামিট প্রপার্টিজ এলসির নামে ১২টি অ্যাপার্টমেন্ট কেনার খবর রয়েছে। সবই তিনি ভাড়া দিয়েছেন। এ ছাড়া জিটিএলসি প্রপার্টিজ সেখানে একটি বহুতল অফিস ভবন কিনেছে, যে অফিস ভবনটিও ভাড়া দেওয়া হয়েছে। এসব বিনিয়োগ করা হয়েছে আর ক্যাপিটাল ওয়ার্ল্ড মেরিটাইম লিমিটেডের মাধ্যমে। অর্থাৎ সাইফুজ্জামান চৌধুরী এ ক্ষেত্রে ধরাছোঁয়ার বাইরে। পর্তুগাল ছাড়াও গ্রিসে রেস্টুরেন্ট ব্যবসা শুরু করেছেন সাইফুজ্জামান চৌধুরী। সেখানে তার স্ত্রী রুখমিলা জামানের নামে ‘আরামিট ফুডস’ নামে একটি চেইন রেস্টুরেন্ট করেছেন। যে রেস্টুরেন্টটি ২০২২ সাল থেকে চালু রয়েছে। এ ছাড়া গ্রিসেও জিটিএস প্রপার্টিজের প্রকল্প রয়েছে। সেখানে তিনি আটটি বাড়ি কিনেছেন বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। সাইপ্রাসে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বিপুল বিনিয়োগের খবর পাওয়া গেছে। সাইপ্রাসে আরামিট প্রপার্টিজ এবং জিটিএলসির যৌথ মালিকানায় অন্তত ৩২টি ভবন ও অ্যাপার্টমেন্ট কিনেছেন বলে জানা গেছে। তুরস্কের শেয়ার মার্কেটে আরামিট প্রপার্টিজ এবং জিটিএস বিনিয়োগ করেছে। এ ছাড়া সাইফুজ্জামান চৌধুরী মধ্যপ্রাচ্যের আরও কয়েকটি দেশে বিনিয়োগ করেছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সাইফুজ্জামান চৌধুরী, তার স্ত্রী রুখমিলা জামান এবং তার মেয়ে জেবা রহমানের বাংলাদেশে থাকা সম্পত্তি জব্দ হয়েছে। কিন্তু এসব সম্পদ আসলে তার মূল সম্পদের কিছুই নয় বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। সরকার পরিবর্তনের পর সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তার পরিবারের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়। দেখা গেছে যে, তাদের সেখানে জমাকৃত অর্থের পরিমাণ খুবই সামান্য। কারণ সাইফুজ্জামান চৌধুরী সবসময় মনে করতেন যে, দেশে সম্পদ রাখা নিরাপদ নয়। এজন্য ২০০৯ সাল থেকেই পরিকল্পিতভাবে বিদেশে অর্থ পাচার করেছেন জাভেদ। দুর্নীতি দমন কমিশনের হিসাব থেকে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা গেছে, দেশে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর ৩৯টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। এসব অ্যাকাউন্টে ৫ কোটি ২৬ লাখ ৮৩ হাজার ২৫ টাকা রয়েছে। অর্থাৎ সারা বিশ্বে তার পাচারকৃত টাকার তুলনায় এটা কিছুই নয়। পৈতৃক সম্পত্তি ছাড়া দেশে কোনো সম্পদ করেননি সাইফুজ্জামান চৌধুরী। যা করেছেন তার সবই বিদেশে করেছেন। প্রশ্ন উঠেছে- এই মহা দুর্নীতিবাজের কত সম্পদ, কোন দেশ থেকে উদ্ধার করবে সরকার?

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacantoto4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d toto
slot toto
bacan4d
bacan4d
togel online
Toto Slot
saraslot88
Bacan4d Login
bacantoto
Bacan4d Login
bacan4d
bacan4drtp
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot maxwin
slot bacan4d
slot maxwin
bacan4d togel
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d login
bacantoto 4d
slot gacor
bacansport
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot77 gacor
JAVHD
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
gacor slot
slot gacor777
slot gacor bacan4d
bacan4d
bacansport
toto gacor
bacan4d
bacansports login
slot maxwin
slot dana
slot gacor
slot dana
slot gacor
bacansports
bacansport
bacansport
bacansport
bawan4d
bacansports
bacansport
slot gacor
judi bola
slot maxwin
slot maxwin
bacansport
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot demo
slot gacor
slot gacor
slot gacor
toto slot
slot gacor
demo slot gacor
slot maxwin
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot toto