সাতজনের দায় স্বীকার: পিএসসির প্রশ্ন ফাঁসে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি
গ্রেপ্তার হওয়া সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যানের সাবেক গাড়িচালক আবেদ আলী আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলেছেন, চাকরিপ্রার্থীদের থেকে প্রথমে অগ্রিম নেওয়া হতো। এরপর নিয়োগপত্র পাওয়ার শর্তে চুক্তি হতো ১৮ থেকে ২০ লাখ টাকায়।
মঙ্গলবার বিকেলে আবেদ আলী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিনা হকের আদালতে এই জবানবন্দি দেন। আবেদ আলীর পর আরও ছয়জন এই মামলায় স্বাীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
সরকারি চাকরির পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসে আবেদের অন্যতম সহযোগী ছিলেন- গাজীপুর ক্যান্টনমেন্টের প্রতিরক্ষা ও অর্থ বিভাগে অডিটর পদে চাকরিরত প্রিয়নাথ রায় (৫১)। তিনিও সিআইডির হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন।
আবেদ আলী তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলেছেন, বেশ কয়েক বছর ধরে তারা সরকারি কর্ম কমিশনের বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস করে আসছেন। প্রিয়নাথ রায় চাকরিপ্রার্থীদের এনে সৈয়দ আবেদ আলীর কাছে পৌঁছে দিতেন। এরপর আবেদ আলী পিএসসির অন্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ করিয়ে দিতেন। এই দুইজন মিলে এ পর্যন্ত কমপক্ষে ৪৫০ জনকে প্রশ্নফাঁসের মাধ্যমে চাকরি পেতে অসদুপায় অবলম্বনে সহায়তা করেছেন।
প্রিয়নাথ রায় প্রথমে চাকরিপ্রার্থীদের আবেদ আলীর কাছে নিয়ে গেলে জনপ্রতি ২ থেকে ৫ লাখ টাকা করে অগ্রিম নেওয়া হতো। এরপর প্রশ্ন বুঝিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। পরীক্ষার পর চাকরির নিয়োগপত্র পাওয়ার শর্তে একেকজনের সঙ্গে চুক্তি হতো ১৮ থেকে ২০ লাখ টাকায়। চাকরি নিশ্চিত হওয়ার পর বুঝে নেওয়া হতো এসব টাকা।
সবশেষ পিএসসির অধীনে ৫ জুলাই অনুষ্ঠিত রেলওয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত ছিলেন। এ নিয়োগ পরীক্ষায় একেকজনের কাছ থেকে ১৮ লাখ টাকার বিনিময়ে চাকরির নিশ্চয়তা দিয়েছেন বলে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জানিয়েছেন পিএসসির সাবেক গাড়ি চালক সৈয়দ আবেদ আলী। তারা একাধিক নন-ক্যাডার পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসেও জড়িত বলে আদালতের কাছে স্বীকার করেছেন।
ফাঁস প্রশ্নে ৩৩তম বিসিএসে ৩ জনের চাকরি ॥ অপরদিকে, পিএসসির ডেসপাস অফিসার খলিলুর রহমান ঢাকার একটি মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলেছেন, তিনি ৩৩তম বিসিএস পরীক্ষায় ১০ জন প্রার্থীর কাছে প্রশ্নফাঁস করেছেন। এর মধ্যে তিনজন বর্তমানে বিভিন্ন ক্যাডারে চাকরি করছেন।
প্রশ্ন পাওয়া প্রার্থীদের মধ্যে ছয়জন লিখিত পরীক্ষায় উতরে যান। তবে তিনজন পরে মৌখিক পরীক্ষায় বাদ পড়েন বলে জানান প্রশ্নফাঁসের দায়ে অভিযুক্ত এ ব্যক্তি।
এ ছাড়া, সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও রেলের বিভিন্ন নিয়োগে অন্তত কয়েকশ’ নিয়োগে তার হাত ছিল বলেও মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আদালতে স্বীকার করেছেন খলিলুর। এ সময় খলিল জানান, মিরপুরে তার বাসায় গিয়ে তার বিলাসী জীবনযাপন দেখে চমকে উঠেছিলেন খোদ অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) কর্মকর্তারাও।
খলিলুর রহমান ২০১২ সালে একবার বিসিএস প্রিলিমিনারির প্রশ্ন নিয়ে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) হাতে আটক হয়েছিলেন, কিন্তু সে সময় পিএসসি তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলে আদালতকে জানিয়েছেন তিনি।
জবানবন্দিতে খলিলুর আরও জানিয়েছেন, পিএসসির সাবেক পরিচালক হাসিনা বেগমের এমএলএসএসের কাছে তিনি চাকরি প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দিতেন। সেখান থেকে সবুজ সংকেত মিললে নিয়োগের বিষয়ে আর্থিক লেনদেনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হতো। সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজের মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট নিয়ামুলও এসব প্রশ্নপত্র ফাঁসে বিভিন্ন সময় তাকে সহযোগিতা করেছেন বলে জানিয়েছেন খলিলুর।
বিসিএসসহ ৩০ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় দেশজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় আলোচিত পিএসসি চেয়ারম্যানের সাবেক গাড়ি চালক আবেদ আলীসহ ১৭ জনের গ্রেপ্তারের পর প্রশ্ন ফাঁসের চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে।
এ ঘটনার তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। মঙ্গলবার গ্রেপ্তারকৃত সেই গাড়িচালকসহ সাতজন আদালতে স্বীকারোক্তি জবানবন্দি দিয়েছে। এ ছাড়া গ্রেপ্তারকৃত ১০ জনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এদিকে প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে পিএসসির ঊর্ধ্বতন তিন কর্মকর্তাসহ ১৭ জনের ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
মঙ্গলবার সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টারের (সিপিসি) বিশেষ পুলিশ সুপার মো. তৌহিদুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, বিসিএসসহ ৩০টি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে সোমবার পিএসসির কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এ ঘটনায় রাতেই পল্টন থানায় মামলা করা হয়েছে। মামলায় পিএসসির সাবেক সহকারী পরিচালক ও ১৪ জন পলাতকসহ আরও ৬০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) প্রশ্নফাঁসের অভিযোগের মামলায় প্রতিষ্ঠানটির সাবেক সহকারী পরিচালক নিখিল চন্দ্র রায়সহ ১৪ জন পলাতক রয়েছে বলে মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে। পলাতক অন্য আসামিরা হচ্ছে, শরীফুল ইসলাম ভুঁইয়া, দীপক বনিক, খোরশেদ আলম খোকন, কাজী মো. সুমন, এ কে এম গোলাম পারভেজ, মেহেদী হাসান খান, গোলাম হামিদুর রহমান, মুহা. মিজানুর রহমান, আতিকুল ইসলাম, এটিএম মোস্তফা, মাহফুজ কালু, আসলাম ও কৌশিক দেবনাথ।
এ ছাড়া এই মামলায় আরও ৬০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। সোমবার রাতে পল্টন থানায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করে। এ মামলায় গ্রেপ্তারকৃত পিএসসির সাবেক চেয়ারম্যানের গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী তার ছেলে সৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়ামসহ ১৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হচ্ছে, বিপিএসসির উপপরিচালক আবু জাফর, উপপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম, সহকারী পরিচালক আলমগীর কবির, ডেসপাস রাইডার খলিলুর রহমান, অফিস সহায়ক সাজেদুল ইসলাম, অডিটর প্রিয়নাথ রায়, সেনাবাহিনীর সাবেক সদস্য নোমান সিদ্দিকী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ী আবু সোলায়মান মো. সোহেল, ব্যবসায়ী জাহিদুল ইসলাম, ঢাকার ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অফিসের মামুনুর রশীদ, ব্যবসায়ী দুই ভাই সাখাওয়াত হোসেন ও সায়েম হোসেন, বেকার যুবক লিটন সরকার, নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের নিরাপত্তাকর্মী শাহাদাত হোসেন ও শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের টেকনিশিয়ান নিয়ামুন হাসান।
এর আগে মঙ্গলবার সকালে সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) মো. আজাদ রহমান জানান, সোমবার রাতে সিআইডির পক্ষ থেকে রাজধানীর পল্টন থানায় বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন আইনে এই মামলা (নং ১৫) দায়ের করা হয়। তিনি জানান, প্রশ্নফাঁসে জড়িতদের ধরতে সাঁড়াশি অভিযান চলছে।
পিএসসির তিন কর্মকর্তাসহ ১০ জন কারাগারে ॥ বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের (বিসিএস) পরীক্ষাসহ গত ১২ বছরে ৩০টি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে রাজধানীর পল্টন থানার মামলায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন পিএসসির চেয়ারম্যানের সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলীসহ ৭ জন। পাশাপাশি আবেদ আলীর ছেলেসহ মামলার ১০ আসামির জামিন আবেদন না-মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিনা হকের আদালত এ আদেশ দেন। এর আগে এদিন দুপুরে গ্রেপ্তার ১৭ আসামিকে আদালতে হাজির করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির সাইবার ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড অপারেশনের অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার জুয়েল চাকমা। এর মধ্যে পিএসসির চেয়ারম্যানের সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী জীবনসহ সাত আসামি স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হন। পরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করেন। এ ছাড়া অপর ১০ আসামিকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। এ সময় ১০ আসামির জামিন চেয়ে আবেদন করেন আইনজীবীরা।
অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালতে ১০ আসামির জামিন না-মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেওয়া হয়। জবানবন্দি দেওয়া আসামিরা হচ্ছে, গাড়িচালক আবেদ আলী, অফিস সহায়ক খলিলুর রহমান, অফিস সহায়ক (ডিসপাস) সাজেদুল ইসলাম, ঢাবির সাবেক শিক্ষার্থী বর্তমানে মিরপুরের ব্যবসায়ী আবু সোলায়মান মো. সোহেল, ব্যবসায়ী সহোদর সাখাওয়াত হোসেন ও সায়েম হোসেন এবং লিটন সরকার (বেকার)।
কারাগারে যাওয়া আসামিরা হচ্ছে, সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) সাবেক চেয়ারম্যানের গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলীর ছেলে সৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়াম, পিএসসির উপপরিচালক মো. আবু জাফর ও মো. জাহাঙ্গীর আলম, সহকারী পরিচালক মো. আলমগীর কবির, সাবেক সেনা সদস্য নোমান সিদ্দিকী, অডিটর প্রিয়নাথ রায়, ব্যবসায়ী মো. জাহিদুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ পাসপোর্ট অফিসের নিরাপত্তা প্রহরী শাহাদাত হোসেন, ঢাকার ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অফিসে কর্মরত মো. মামুনুর রশীদ ও শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মেডিক্যাল টেকনিশিয়ান মো. নিয়ামুল হাসান।
তিন সদস্য তদন্ত কমিটি ॥ বিসিএসের প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি)। মঙ্গলবার সকালে পিএসসির চেয়ারম্যান সোহরাব হোসাইন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। সরকারি কর্মকমিশনের একজন যুগ্ম সচিবকে আহ্বায়ক করে এ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য দুইজন সদস্য হচ্ছে, কমিশনের পরিচালক দিলাওয়েজ দুরদানা ও মোহাম্মদ আজিজুল হক। পিএসসি চেয়ারম্যান জানান, প্রশ্নফাঁস নিয়ে যে ঘটনাটি ঘটেছে, তার ব্যাখ্যা আমরা দিয়েছি। তারপরও পুরো ঘটনাটি আরও অধিকতর তদন্ত করতে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি সবগুলো পক্ষের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন দেবে।
১৭ জনের ব্যাংক হিসাব জব্দ ॥ প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে পিএসসির ঊর্ধ্বতন তিন কর্মকর্তাসহ ১৭ জনের ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এদের মধ্যে পিএসসির চেয়ারম্যানের সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলীও রয়েছেন। মঙ্গলবার তাদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ)।
বিএফআইইউ সূত্র জানায়, ব্যাংক হিসাব জব্দ সংক্রান্ত চিঠি বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীর কাছে পাঠানো হয়েছে। এ সংক্রান্ত মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ব্যাংক হিসাব জব্দ থাকবে বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। বিএফআইইউয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, পিএসসি প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে।
পাঁচ কর্মকর্তা-কর্মচারী সাসপেন্ড ॥ বিসিএসসহ বিভিন্ন চাকরির নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া পিএসসির ৫ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। মঙ্গলবার রাতে পিএসসির জারি করা পৃথক পাঁচটি প্রজ্ঞাপনে তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে জারি করা ৫টি প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেছেন পিএসসির চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইন। বরখাস্তরা হলেন পিএসসির উপ-পরিচালক আবু জাফর, উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম, সহকারী পরিচালক আলমগীর কবির, ডেসপাস রাইডার খলিলুর রহমান ও অফিস সহায়ক সাজেদুল ইসলাম।
প্রতিটি প্রজ্ঞাপনে আলাদাভাবে বরখাস্তকৃত প্রত্যেকের নাম-পদবি উল্লেখ করে বলা হয়েছে, ৫ জুলাই অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ রেলওয়ের ‘উপ-সহকারী প্রকৌশলী’ পদের নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র প্রকাশ ও বিতরণের সঙ্গে জড়িত থাকা এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মচারী কর্তৃক অপরাধ সংঘটনে সহায়তা করার অভিযোগে পাঁচজন কর্মকর্তা-কর্মচারী গ্রেপ্তার হয়েছেন। তারা বর্তমানে জেলহাজতে।
তাদের বিরুদ্ধে ‘সরকারি কর্ম কমিশন আইন-২০২৩’এর ১১ ও ১৫ ধারা অনুযায়ী পল্টন থানায় ১৫/৩১০ নম্বর মামলা দায়ের করা হয়েছে। তারা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। এজন্য গ্রেপ্তারকৃত ৫ জনকে ‘সরকারি চাকরি আইন-২০১৮’এর ধারা ৩৯(২) অনুসারে চাকরি হতে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হলো। প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, সাময়িক বরখাস্তকালীন তারা কমিশন সচিবালয়ের প্রশাসন অধিশাখায় নিয়োজিত থাকবেন এবং বিধি অনুযায়ী খোরপোষ ভাতা পাবেন বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়। একই সঙ্গে এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর করা হবে বলেও প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়।