International

সিঙ্গাপুরে প্রায় ২০ বছরের মধ্যে প্রথম কোনো নারীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর

সিঙ্গাপুর শুক্রবার প্রায় ২০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো একজন মহিলার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে বলে দেশটির কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন। সিঙ্গাপুরের নাগরিক সারিদেউই জামানি (৪৫) নামের ওই মহিলা ২০১৮ সালে ৩০ গ্রাম হেরোইন পাচারের জন্য দোষী সাব্যস্ত হন।

তিনি হচ্ছেন সিঙ্গাপুরে মাদক মামলায় দণ্ডিত মোহাম্মদ আজিজ বিন হুসেনের পরে এ সপ্তাহে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দ্বিতীয় আসামী। এবং ২০২২ সালের মার্চ থেকে ১৫ তম। আগামী সপ্তাহে আরও একটি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার কথা রয়েছে সিঙ্গাপুরে।

সংবাদসংস্থা এপি-র প্রতিবেদন অনুযায়ী, শুক্রবার ভোরে বছর জামানিকে ফাঁসিতে ঝোলায় সেদেশের কারা কর্তৃপক্ষ। ২০১৮-য় হেরোইন পাচারের সময় হাতে নাতে ধরা পড়ে ওই মহিলা। তার থেকে ৩১ গ্রাম ডায়মরফিন উদ্ধার করে সেন্ট্রাল নারকোটিক্স ব্যুরো। এ পরিমাণ হেরোইন এক সপ্তাহের মধ্যে ৩৭০ জনকে মাদকাশক্তে পরিণত করতে পারে বলে জানা গিয়েছে।

উল্লেখ্য, দু’দিনে আগেই মাদক পাচার মামলায় ৫৬ বছর বয়সী হুসেনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে সিঙ্গাপুর সরকার। তার থেকে ৫০ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার হয়েছিল। আজিজ ও জামানি একই গ্যাংয়ের হয়ে কাজ করতেন কিনা, তা অবশ্য স্পষ্ট নয়।

সিঙ্গাপুরের আইন অনুযায়ী, ৫০০ গ্রাম গাঁজা ও ১৫ গ্রাম হেরোইন পাচারের ক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ডের সংস্থান রয়েছে। সেই আইন মেনেই আজিজ ও জামানির প্রাণদণ্ডের শাস্তি চেয়ে আদালতের কাছে আবেদন করে সিঙ্গাপুরের সেন্ট্রাল নারকোটিক্স ব্যুরো। তবে তাদের প্রেসিডেন্টের কাছে ক্ষমা চাওয়ার সুযোগ দেয়া হয়েছিল।

২০২২-এ মাদক পাচারের অপরাধে ফাঁসির সাজা কার্যকরের সংখ্যা বাড়িয়েছে সিঙ্গাপুর সরকার। মানবাধিকার সংগঠনগুলির দাবি, গত এক বছরে মোট ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ডের সাজা কার্যকর করেছে প্রশাসন। অর্থাৎ গড়ে মাসে একজন করে ফাঁসিতে ঝোলানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ তুলেছেন তারা। এ আইন প্রত্যাহারের জন্য সিঙ্গাপুর সরকারকে অনুরোধ করেছে জাতিসংঘ।

প্রসঙ্গত, ২০০৪-এ শেষবার সিঙ্গাপুরে কোনও মহিলা মাদক পাচারকারীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়। বছর ৩৬-র সেই তরুণীর নাম ছিল ইয়েন মে উয়েন। হেয়ারড্রেসার হিসেবে কাজ করত সে। এর ফাঁকে ফাঁকেই চলত মাদক পাচার। তখনই একদিন ধরা পড়ে যায় উয়েন।

সিঙ্গাপুর সরকারের দাবি, মাদকের প্রভাব থেকে দেশকে বাঁচাতে কড়া আইন প্রয়োজন। সেই কারণেই মৃত্যুদণ্ডের সাজা বন্ধ করা সম্ভব নয়। অর্থনৈতিকভাবে সিঙ্গাপুর যথেষ্ট সমৃদ্ধশালী দেশ। সেই কারণেই বেশি টাকা দিয়ে দামি মাদক কেনার প্রবণতা বাড়ছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।

অন্যদিকে মাদক আইনে অনেকটাই শীথিলতা এনেছে প্রতিবেশী দেশ থাইল্যান্ড। সেখানে গাঁজা রাখা ও সেবন বৈধ করা হয়েছে। মৃত্যুদণ্ড আইনে বদল এনেছে মালয়েশিয়াও। মারাত্মক গুরুতর অপরাধ ছাড়া মৃত্যুদণ্ড রদ করা হয়েছে সেখানে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button