Science & Tech

‘সিটি-কিলার’ গ্রহাণুর হুমকি: পৃথিবী রক্ষায় নাসার পরিকল্পনা

যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ সংস্থা নাসাসহ বিশ্বের শীর্ষ মহাকাশ সংস্থাগুলো ২০২৪ YR4 নামের একটি গ্রহাণুকে পর্যবেক্ষণ করছে। এই গ্রহানুর ২০৩২ সালে পৃথিবীতে আঘাত হানার সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও এর আঘাতের সম্ভাবনা খুব বেশি নয়, তবু বিষয়টি যথেষ্ট উদ্বেগজনক বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।  

‘সিটি-কিলার’নামে পরিচিত এই মহাকাশশিলা প্রায় ১৩০ থেকে ৩০০ ফুট প্রশস্ত এবং এটি যদি কোনো ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় আঘাত হানে, তবে তা মারাত্মক ধ্বংসযজ্ঞ ঘটাতে পারে। প্ল্যানেটারি সোসাইটির প্রধান বিজ্ঞানী ব্রুস বেটস সতর্ক করে বলেছেন, এটি যদি প্যারিস, লন্ডন বা নিউইয়র্কের ওপর আঘাত হানে, তাহলে পুরো শহর এবং আশপাশের এলাকাগুলো ধ্বংস হয়ে যাবে।  

নাসা সাম্প্রতিক ঝুঁকি মূল্যায়নে গ্রহাণুটির সম্ভাব্য আঘাতের হার ৩.১ শতাংশ (১/৩২) থেকে কমিয়ে ১.৫ শতাংশ (১/৬৭) করেছে। যদিও এটি কিছুটা স্বস্তির খবর, তবে এখনও যথেষ্ট হুমকি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এ কারণেই আন্তর্জাতিক মহাকাশ সংস্থাগুলো সম্ভাব্য প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিয়ে কাজ করছে।

কেনেডি স্পেস সেন্টারের এক প্রকল্প ব্যবস্থাপক বলেছেন, আমাদের হাতে যথেষ্ট সময় আছে, কিন্তু পরিকল্পনা শুরু করার সময় এখনই। 

নাসা ইতোমধ্যে চীনের CNSA, রাশিয়ার রসকসমস এবং ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি (ESA)-র মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে কাজ করছে। যদি পরবর্তী বিশ্লেষণে নিশ্চিত হয় যে, YR4-এর আঘাতের সম্ভাবনা বেশি, তবে বিশেষজ্ঞরা ‘বিস্ফোরকযুক্ত রকেট পাঠিয়ে গ্রহাণুটির গতিপথ পরিবর্তন বা সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস’ করার পরিকল্পনা করছেন।  

নাসার এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ধ্বংস করা সহজ, কিন্তু সমস্যা হলো সঠিক সময়ে, সঠিক জায়গায় বিস্ফোরক পৌঁছে দেওয়া। সেটাই সবচেয়ে কঠিন কাজ।  

গ্রহাণুটি কী দিয়ে তৈরি তা এখনও নিশ্চিত নয়। যদি এটি ২০১৩ সালে রাশিয়ার চেলিয়াবিনস্কে বিস্ফোরিত গ্রহাণুর মতো ঝুঁকিপূর্ণ উপাদানে গঠিত হয়, তবে তা পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের সময়ই ভেঙে পড়তে পারে। তবে এটি যদি ধাতব বা কঠিন শিলা দিয়ে তৈরি হয়ে থাকে, তবে তা ধ্বংস বা গতিপথ পরিবর্তন করতে আরও শক্তিশালী বিস্ফোরণের প্রয়োজন হবে।  

নাসা এখনও নিশ্চিত করেনি যে, পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করা হবে কি না। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি একটি সম্ভাব্য বিকল্প হিসেবে উন্মুক্ত রয়েছে। ২০২৫ সালের এপ্রিল পর্যন্ত নাসা YR4-কে পর্যবেক্ষণ করতে পারবে, তারপর এটি পৃথিবী থেকে অনেক দূরে সরে যাবে। তবে ২০২৮ সালে এটি আবার ফিরে আসতে পারে।  

 ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে প্রথম শনাক্ত হওয়ার সময় YR4-এর পৃথিবীতে আঘাত হানার সম্ভাবনা ছিল ১/৮৩। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, আরও তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে এই সম্ভাবনা ধীরে ধীরে আরও কমতে পারে।

ব্রুস বেটস আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, আগামী কয়েক মাস থেকে কয়েক বছরের মধ্যে এই ঝুঁকি শূন্যে নেমে আসতে পারে। তবে নাসা এখনো সতর্ক অবস্থানে রয়েছে, কারণ যেকোনো আকস্মিক পরিবর্তন পৃথিবীর জন্য বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
Toto Slot
slot gacor
slot gacor
slot toto
Bacan4d Login
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot bacan4d
bacan4d togel
bacan4d game
slot gacor
bacan4d login
bacantoto 4d
toto gacor
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
slot77 gacor
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
bacansports
slot toto
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor