সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারে গোলাগুলি, এপারে পড়ল বুলেট
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারে এলোপাতাড়ি গোলাগুলি ও মর্টার শেল যুদ্ধে প্রকম্পিত হলো এপারের বেশ কয়েকটি গ্রাম। এসময় আতঙ্কে লোকজন নিরাপদে আশ্রয় নেয়।
গোলাগুলির একপর্যায়ে ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু সীমান্তে সড়কে সিএনজি গাড়িতে এসে পড়ল মিয়ানমার থেকে ছোঁড়া বুলেট। এতে ওই সিএনজির সামনের গ্লাস ফেটে যায়। তবে অক্ষত আছেন সিএনজি অটোরিকশার চালক।
শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৩টার দিকে এই ঘটনা ঘটে।
ঘুনধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ জানান, শনিবার বিকেলে সীমান্তের ওপারে রাখাইনের তুমব্রু রাইট পিলার ক্যাম্প এলাকা থেকে এলোপাতাড়ি ফায়ারিং শুরু হয়। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে এই ফায়ারিং অব্যাহত ছিল। এরমধ্যে অন্তত ১০টি মর্টারশেল নিক্ষেপ করা হয়েছে। গুলিবিনিময় হয়েছে দুই শতাধিক।
এসময় উখিয়ার বালুখালী থেকে ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদে যাচ্ছিল একটি সিএনজি অটোরিকশা। অটোরিকশাটি উত্তরপাড়া পৌঁছার পর সেখানে দাঁড় করিয়ে চালক আবু তাহের পান কিনতে দোকানে যান। এসময় হঠাৎ তার সিএনজি অটোরিকশার সামনের গ্লাসে একটি বুলেট এসে পড়ে। ওই বুলেটের আঘাতে অটোরিকশার সামনের গ্লাস ফেটে যায়।
স্থানীয় সিএনজি চালক আবু তাহেরের বাড়ি ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রুতে। তিনি জানান, পান কিনতে গিয়ে অল্পের জন্য বেঁচে গিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেন, এখানে আমাদের জীবনের নিরাপত্তা নেই। কখন মিয়ানমার থেকে ছোঁড়া গুলিতে মৃত্যু হয় তার কোনো গ্যারান্টি নেই।
স্থানীয়রা জানান, সিএনজি অটোরিকশাতে পড়া বুলেটটি তুমব্রু রাইট পিলার বরাবর অবস্থিত জান্তা বাহিনীর ক্যাম্প থেকে ছোঁড়া হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সীমান্তের বিভিন্ন সূত্র বলছে, মিয়ানমারের রাখাইনে চলমান সংঘাতে নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন জান্তা বাহিনীর প্রায় সব ক্যাম্প দখল করে নিয়েছে সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠি আরাকান আর্মি। সীমান্তের ওই এলাকায় এখন মাত্র তিনটি ক্যাম্প দখলে আছে জান্তা বাহিনীর। এগুলো হলো তুমব্রু ৩৪ পিলার রাইট ক্যাম্প, ঢেকিবুনিয়া ক্যাম্প এবং আরেকটির নাম জানা যায়নি। এই ক্যাম্পগুলো দখলে নেয়ার জন্য হামলা শুরু করেছে আরাকান আর্মি।
স্থানীয়রা বলছেন, এই ক্যাম্পগুলোর অবস্থান সীমান্ত ঘেঁষা। ক্যাম্পগুলোর এপারের সীমান্তে প্রচুর বাংলাদেশী জনবসতি রয়েছে। ক্যাম্পগুলো দখলের জন্য গোলাগুলি হলেই এপারের সীমান্তে চলে আসবে। হতাহতের ঘটনাও ঘটবে। যেটা ঘটেছে শনিবার দুপুরে।