সীমান্ত থেকে দেশের ভেতরে ১০ মাইল ‘বিজিবি সম্পত্তি’ ঘোষণার পরামর্শ
বাংলাদেশের সীমান্ত নিরাপত্তা কার্যকরভাবে রক্ষা, আন্তঃরাষ্ট্র সীমান্ত অপরাধ শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনা এবং জাতীয় রাজস্ব আয় ফাঁকি প্রতিরোধ করতে হলে সীমান্তরেখা থেকে দেশের ভেতরে ১০ মাইল পর্যন্ত বিজিবির সম্পত্তি ঘোষণা করার পরামর্শ দিয়ে রায় প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট।
শনিবার বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের নেতৃত্বাধীন একক হাইকোর্ট বেঞ্চ এ সংক্রান্ত একটি মামলার ১১ পৃষ্ঠার রায়ে এসব পরামর্শ দিয়েছেন। মামলাটির রায় অনুসারে ১৯৮৭ সালে চোরাচালানবিরোধী অভিযানে যশোর সীমান্তে ভারতীয় শাড়ি ঊদ্ধারের ঘটনায় বিজিবির দায়ের করা মামলায় আসামি জাকির হোসেনকে তিন বছরের সাজা থেকে খালাসের রায় দেওয়া হয়েছে।
রায়ের পর্যবেক্ষণে হাইকোর্ট বলেছেন, বাংলাদেশের সীমান্তের নিরাপত্তা কার্যকারভাবে রক্ষা এবং আন্তঃরাষ্ট্র সীমান্তে অপরাধ শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনতে হলে এবং জাতীয় রাজস্ব আয় ফাঁকি প্রতিরোধ করতে হলে, জাতীয় সংসদকে নিম্ন বর্ণিত পরামর্শগুলো গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করতে হবে। জাতীয় সংসদকে দেওয়া পরামর্শ হলো:
১. সীমান্ত রেখা থেকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ১০ মাইল পর্যন্ত সীমান্ত এলাকা বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের সম্পত্তি ঘোষণা করা।
২. এই ঘোষণার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত সব ব্যক্তিগত সম্পত্তির মালিকদের ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করে সমমূল্যের সরকারি খাস সম্পত্তি থেকে তাদের নামে বরাদ্দ প্রদান।
৩. সীমান্ত লাইন থেকে ৮ কিলোমিটার ভূমি সম্পূর্ণ ফাঁকা এবং সমান থাকবে। যেন এই ৮ কিলোমিটারের প্রতি ইঞ্চি ভূমি ৮ কিলোমিটার দূর থেকে পরিষ্কার দেখা যায়।
৪. সীমান্ত রেখা থেকে ৮-১০ কিলোমিটার মধ্যবর্তী স্থান বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) যাবতীয় স্থাপনা, প্রশিক্ষণসহ যাবতীয় কর্মকাণ্ডের জন্য সংরক্ষিত রাখা।
রায়ে বলা হয়েছে, ১৯৮৮ সালের ১৩ এপ্রিলের রায় ও দণ্ডাদেশ বাতিল করা হয়। আসামি ও আপিলকারীকে ওই অভিযোগের দায় থেকে অব্যাহতি তথা খালাস দেওয়া হয়। আসামি ও তার জামিনদারকে জামিননামার দায় থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হলো। এই রায়ের অনুলিপিসহ অধঃস্তন আদালতের নথি সংশ্লিষ্ট আদালতে দ্রুত পাঠাতেও রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে।
এই রায় ও আদেশের অনুলিপি অধঃস্তন আদালতের সব বিচারককে ই-মেইলের মাধ্যমে পাঠানোর জন্য রেজিস্ট্রার জেনারেলকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি এই রায় ও আদেশের অনুলিপি মহা-পরিচালক, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশকে ই-মেইলের মাধ্যমে পাঠানোর জন্য রেজিস্ট্রার জেনারেলকে নির্দেশ প্রদান করা হয়। এই রায় ও আদেশের অনুলিপি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সচিবকে এবং জাতীয় সংসদের সব সংসদ সদস্যকে ই-মেইলের মাধ্যমে পাঠানোর জন্য রেজিস্ট্রার জেনারেলকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।