Hot

সুখবর নেই চ্যালেঞ্জের পাহাড়

ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজেট ব্যবসাবাণিজ্য ও বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ তৈরিতে আশাব্যঞ্জক নয়। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বিনিয়োগের বাধা কাটানোর জন্য বাজেটে কোনো বার্তা নেই। গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, এবারের বাজেট বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ। বাজেট নিয়ে কোথাও কোনো সুখবর না থাকলেও আছে অনেক চ্যালেঞ্জ। খোদ অর্থ মন্ত্রণালয় বলছে, বাজেট বাস্তবায়নে মধ্যমেয়াদে অন্তত সাতটি চ্যালেঞ্জ দেখছে তারা।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বিবৃতিতে এ চ্যালেঞ্জগুলো উল্লেখ করা হয়েছে। উচ্চ মূল্যস্ফীতি অর্থনীতির সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে বলা হয়েছে, সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা আনতে কঠোর মুদ্রানীতির পাশাপাশি সহায়ক রাজস্ব নীতি অনুসরণ করা হচ্ছে। এসব পদক্ষেপ সত্ত্বেও মূল্যস্ফীতি ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে।

সরকারের দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জ রপ্তানি খাত। নীতি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশি রপ্তানির ওপর ট্রাম্প প্রশাসনের ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত তিন মাসের জন্য স্থগিত করলেও এটি রপ্তানিকারকদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এতে নতুন অর্থবছরে রপ্তানি খাতে ১০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন চ্যালেঞ্জিং হতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।

তৃতীয় চ্যালেঞ্জ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে জিডিপির অনুপাতে রাজস্বের নিম্নহার। বলা হয়েছে, অভ্যন্তরীণ সম্পদ সংগ্রহে সরকারের সক্ষমতার অভাব দীর্ঘমেয়াদে প্রবৃদ্ধি অর্জনে বড় বাধা সৃষ্টি করতে পারে।

চতুর্থ চ্যালেঞ্জ হিসেবে উচ্চ সুদহারের বিষয়টি তুলে ধরে বলা হয়েছে, বাজারে সুদের হার বাড়ার কারণে ব্যবসাবাণিজ্যে বাধা সৃষ্টি করছে। আগামী দিনগুলোয় মূল্যস্ফীতি না কমলে বেসরকারি বিনিয়োগ গতি হারাতে পারে; স্থবির হয়ে যেতে পারে বিদেশি বিনিয়োগ। এর ফলে বেকারত্ব বাড়বে, প্রবৃদ্ধিতেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ার ঝুঁকি রয়েছে।

খেলাপি ঋণ ও তারল্য সংকটের কারণে বর্তমানে আর্থিক খাত তীব্র চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের নীতি বিবৃতিতে। বলা হয়েছে, কিছু ব্যাংক উন্নতি করতে পারলেও বেশ কয়েকটি ব্যাংক দেউলিয়া হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। কঠোর সুশাসন প্রতিষ্ঠা, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা, আইনি পুনরুদ্ধার এবং দুর্বল ব্যাংকগুলোর একীভূতকরণ বা অধিগ্রহণে ব্যাংক সংস্কার না হলে আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতা মারাত্মক ঝুঁকিতে ফেলতে পারে। এ ছাড়া এলডিসি থেকে উত্তরণের পর বাণিজ্য সুবিধা হারানো, রপ্তানি প্রতিযোগিতা বজায় রাখা, জলবায়ু তহবিল কমে আসা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশ যে দুর্যোগঝুঁকিতে রয়েছে সে বিষয়গুলো মধ্যমেয়াদে অর্থনীতির চ্যালেঞ্জ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে নীতি বিবৃতিতে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক চিফ ইকোনমিস্ট, উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সাবেক মহাপরিচালক এম কে মুজেরী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে স্থবির অর্থনীতি সচল করতে সরকারের সামনে যে চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে তা মোকাবিলায় বড় ধরনের প্রণোদনামূলক বাজেটের প্রয়োজন ছিল। অথচ শক্ত কোনো পদক্ষেপ চোখে পড়েনি। কিছু পদক্ষেপ আছে এগুলো ব্যবসাবাণিজ্য, বিনিয়োগ বাড়াতে যথেষ্ট মনে হয়নি। সবার আকাঙ্ক্ষা ছিল অর্থনীতি সচল হবে, ব্যবসাবাণিজ্য-বিনিয়োগে গতি আসবে, মানুষের কর্মসংস্থান ও আয় বাড়বে; ঘোষিত বাজেটে সেই জন আকাঙ্ক্ষা পূরণে কোনো খাতের জন্যই সুখবর মেলেনি।’

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

bacan4d slot toto