সুদানে গৃহযুদ্ধে আমিরাতের হস্তক্ষেপ নিয়ে টানাপোড়েন
সুদানের গৃহযুদ্ধে সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) হস্তক্ষেপ করার অভিযোগ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়েছে। সুদানে রাষ্ট্রক্ষমতায় আসীন দেশটির সেনাবাহিনী প্রকাশ্যে আমিরাতের সমালোচনা করছে। সম্প্রতি খার্তুমে নিযুক্ত আমিরাতের ১৫ কূটনৈতিককেও বহিষ্কার করেছে তারা।
গত এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে সুদানের সেনাবাহিনী এবং আধা সামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে সশস্ত্র সংঘাত শুরু হয়। এই সংঘাত এখন দেশটিতে গৃহযুদ্ধের রূপ নিয়েছে। চলমান সংঘাতে ১২ হাজারের বেশি প্রাণহানি ও কয়েক লাখ মানুষ উদ্বাস্তু হয়েছেন।
গৃহযুদ্ধে হস্তক্ষেপ করার অভিযোগ তুলে গত নভেম্বরে আমিরাতের সমালোচনা করেন সুদানের উপ-সেনাপ্রধান জেনারেল ইয়াসের আল-আত্তা। আমিরাতকে ‘মাফিয়া রাষ্ট্র’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, আরএসএফ ও এর প্রধান মোহাম্মদ হামদান দাগলোর পক্ষ নিয়ে তারা (আমিরাত) মূলত ‘শয়তানের পথই বেছে নিয়েছে’।
আমিরাত রাশিয়ার ভাড়াটে সেনাদল ভাগনারের মাধ্যমে চাদ, উগান্ডা ও মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র দিয়ে আরএসএফকে অস্ত্র পাঠাচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন জেনারেল ইয়াসের আল-আত্তা।
গৃহযুদ্ধ শুরুর পর থেকেই সামরিক বিশ্লেষকেরা সতর্ক করছিল, এই পথ দিয়ে আরএসএফ বিদেশি অস্ত্র পাচ্ছে। তবে নভেম্বরের আগপর্যন্ত সুদানের সেনাবাহিনী বিষয়টি নিয়ে নীরবই ছিল।
যুক্তরাজ্যে রয়্যাল ইউনাইটেড সার্ভিস ইনস্টিটিউটের সহযোগী ফেলো জালেল হারচাউ। সম্প্রতি বুরহান শিবির (সেনাপ্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান) সতর্ক থেকে বিষয়টি নিয়ে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়েছে। লিবিয়ার হাফতার, রাশিয়া ও আমিরাতের মতো বড় খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য বিরোধে জড়ায়নি। তবে সেই অবস্থান থেকে সরে এসে সেনাবাহিনী প্রকাশ্যে এ অভিযোগ তুলছে। আমিরাতের ১৫ কূটনীতিককেও বহিষ্কার করেছে তারা।
আরএসএফকে আমিরাত অস্ত্র সরবরাহ করছে, গত আগস্টে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালও এ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। তবে সে সময় এ অভিযোগ অস্বীকার করেছিল আমিরাত। আমিরাত তখন বলেছিল, সুদানের চলমান এই সংঘাতে সংযুক্ত আরব আমিরাত কারও পক্ষ নেয়নি।