Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
Bangladesh

সুযোগ সন্ধানীরা ভিড়তে চাইছে বিএনপিতে

  • অর্থ লেনদেনের অভিযোগ
  • নির্দেশনা মানছেন না তৃণমূল থেকে কেন্দ্রীয় নেতারা
  • প্রমাণ পেলে বহিষ্কার, পদ স্থগিতের মতো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে : রিজভী

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দিন তিনেক পর বিএনপির পক্ষ থেকে অনুপ্রবেশকারীদের বিষয়ে দলের নেতাকর্মীদের সতর্ক করা হয়েছে। ওয়ার্ড থেকে জাতীয় পর্যায়ে বিএনপি, এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের যেকোনো পর্যায়ের কমিটিতে অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী বা অরাজনৈতিক ব্যক্তিকে যোগদান করানো যাবে না বলে নির্দেশনা দেওয়া হয়। কিন্তু সেই নির্দেশ মানা হচ্ছে না। বরং পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে রঙ বদলে বিএনপিতে ভেড়ার চেষ্টা করেছেন ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের মাঠপর্যায়ের নেতারা।

বিএনপির স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতাদের কেউ কেউ সুবিধা নিয়ে এসব অনুপ্রবেশকারীকে দলের ভেড়ার সুযোগ করে দিচ্ছেন। এখন পর্যন্ত এক হাজারের বেশি নেতার বিরুদ্ধে নানা ধরনের ব্যবস্থা নিলেও অনুপ্রবেশ থামানো যাচ্ছে না। দলের শৃঙ্খলা ও ভাবমূর্তি রক্ষায় ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি বাস্তবায়নের পথে হাঁটতে হচ্ছে বিএনপিকে।

বিএনপির দপ্তর বলছে, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এ পর্যন্ত বিএনপিতে ঠিক কতজন অনুপ্রবেশ করেছে, কাদের হাত ধরে দলে ঢুকেছে তার সঠিক পরিসংখ্যান নেই দপ্তরে।

তৃণমূল পর্যায়ে খোঁজ নিয়ে বিএনপিতে অনুপ্রবেশের কিছু ঘটনা জানা গেছে। এর মধ্যে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীর আমিশাপাড়া ইউনিয়নে সাখাওয়াত হোসেন সাইমন নামের স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতা আগস্টে ইউনিয়নের নিজ এলাকা আবিরপাড়ায় বিএনপির শান্তি সমাবেশে বক্তব্য রাখেন। এ সুযোগ দেওয়ার জন্য তিনি আমিশাপাড়া ইউনিয়ন শাখা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম বাবলুকে ৫০ হাজার টাকা দিয়েছেন। সাইমনকে স্থানীয় বিএনপির রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠা করতে উঠেপড়ে লেগেছেন বাবলু।

তথ্য বলছে, ৫ আগস্ট দেশ থেকে পালিয়ে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনের কর্মচারী জাহাঙ্গীর আলম ওরফে পানি জাহাঙ্গীর দুর্নীতির মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার মালিক হওয়ার কথা শেখ হাসিনা নিজেই জানিয়েছেন। জাহাঙ্গীর যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে, জাহাঙ্গীর কালো টাকা সাদা করার কাজটি যার মাধ্যমে করতেন, তিনিই হচ্ছেন এই সাখাওয়াত হোসেন সাইমন। তিনি নিজেও কোটিপতি। সোনাইমুড়ী এলাকার সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) এইচএম ইব্রাহিম ও জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে তার কয়েকটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরালও হয়েছে। শেখ হাসিনা সৌদি আরব গেলে সাইমনকেও সেখানে শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা যায়। অন্যদিকে বিএনপি নেতাদের সঙ্গেও তার বহু ছবি প্রকাশ পেয়েছে। সাইমন সৌদি আরব থাকেন। তিনি এলাকায় আসা-যাওয়া করেন।

অভিযোগ রয়েছে, এমপি ইব্রাহীম ও আমিশাপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আলমগীরের সহায়তায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সাবেক সদস্য যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী মাসুদ রানার বাড়িতে তার মায়ের ওপর হামলা করান এই সাইমন। এ ঘটনায় আমিশাপাড়ার রুহুল আমিন ভান্ডারীর ছেলে আরমানকে ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়েছে। সাইমন সৌদি আরব থেকে তার অবৈধ স্বর্ণ আনার সহযোগী আরমানকে মামলায় ফাঁসিয়ে কারাগারে পাঠান। আরমানের ঢাকার বাসা আমিনবাজার এলাকার আইছাপাড়া দাই বাড়ির এলাকায়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার পল্টনে শতাব্দী টাওয়ারে অফিস খুলে দুবাইতে হাউজিং ব্যবসা চালু করেন সাইমন। রাজধানীর কাজিপাড়া এলাকায় পাঁচতলা বাড়ি, রাজধানীতে কয়েকটি ফ্ল্যাটের মালিক তিনি। 

তথ্য বলছে, ভোটবিহীন সাবেক এমপি এইচএম ইব্রাহিমকে মামা সম্বোধন করে বিশেষ সুযোগ-সুবিধা আদায় করতেন সাইমন। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বক্তব্যও রাখতেন তিনি।

আমিশাপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বাবলুর বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তিনি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রধান উপদেষ্টা যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সেলিমের কাছে থেকে ৪ লাখ টাকা নিয়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় তৌহিদ হত্যায় অভিযুক্ত ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আলমগীর ও সাধারণ সম্পাদক নজরুল, স্থানীয় নেতা পারভেজ, খোকনসহ কয়েকজনকে এলাকায় থাকার নিশ্চয়তা দিয়েছেন।

জানতে চাইলে জহিরুল ইসলাম বাবলু দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাইমন ছাত্রজীবনে ছাত্রদল করলেও দীর্ঘ সময় বিএনপির সঙ্গে জড়িত নয়। তবে আওয়ামী লীগ আমলে তার সঙ্গে পানি জাহাঙ্গীরের মেলামেশা ছিল, এটি এলাকার সবাই জানে। আর যে সমাবেশে আমি ও সাইমন বক্তব্য দিয়েছি, বলা যায় সেদিন হঠাৎ করে তাকে এনে বক্তব্য দেওয়ানো হয়।’ তবে কারা তাকে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে সেটা তিনি জানাতে পারেননি। তার বিরুদ্ধে অর্থ নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের এলাকায় থাকার নিশ্চয়তা দেওয়ার অভিযোগ ভিত্তিহীন বলেও দাবি করেন তিনি।

আর সাইমন দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমি সৌদি আরবের আলকাশিমের উনিজা স্টেট বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক। জাহাঙ্গীরের সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। এমপি ইব্রাহীম আমার নানা বাড়ির লোক। তাই তাকে মামা সম্বোধন করতাম।’ বিএনপির অনেক বড় নেতা তাকে চেনেন বলে দাবি করেন সাইমন।

অনুপ্রবেশকারীদের সহায়তাকারীদের একজন হলেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদ্য সাবেক যুগ্ম সম্পাদক হাজি মোস্তফা জামান। গত ৫ অক্টোবর রাজধানীর তুরাগ থানায় ৫২ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তিনি। ওই সমাবেশে আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন পদধারী নেতার উপস্থিত থাকা নিয়ে নানা বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপি এক নেতা জানান, ওই সমাবেশে আওয়ামী লীগের যারা উপস্থিত ছিলেন তারা এখন ভোল পাল্টে ফেলেছেন। তুরাগের বাউনিয়া এলাকাটি ফ্যাসিবাদ সরকারের সাবেক এমপি ও উত্তরার ছাত্র-জনতা হত্যার মূল অভিযুক্ত হাবিব হাসানের নিজের ও নানাবাড়ির এলাকা। সেখানে গত ১৮ বছর বিএনপির তেমন কোনো কার্যক্রম চালানো যায়নি। যারা বিএনপিমনা ছিলেন তারাও আওয়ামী লীগের সঙ্গে মিলেমিশে একাকার হয়ে ছিলেন।

প্রতিবাদ সমাবেশের মূল মঞ্চে বসা ছিলেন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগ নেতা সোহেল রানা ও সানাউল্লাহ হাবিব হাসানের ভাগ্নিজামাই ইসহাক, কৃষক লীগের তুরাগ থানার ধর্মবিষয়ক সম্পাদক ইসলাম উদ্দিন, বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের তুরাগ থানার সাধারণ সম্পাদক আশরাফ খান। আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়া আবু তাহের আবুল খানসহ অনেকেই।

এ বিষয়ে মোস্তফা জামানের সঙ্গে বেশ কয়েকবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

মাদারীপুরের শিবচরে স্থানীয় বিএনপি নেতা কামাল জামান নুরুদ্দীন মোল্লার বিরুদ্ধে অভিযোগ, ছাত্র আন্দোলনে হত্যা মামলার আসামি ও কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান মোহসেন উদ্দিন সোহেলকে বিএনপিতে যোগদান করিয়েছেন তিনি। সোহেল ব্যাপারীর সঙ্গে আরও যোগ দেন হত্যা মামলার আরেক আসামি স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি সজীব হাওলাদার, কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা মোতাহার ব্যাপারী, বজলু ব্যাপারী, শাজাহান মোল্লা, সাইদুর রহমান বাদল মুন্সী, মো. খলিল মুন্সী, মো. সালাউদ্দিন মোল্লা, নান্দু মোল্লা, মোস্তাক ব্যাপারী, ইয়াকুব ব্যাপারী, জুলহাস ব্যাপারী, যুবলীগ নেতা আলী ব্যাপারীসহ আরও বেশ কয়েকজন।

খুলনা মহানগরের ১৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি প্রার্থী মোস্তফা কামালের হাত ধরে বিএনপির সুধী সমাবেশে যোগ দেন আওয়ামী মতাদর্শে বিশ্বাসী ও তার ভাগ্নে হেমায়েত মল্লিক ঝানু।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবউল আলম হানিফের ঘনিষ্ঠ কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার শেখ সাদী ২০০৮ সাল থেকে হানিফের সহায়তায় রাজধানীতে হাউজিং ব্যবসা করে আসছেন। আরেক সাবেক এমপি সুলতানা তরুণের সঙ্গেও তার ঘনিষ্ঠতা ছিল। দুই এমপির সহযোগিতায় অ্যাশিউর ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন কোম্পানি নামে হাউজিং ব্যবসা গড়ে তোলেন। কিন্তু শেখ সাদী নব্য বিএনপি হিসেবে আবির্ভূত হয়ে কুষ্টিয়া-৪ (কুমারখালী-খোকসা) আসনে সংসদ সদস্য হতে এলাকায় শোডাউন দেন। স্থানীয় বিএনপির তৃণমূলের নেতাকর্মীদের তার শোডাউনে অংশ নিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

বিএনপির দপ্তর বলছে, অনুপ্রবেশে সহায়তাসহ বিভিন্ন অভিযোগে এ পর্যন্ত ১ হাজার ২৩ জন নেতার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৫২৩ জনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ, ৪৩৭ জনকে বহিষ্কার, ২৪ জনের পদ স্থগিত, ৩৫ জনকে সতর্ক এবং ৪ জনকে সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

অনুপ্রবেশে সহায়তাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘এ পর্যন্ত কয়েকশ নেতার দলীয় পদে স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি প্রায় সহস্রাধিক নেতাকর্মীকে বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।’

বিএনপি দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, মহানগর, জেলা ও উপজেলার বিএনপির নেতাকর্মীরা সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণসহ অভিযোগ জমা দিলে অনুপ্রবেশকারী এবং তাদের সহায়তাকারী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এমন কয়েকটি ঘটনার মধ্যে রয়েছে ঢাকা মহানগর উত্তরের সাবেক আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আলাউদ্দিন সরকার টিপুকে কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি ঢাকার দক্ষিণখান স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা সাজ্জাদ হোসেন জাকির ও আবদুল হান্নানকে বিএনপির দোয়া মাহফিলে যোগ দেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন।

৮ আগস্ট বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বিএনপিতে অনুপ্রবেশে বিষয়ে নেতাকর্মীদের সতর্ক করা হয়। দল, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের দলীয় নির্দেশনা অনুসরণ করার নির্দেশ দেন তিনি।

জানতে চাইলে রুহুল কবির রিজভী দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে কোনো অভিযোগ এলে আমরা সেটি আমলে নিয়ে যাচাই-বাছাই করছি। ন্যূনতম কোনো সংশ্লিষ্টতা পেলেই তার কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হচ্ছে। প্রমাণিত হলে বহিষ্কারাদেশ দেওয়া হচ্ছে। পদ-পদবি স্থগিত করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কঠোর নির্দেশনা রয়েছে।’ 

তিনি বলেন, ‘সময় ভালো হলে দুধের মাছিরা আসবেই। অনুপ্রবেশ বা বিএনপির নাম ভাঙিয়ে ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে। বিশেষ করে প্রশাসন, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে খবরদারি করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।’

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacantoto4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d toto
slot toto
bacan4d
bacan4d
togel online
Toto Slot
saraslot88
Bacan4d Login
bacantoto
Bacan4d Login
bacan4d
bacan4drtp
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot maxwin
slot bacan4d
slot maxwin
bacan4d togel
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d login
bacantoto 4d
slot gacor
bacansport
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot77 gacor
JAVHD
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
gacor slot
slot gacor777
slot gacor bacan4d
bacan4d
bacansport
toto gacor
bacan4d
bacansports login
slot maxwin
slot dana
slot gacor
slot dana
slot gacor
bacansports
bacansport
bacansport
bacansport
bawan4d
bacansports
bacansport
slot gacor
judi bola
slot maxwin
slot maxwin
bacansport
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot demo
slot gacor
slot gacor
slot gacor
toto slot
slot gacor
demo slot gacor
slot maxwin
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot toto