Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
Bangladesh

‘সুরক্ষিত’ রয়েই গেল কানাডার বেগমপাড়া

কানাডার হালনাগাদ মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০২৫ অনুযায়ী যেকোনো দেশের পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধার অন্য অনেক দেশের তুলনায় অনেক অনুকূলে রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

  • ১৮টি পাচারের ঘটনা সুনির্দিষ্ট করা হয়েছে
  • সম্পদ উদ্ধারে এখনো কোনো উদ্যোগ নেই
  • পাচারকৃত অর্থ ফিরিয়ে আনতে সহায়ক কানাডার মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন

দেশ থেকে অর্থ পাচারের কথা এলেই যে দেশটির কথা সবার আগে চলে আসে, তা হলো ‘কানাডার বেগমপাড়া’। পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, সংসদ সদস্য, রাজনৈতিক ব্যক্তি, ঠিকাদার, আমলার দেশ থেকে অর্থ পাচার করে কানাডায় বাড়ি করে নির্বিঘেœ বসবাস করার অভিযোগ উঠেছে। সরকারের অনুরোধে সিঙ্গাপুর, যুক্তরাজ্য, আরব আমিরাতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাচারকারীদের সম্পদ জব্দ করা হয়েছে। পতিত সরকারের পতনের এক বছর অতিবাহিত হলেও কানাডায় পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারের তেমন উদ্যোগ এখনো নেয়া হয়নি। বাংলাদেশের আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট থেকে প্রাথমিকভাবে কানাডায় এমন ১৮টি পাচারের ঘটনাও শনাক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু এ বিভাগ থেকে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকেও সরিয়ে দিয়েছে ছুটিতে পাঠানো বহুল আলোচিত ও বিতর্কিত বিএফআইইউ প্রধান শাহীনুল ইসলাম। অথচ কানাডার হালনাগাদ মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০২৫ অনুযায়ী যেকোনো দেশের পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধার অন্য অনেক দেশের তুলনায় অনেক অনুকূলে রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সিপিডিসহ একাধিক গবেষণা সংস্থা পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর জানিয়েছিল, বাংলাদেশ থেকে ১৫ বছরে ২৮ লাখ কোটি টাকা সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা পাচার হয়েছে। ঘুষ, দুর্নীতি ও ব্যাংক লুট করে বিদেশে পাচার করেছে লুটেরারা। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রাথমিক তদন্তে একমাত্র ব্যাংক ডাকাত এস আলমই ১১টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে সোয়া দুই লাখ কোটি টাকা পাচার করেছে। শেখ পরিবারের ঘনিষ্ঠ ও দরবেশ হিসেবে খ্যাত সালমান এফ রহমান, ছোট দরবেশ হিসেবে খ্যাত ব্যাংকের উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিএবির একটানা দেড় যুগ দখলে রাখা এক্সিম ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান নাসা গ্রুপের নজরুল ইসলাম মজুমদার, সামিট গ্রুপ, সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান, জেমকন গ্রুপ, শিকদার গ্রুপ, সাবেক প্রধানমন্ত্রী হাসিনা, বোন রেহেনা ও শেখ পরিবারসহ ১২টি গ্রুপের বিশদ তদন্তের আওতায় আনা হয়েছে। দুদকের অনুরোধে এসব ব্যক্তি ও তাদের প্রতিষ্ঠানের নামে থাকা দেশী-বিদেশী সম্পদ জব্দের নির্দেশ দেয়া হয়েছে আদালত থেকে। ইতোমধ্যে যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুর, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে থাকা পাচারকারীদের অর্থ জব্দ করেছে ওই সব দেশ। বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধে এসব সম্পদ জব্দ করা

এস আলমের দেশী-বিদেশী যত সম্পদ জব্দ : এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো বিতর্কিত এস আলম গ্রুপের কর্ণধার মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তার স্ত্রী ফারজানা পারভীনের নামে সাইপ্রাস ও ব্রিটেনে থাকা বিদেশী সম্পদ জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। দুদকের পৃথক তিন আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৪ জুন ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো: জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন। জব্দ হওয়া সম্পত্তিগুলোর মধ্যে রয়েছে সাইপ্রাসের লিমাসল জেলায় অবস্থিত একটি দোতলা বাড়ি। এ ছাড়া ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডসে হ্যাজেক ইন্টারন্যাশনাল পিটিই লিমিটেডে তাদের বিনিয়োগকৃত তিন লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার ও পিকক প্রপার্টি হোল্ডিংসসহ ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডসে আরো ১৮টি কোম্পানিতে বিনিয়োগ জব্দের নির্দেশ দেয়া হয়। জার্সি ট্রাস্ট কোম্পানির অধীনে ছয়টি ট্রাস্টে থাকা বিভিন্ন অঙ্কের বিনিয়োগও জব্দের আওতায় আনা হয়েছে।

এ দিকে গত ১০ জুলাই ব্যবসায়ী এস আলম, তার স্ত্রী ফারজানা পারভীন, তাদের সন্তানের নামে সিঙ্গাপুরে থাকা ৬৪টি ব্যাংক হিসাব ও ১০ কোম্পানির শেয়ার অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত। ওই দিন এ আদেশ দেন ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালত। দুদকের পক্ষে এ আবেদন করেন উপপরিদর্শক তাহসিন মোনাবিল খান।

অবরুদ্ধের আদেশের মধ্যে রয়েছে সাইফুল আলমের নামে সিঙ্গাপুরের বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে মোট ৪০টি ব্যাংক হিসাব এবং একাধিক বীমা পলিসি। তার স্ত্রীর নামে আরো চারটি ব্যাংক হিসাব এবং তাদের দু’জনের যৌথ নামে দু’টি প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৬ দশমিক ৮ কোটি সিঙ্গাপুর ডলার বিনিয়োগ। এ ছাড়া রয়েছে সাইফুল আলমের চারটি এবং তার স্ত্রী আরো চারটি কোম্পানির পরিচালক ও শেয়ারহোল্ডার। তার ছেলে আশরাফুল আলমের নামে রয়েছে দু’টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ ও হিসাব, পাশাপাশি একটি কোম্পানির শেয়ারহোল্ডার এবং পরিচালক পদ। আরেক সন্তান আহসানুল আলম একটি কোম্পানির পরিচালক পদ ও শেয়ারহোল্ডার এবং বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে রয়েছে মোট আটটি ব্যাংক হিসাব ও বীমা পলিসি।

পরিবারের অন্য সদস্য আহমেদ বেলালের নামে রয়েছে দু’টি ব্যাংক হিসাব এবং মেয়ে মাইমুনা আলমের নামে একটি বীমা পলিসি ও সিঙ্গাপুরে ৫৪ হাজার ৪০০ সিঙ্গাপুরি ডলার মূল্যের বিভিন্ন ধাতব সম্পদ (মেটাল)। এ ছাড়া ছোট সন্তান আসাদুল আলম মাহিরের নামে রয়েছে আরো একটি ব্যাংক হিসাব।

এর আগে ৯ জুলাই এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম এবং তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে থাকা আরও ৫৩টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এসব ব্যাংক হিসাবে ১১৩ কোটি ৯ লাখ ৮২ হাজার ৮৬৮ টাকা জমা রয়েছে। এর বাইরে গত ২৩ এপ্রিল তার ৪০৭ কোটি টাকা মূল্যের ১৫৯ একর জমি জব্দের আদেশ দেন আদালত। গত ১৭ এপ্রিল এস আলমের এক হাজার ৩৬০টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দেন আদালত। এসব হিসাবে দুই হাজার ৬১৯ কোটি সাত লাখ ১৬ হাজার টাকা রয়েছে।

গত ১০ মার্চ এস আলমের এক হাজার ছয় বিঘা জমি জব্দের আদেশ দেন আদালত। গত ৯ এপ্রিল তার ৯০ বিঘা জমি জব্দের আদেশ দেয়া হয়েছে। একই দিন আদালত তার ঘনিষ্ঠজনদের নামে থাকা ৩৭৪টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা হয়েছে।

গত ২৩ ফেব্রুয়ারি তাদের আট হাজার ১৩৩ কোটি ৫৬ লাখ ৭২ হাজার টাকা মূল্যের শেয়ার অবরুদ্ধের আদেশ দেন আদালত। গত ৩ ফেব্রুয়ারি ৩৬৮ কোটি ২৫ লাখ ৬৩ হাজার পাঁচ শ’ টাকা মূল্যের ১৭৫ বিঘা সম্পদ জব্দের আদেশ দেন আদালত। গত ১২ ফেব্রুয়ারি ৪৩৭ কোটি ৮৫ লাখ দুই হাজার ২৭৪টি শেয়ার অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এসব শেয়ারের মূল্য পাঁচ হাজার ১০৯ কোটি টাকা। গত ১৬ জানুয়ারি এস আলম ও তার পরিবারের সদস্যদের তিন হাজার ৫৬৩ কোটি ৮৪ লাখ ২১ হাজার টাকার শেয়ার অবরুদ্ধ করার আদেশ দেন একই আদালত।

যুক্তরাজ্যে সাইফুজ্জামানের জব্দ করা সম্পদের মূল্য ১০২৫ কোটি টাকা : এ দিকে যুক্তরাজ্যে থাকা বাংলাদেশের সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর সম্পদ জব্দ করেছে দেশটির ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (এনসিএ)। এনসিএর জব্দ করা সম্পদের মধ্যে ৩৪৩টি ফ্ল্যাট বা প্লটের মূল্য প্রায় ৭৩ দশমিক ১৫ মিলিয়ন পাউন্ড, যা বাংলাদেশী মুদ্রায় এক হাজার ২৫ কোটি টাকা। এ ছাড়া ব্যাংক আমানতের পরিমাণ ২ দশমিক ৫ মিলিয়ন পাউন্ড, যা প্রায় ৩৫ কোটি টাকার সমপরিমাণ। গত ১৬ জুন এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান দুদকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুল মোমেন। যুক্তরাজ্যে থাকা সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদের ৩৪৩টি ফ্ল্যাট বা প্লট এবং ১০টি স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের শেয়ার গত বছরের ১৬ অক্টোবর আদালতের আদেশে ক্রোক করা হয়। ওই ক্রোকাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাজ্যের সেন্ট্রাল অথরিটি বরাবর মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট রিকোয়েস্ট পাঠানো হয়। জেডএস প্রোপার্টিজের প্রায় মূল্য ৭৩ দশমিক ১৫ মিলিয়ন পাউন্ড, যা বাংলাদেশী মুদ্রায় ১০২৫ কোটি টাকা। ব্যাংক আমানতের পরিমাণ ২ দশমিক ৫ মিলিয়ন পাউন্ড, যা প্রায় ৩৫ কোটি টাকারও বেশি হবে।

সালমান এফ রহমানের সম্পদ জব্দ : পতিত প্রধানমন্ত্রী হাসিনার বেসামরিক, শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা ও বেক্সিমকো গ্রুপের চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমানের নামে লন্ডনে থাকা স্থাবর সম্পদ জব্দ করেছেন আদালত। একইসাথে বিদেশী দু’টি ব্যাংক হিসাব ও কোম্পানির শেয়ার অবরুদ্ধ করা হয়েছে। চলতি বছরের ১০ মার্চ ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো: জাকির হোসেন গালিবের আদালত দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন। সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে দুদকের উপ-পরিচালক মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীন এ আবেদন করলে আদালত আবেদনটি মঞ্জুর করেন।

দুদক সূত্র জানায়, সালমান এফ রহমান ও অন্যদের বিরুদ্ধে প্লেসমেন্ট শেয়ার কারসাজি ও প্রতারণার মাধ্যমে শেয়ারহোল্ডারদের হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট, অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে দেশের সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন ব্যাংক থেকে প্রায় ৩৬ হাজার কোটি টাকা ঋণ গ্রহণপূর্বক আত্মসাৎসহ হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগ করা হয়েছে। অনুসন্ধানকালে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট সালমান এফ রহমান, তার পরিবারের সদস্য ও ঘনিষ্ঠ অন্যদের নামে ব্যাংক হিসাবগুলোর তথ্য পাওয়া যায়। তারা এসব ব্যাংক হিসাবগুলো হস্তান্তর, স্থানান্তর বা রূপান্তর করার চেষ্টা করছেন। এতে সফল হলে, অনুসন্ধানের সব উদ্দেশ ব্যর্থ হবে। তাই সুষ্ঠু অনুসন্ধান ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার স্বার্থে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট সালমান এফ রহমানের স্থাবর সম্পদ জব্দ ও অস্থাবর সম্পদ অবরুদ্ধ করা আবশ্যক। এর আগে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সালমান এফ রহমান, তার পরিবারের সদস্য ও তার সহযোগীদের নামে থাকা ৩৭২টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এসব হিসাবে সর্বমোট ৫৫ কোটি ৬ লাখ ৪৭ হাজার ১১৭ টাকা রয়েছে। গত ১৩ আগস্ট রাজধানীর সদরঘাট এলাকা থেকে নৌপথে পালানোর সময় সালমান এফ রহমানকে গ্রেফতার করা হয়। বর্তমানে তিনি কারাগারে আটক আছেন।

নাসা গ্রুপের নজরুলের তিন দেশের সম্পদ জব্দের আদেশ : নাসা গ্রুপের কর্ণধার ও এক্সিম ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারের নামে যুক্তরাজ্যে থাকা ৫৯৮ কোটি টাকার সম্পদ জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এর মধ্যে যুক্তরাজ্য, আইল অব ম্যান ও জার্সিতে তার সম্পদ রয়েছে। চলতি বছরের ৯ মার্চ ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো: জাকির হোসেন গালিবের আদালত দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন। দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আক্তারুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন। জব্দ হওয়া স্থাবর সম্পদের মধ্যে যুক্তরাজ্যে ৩৭ দশমিক ৯৫ মিলিয়নের পাঁচটি বাড়ি রয়েছে। এ ছাড়া আইল অব ম্যানে একটি ও জার্সিতে একটি বাড়ি রয়েছে। পাশাপাশি আইলে অব ম্যানে থাকা একটি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা হয়েছে। এর আগে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ৭৮১ কোটি ৩১ লাখ ২২ হাজার ৪৫৪ টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শাহজাহান মিরাজ বাদি হয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলায় নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে দুদক আইন ২০০৪-এর ২৭ (১) ধারা তৎসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭ এর ৫ (২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়।

এর আগে ৬ মার্চ নজরুল ইসলাম মজুমদারের ছয়টি বাড়ি ও আটটি প্লট জব্দের আদেশ দেন আদালত। পাশাপাশি ৫৫ কোম্পানির ৫৬ কোটি ৬ লাখ ৫৮ হাজার শেয়ার অবরুদ্ধ করার আদেশ দেন আদালত। তার আগে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি নজরুল ইসলাম মজুমদারের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদক মামলা করে।

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত নজরুল ইসলাম মজুমদার। গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ২৫ আগস্ট তার ব্যাংক হিসাব স্থগিত করা হয়। একই সাথে নজরুল ইসলামের স্ত্রী নাসরিন ইসলাম ও তাদের ছেলেমেয়ের ব্যাংক হিসাবও স্থগিত করা হয়। ১ অক্টোবর রাতে রাজধানীর গুলশান থেকে নজরুল ইসলামকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

সুরক্ষিত কানাডার বেগম পাড়া : বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাচার হওয়া সম্পদ জব্দের আদেশ দেয়া হলেও সুরক্ষিত রয়েছে কানাডার বেগম পাড়া। অথচ অর্থ পাচারের প্রসঙ্গ এলে সবচেয়ে আগে যে দেশের নাম আসে সেটি হলো কানাডা। অভিযোগ রয়েছে, এ দেশে বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচার করে দুর্নীতিবাজ, ব্যাংক ডাকাতরা বাড়ি গাড়ি করেছেন, যেটাকে বেগম পাড়া নামে খ্যাতি লাভ করেছে। সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট বা বিএফআইইউ থেকে কানাডায় সুনির্দিষ্ট ১৮টি অর্থ পাচারের তথ্য বের করা হয়েছিল। দেশটির কাছে বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচারকারীদের তথ্যও চাওয়া হয়েছে। কিন্তু বিএফআইইউ থেকে সংশ্লিষ্ট একজন পরিচালককে বদলি করে অন্য বিভাগে বদলি করে দিয়েছে ছুটিতে যাওয়া বিতর্কিত ভিডিও ও নানা দুর্নীতির হোতা বিএফআইইউ প্রধান শাহীনুল ইসলাম। শুধু পরিচালককেই বদলি করা হয়নি, ব্যাংক ডাকাত এস আলমের অর্থ পাচারের তদন্ত টিমের দলনেতাকেও বদলি করে দেয়া হয়। বদলি করা হয় টাকশালের আওয়ামী লীগ আমলের একজন বিতর্কিত ঠিকাদারের বিরুদ্ধে তদন্ত করা চৌকস কর্মকর্তাকে। বর্তমানে অর্থ মন্ত্রণালয় গঠিত একটি কমিটি শাহীনুলের বিষয়ে তদন্ত করছে। ইতোমধ্যে তদন্তকমিটির রিপোর্টও জমা দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d
bacan4d
bacan4d slot gacor
bacan4d slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
toto 4d
slot toto
slot gacor
toto slot
toto 4d
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d toto
slot toto
bacan4d
bacan4d
togel online
Toto Slot
saraslot88
Bacan4d Login
bacantoto
Bacan4d Login
bacan4d
bacan4drtp
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot maxwin
slot bacan4d
slot maxwin
bacan4d togel
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d login
bacantoto 4d
slot gacor
bacansport
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot77 gacor
JAVHD
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
gacor slot
slot gacor777
slot gacor bacan4d
bacan4d
bacansport
toto gacor
bacan4d
bacansports login
slot maxwin
slot dana
slot gacor
slot dana
slot gacor
bacansports
bacansport
bacansport
bacansport
bawan4d
bacansports
bacansport
slot gacor
judi bola
slot maxwin
slot maxwin
bacansport
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot demo
slot gacor
slot gacor
slot gacor
toto slot
slot gacor
demo slot gacor
slot maxwin
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacansport
slot gacor
bacansport
slot gacor
slot gacor
bacan4d
slot gacor
paito hk
bacan4d
slot gacor
bacansports
slot gacor
fenomena1688
pasaran togel
bacan4d
slot demo
bacan4d
slot toto
slot toto
slot toto