সূর্যের পিঠে ২ লাখ কিলোমিটার দীর্ঘ ক্ষত
বিজ্ঞানীরা দেখলেন, সূর্যের পৃষ্ঠদেশে প্রায় ২ লাখ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে গভীর ক্ষত তৈরি হয়েছে। বিজ্ঞানীরা যাকে বলছেন সানস্পট বা সৌরকলঙ্ক। ওই জায়গায় সৌররশ্মিরা খুবই উত্তেজিত। প্রতি মুহূর্তে গনগনে আগুনে বায়ু বেরিয়ে আসছে সেই ক্ষতের জায়গা থেকে। ক্ষতের আশপাশের এলাকায় তুমুল ঝড় উঠছে। এই সৌরঝড় ছিটকে বেরোচ্ছে সূর্য থেকে। ছড়িয়ে পড়ছে মহাকাশে।
১৮৫৯ সালে সূর্যের পিঠে প্রথম বিশাল কালো দাগ বা ক্যারিংটন সানস্পট লক্ষ্য করা গিয়েছিল। তারপর থেকে বহুবারই সৌরকলঙ্ক দেখেছেন বিজ্ঞানীরা। এবারে যে সানস্পট তৈরি হয়েছে তার নাম দেয়া হয়েছে এআর৩৬৬৪।
কিছুদিন আগেই ন্যাশনাল ওসেনিক অ্যান্ড অ্যাটমস্ফেরিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এনওএএ) জানিয়েছিল, সূর্যের পরিমণ্ডলে একটি ছিদ্র লক্ষ্য করা গেছে। সেই ফাটল পথেই প্রবল বেগে সৌরবায়ু ছিটকে পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসবে। এর প্রভাব পড়তে পারে পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রে।
সূর্য কখন রেগে উঠবে এবং গনগনে আগুনের ফুলকি ছুড়ে দেবে তা নির্ভর করে সৌরকলঙ্ক (সানস্পট), সৌরবায়ু (সোলার উইন্ড), সৌরঝড় (সোলার স্টর্ম), করোনাল মাস ইজেকশন (সিএমই)-এর উপরে। এরা সূর্যের ভয়ঙ্কর সব অস্ত্র যাদের পরাস্ত করা সম্ভব নয় কোনোভাবেই। সৌরঝড়ের সামান্য ঝাপটাও যদি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে এসে লাগে তাহলে তছনছ হয়ে যাবে সব। উড়ে যাবে জিপিএস, রেডিও নেটওয়ার্ক থেকে যোগাযোগের সমস্ত মাধ্যম। সানস্পট বা সৌরকলঙ্ক জানান দিতে পারে, ঠিক কখন সূর্য তেতে উঠবে, তার রোষানলে দাপুটে সৌরঝড় আর সৌরবায়ু ছিটকে বেরবে মহাকাশে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, অসম্ভব শক্তিশালী সৌরকণারা যদি কোনোভাবে পৃথিবীর অনেক কাছাকাছি চলে আসে তাহলে পৃথিবীর চৌম্বকক্ষেত্রের সাথে তাদের ধাক্কাধাক্কি শুরু হবে। সৌরকণাদের সম্মিলিত শক্তি যদি বেশি হয়, তাহলে পৃথিবীর রেডিও বা টেলি যোগাযোগ ব্যবস্থাকে তছনছ করে দিতে পারে।