সূর্য কাহিনি
সূর্যের গভীরে রয়েছে ভয়ানক উচ্চ তাপমাত্রা ও চাপ। এই উচ্চ তাপমাত্রা ও চাপ হাইড্রোজেনকে হিলিয়ামে পরিণত করে। পরমাণু ভরের ভগ্নাংশ নিউক্লিয়ার ফিউশন বিক্রিয়ায় বিশুদ্ধ শক্তিতে পরিণত হয়। এই শক্তি বাইরের দিকে বিকিরণ করে।
অনেকটা পাত্রে ফুটন্ত পানির বুদবুদের মতো।
সূর্যের সংবহনশীল এলাকার ভেতর এটি ঘটে। যা আয়নিত গ্যাসের (প্লাজমা) উচ্ছ্বল প্লুমের ওপর পর্যন্ত চড়ে ওঠে। সবশেষে সূর্যের কেন্দ্র থেকে ৭,০০,০০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেওয়ার মাধ্যমে শক্তিটি সৌর আলোকমণ্ডল থেকে উজ্জ্বল সাদা আলোর মতো বেরিয়ে যায়।
পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে পৃষ্ট পর্যন্ত দূরত্বের ১০০ গুণের সে পথ। এরপর তা মহাশূন্যের অন্ধকারে বিকিরিত হয়। এই শক্তির মাত্র এক বিলিয়ন অংশ পৃথিবীতে আসতে পারে। এই শক্তিই আমাদের আবহওয়ার চালক ও একইসাথে উষ্ণতা প্রদান করে।
শক্তির এই অঞ্চলটি সূর্যের শীতলতম স্তর। তবুও ওই অঞ্চলের তাপমাত্রা ৫,৫০০°C (১০,০০০°F)। এই তাপমাত্রায় যেকোনো কঠিন পদার্থ চোখের পলকে বাষ্পে পরিণত হবে। সংবহনশীল অঞ্চলের গভীরে প্লাজমার ঘূর্ণায়মান প্রান্তের উৎপন্ন শক্তিশালী চৌম্বকক্ষেত্র আলোকমণ্ডলে দাগ/ ছিদ্র করে। সূর্যপৃষ্ঠকে বিকৃত করে।
এভাবে আরও গাঢ় হয় সূর্যকলঙ্ক। এমন ঘটনা ১১ বছরে একবার ঘটে।
ইতিহাস
সূর্য। একটি নক্ষত্র। এটি ১০০ ট্রিলিয়ন টেরাওয়াটের পারমাণবিক চুল্লি। পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি জীবন্ত প্রাণীর শক্তির আতুড়ঘর। আদি ইংরেজি sunne থেকে ইংরেজিতে sun নামটি এসেছে। বাংলায় সূর্য শব্দটি এসেছে সংস্কৃত থেকে। হিন্দু পুরাণে ‘সূর্য’ এক দেবতার নাম।
পরিমণ্ডল
আমাদের গ্যালাক্সির আর ১০০,০০০,০০০,০০০টা নক্ষত্রের মতোই সূর্যও একটা নক্ষত্র। অন্য যেকোনও নক্ষত্রের চেয়ে সূর্য আমাদের সবচেয়ে কাছের বলে একে আমরা ভালোভাবে চিনি, জানি, জানতে পারি। হেলিওসিজমোলজি-তে বিজ্ঞানীরা সূর্যের পৃষ্ঠের ধীর দোলনের সহায়তায় আভ্যন্তরীণ গঠন ও সামগ্রিক গঠন পরিমাপ করেন। দুর্বল মিথস্ক্রিয়ায় লিপ্ত মৌলিক কণাগুলোর (নিট্রিনোস) পর্যবেক্ষণ করতে বিজ্ঞানীরা ভূগর্ভস্থ ডিটেক্টর ব্যবহার করেন। কণাগুলো সূর্যের কেন্দ্রে সংঘটিত পারমাণবিক বিক্রিয়ার উপজাত।