সেপটিক ট্যাংক কেন নীরব ঘাতক, বাঁচার উপায় কী?
সেপটিক ট্যাংক কিংবা পানির ট্যাংক পরিষ্কার করতে গিয়ে মৃত্যুর ঘটনা মাঝে মধ্যেই ঘটে থাকে। এ ধরনের দুর্ঘটনার খবর প্রায়ই গণমাধ্যমে উঠে আসে।
কিন্তু এ ধরনের দুর্ঘটনার কারণ কী? বিশেষজ্ঞদের মতে, মাটির নিচে গর্ত বদ্ধ অবস্থায় দীর্ঘদিন থাকলে তার ভেতর নানা ধরনের ক্ষতিকারক বিষাক্ত গ্যাসের সৃষ্টি হয়। সেখানে অ্যামোনিয়া, হাইড্রোজেন সালফাইড, সালফার ডাই অক্সাইড-সহ সালফারের অন্যান্য গ্যাস, মিথেন, এমনকি বিষাক্ত কার্বন মোনোক্সাইড তৈরি হতে পারে। বদ্ধ থাকার ফলে এসব গ্যাস ক্রমশ ঘন হতে থাকে, এবং সেই সাথে অক্সিজেনের স্বল্পতা তৈরি হতে থাকে।
কখনও কখনও এ ধরনের বদ্ধ কূপ একেবারে অক্সিজেন শূন্য হয়েও যেতে পারে। যার ফলে মানুষ এসব গর্তে ঢুকলে অক্সিজেনের অভাবে মানুষ বা যেকোনও প্রাণী দ্রুত অচেতন হয়ে যেতে পারে এবং তার জীবন হুমকিতে পড়তে পারে।
সেপটিক ট্যাংক বা বদ্ধ যেকোনও কূপের বিপদ সম্পর্কে অধিকাংশ মানুষের ধারণা না থাকার ফলে মাঝে মধ্যেই এসব ঘটনায় মৃত্যু পর্যন্ত হচ্ছে।
একজন ঢোকার পর যখন তার সাড়া-শব্দ না পাওয়া যায়, তখন তাকে বাঁচানোর জন্য আরেকজন ঢোকে, তখন তারাও বিপদে পড়ে।
কীভাবে এ ধরনের মৃত্যু এড়ানো সম্ভব?
দমকল বাহিনী সবসময় এ ধরনের পরিবেশে কাজ করতে গিয়ে ‘অক্সিজেন ডিটেক্টর’ যন্ত্র ব্যবহার করে, তবে সহজ কিছু উপায়ে সেপটিক ট্যাংক, কুয়া বা গভীর কোনও গর্ত কতটা নিরাপদ সেটা বোঝা সম্ভব।
একটি হারিকেন বা কুপি জ্বালিয়ে দড়ি দিয়ে বেঁধে তা সেপটিক ট্যাংক বা কূপের ভেতর নামিয়ে দিলে সেটি যদি দ্রুত দপ করে নিভে যায়, তাহলে বোঝা যাবে সেখানে অক্সিজেনের স্বল্পতা রয়েছে।
আরও ভালো যদি ছোট একটি মুরগির বাচ্চার পায়ে দড়ি ঝুলিয়ে গর্তের মধ্যে নামিয়ে দেওয়া। সেটি যদি মারা যায় বা মরণাপন্ন অবস্থা তৈরি হয়, তাহলেও সহজে বিপদ সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে।
বদ্ধ যেকোনও কূপ বা গর্তে ঢোকার সময় অক্সিজেন মাস্ক ব্যবহার করা সবচেয়ে নিরাপদ।
নেহাতই যদি অক্সিজেন মাস্ক না থাকে তাহলে অনেক পাতাসহ গাছের ডাল কেটে তা দড়িতে বেঁধে গর্তের ভেতরে অনেকবার ওঠানামা করালে বিষাক্ত গ্যাস কিছুটা বাইরে বেরিয়ে আসে এবং কিছুটা অক্সিজেন ঢোকে।
তবে পুরোপুরি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গেলে অক্সিজেন মাস্কের বিকল্প নেই।