‘সোজা কথা, ১৪ ও ১৮ সালে ভোট ডাকাতি করেছি’, আওয়ামী লীগ নেতার ভিডিও ভাইরাল
চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার বড়হাতিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রিটন বড়ুয়া ওরফে রোনার একটি বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ওই বক্তব্যে তিনি ২০১৪ সালে দশম ও ২০১৮ সালে একাদশ সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনের নৌকার প্রার্থীর পক্ষে ভোট ডাকাতি করার কথা স্বীকার করেছেন।
২০১৪ ও ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনে এই আসনে নৌকার প্রার্থী হিসেবে আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভী বিজয়ী হন। এবারও তিনি এই আসনে আওয়ামী লীগের (নৌকা প্রতীক) মনোনয়ন পেয়েছেন। আগের দুই সংসদ নির্বাচনে রিটন বড়ুয়া নেজামউদ্দিন নদভীর পক্ষে কাজ করেন। তবে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল মোতালেবের পক্ষে কাজ করছেন। আবদুল মোতালেব সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে সাতকানিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে সম্প্রতি পদত্যাগ করেছেন। নির্বাচনে তিনি ঈগল প্রতীক নিয়ে লড়ছেন।
বড়হাতিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রিটন বড়ুয়া
গতকাল রোববার দিবাগত রাত আটটার দিকে বড়হাতিয়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের চান্দিরপাড়ায় ঈগলের প্রার্থীর নির্বাচনী কার্যালয় উদ্বোধন করা হয়। ওই অনুষ্ঠানে রিটন বড়ুয়া নৌকার প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভীর উদ্দেশে বলেছেন, ‘আমাদের এমপির কথা বলছি। আপনাকে আমি একটি কথা বলতে চাই। ২০১৪ সালের নির্বাচনে আমরা ভোট ডাকাতি করেছি। সোজা কথা। আমরা এমনে আসি নাই। ২০১৮ সালেও আমরা ভোট ডাকাতি করেছি। এখন আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একটি কথা বারবার বলেন। আমাদের বহির্বিশ্ব চাপ দিচ্ছে। আমাদের একজনের পায়ে একজন না লেগে সোজা লাইন ধরে ভোট দিতে হবে। এটা বহির্বিশ্বকে দেখাতে হবে।’
রিটন বড়ুয়ার বক্তব্য প্রদানকালে ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল মোতালেবের ছেলে ওয়াহিদুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহসম্পাদক মো. রিয়াদ, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক উপ-মাদ্রাসা বিষয়ক সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন প্রমুখ।
মো. রিয়াদ বলেন, তিনি (রিটন বড়ুয়া) গত দুই নির্বাচনে বর্তমান সংসদ সদস্যের জন্য অনেক কষ্ট করেছেন। বিনিময়ে তাঁর ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছে। তাই ক্ষোভ থেকে তিনি এমন বক্তব্য দিয়েছেন।
বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে রিটন বড়ুয়া বলেন, ‘২০১৪ সালে আমরা কিছু ভোট নিয়েছি। ২০১৮ সালেও নিয়েছি। কিন্তু নেত্রীর নির্দেশনা হচ্ছে এবারের নির্বাচন সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক হবে। আগের মতো নির্বাচন আর হবে না।’
এ ব্যাপারে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল মোতালেবের লোহাগাড়ার নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়ক খোরশেদ আলম চৌধুরী বলেন, ‘ওনার বক্তব্যের সঙ্গে আমরা একমত না। উনি কী বোঝাতে চেয়েছেন, তা উনিই ভালো বলতে পারবেন।’