USA

স্টেইন, অলিভার, ওয়েস্ট: মার্কিন নির্বাচনের ‘তৃতীয় শক্তি’

মার্কিন নির্বাচনের শুরু থেকে শুধু ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান পার্টির নামই শোনা গেছে। প্রথমে বাইডেন-ট্রাম্প এবং পরবর্তীতে কমলা হ্যারিস-ট্রাম্পেই সীমাবদ্ধ থেকেছে মূল প্রতিযোগিতা। তবে এই নির্বাচনে আরও কয়েকজন প্রার্থী আছেন, যারা ‘তৃতীয় শক্তি’ হিসাবে নির্বাচনের ফলকে সামান্য হলেও প্রভাবিত করতে পারবেন।

এরকম প্রার্থীদের মধ্যে আছেন গ্রিন পার্টির দুই অধিকারকর্মী ও নিজেকে ‘সশস্ত্র ও সমকামী’ দাবি করা অপর এক রাজনীতিবিদ। বিখ্যাত কেনেডি পরিবারের এক সদস্যও সার্বিক ফলকে প্রভাবিত করতে পারেন। 

মঙ্গলবারের নির্বাচনে ট্রাম্প-কমলার সম্ভাব্য হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পাশাপাশি এই তিন প্রার্থী কেমন করেন, সেটা দেখার জন্যও অনেকে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন।

গাজায় গণহত্যা বন্ধ করতে চান বামপন্থী জিল স্টেইন

গ্রিন পার্টির নেতা জিল স্টেইন। ফাইল ছবি: রয়টার্স

গ্রিন পার্টির নেতা জিল স্টেইন।

২০১২ ও ২০১৬ সালে গ্রিন পার্টির মনোনীত প্রার্থী হিসেবে মার্কিন নির্বাচনে অংশ নেন জিল স্টেইন (৭৪)। দুই নির্বাচনে যথাক্রমে শূন্য দশমিক চার ও এক শতাংশ ভোট পান তিনি।

শিকাগোয় জন্ম নেওয়া চিকিৎসক ও পরিবেশ আন্দোলনকর্মী জিল এ বছর প্রায় ৪০টি অঙ্গরাজ্যের ব্যালটে জায়গা করে নিয়েছেন। কয়েকটি দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যে কমলা হ্যারিসের কিছু ভোট জিলের কাছে চলে যেতে পারে—এমন আশংকা রয়েছে ডেমোক্র্যাট শিবিরে। এতে জিলের তেমন লাভ না হলেও ক্ষতির শিকার হবেন কমলা।

মিশিগান, পেনসিলভানিয়া ও উইসকনসিনের মতো দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলোতে জিল স্টেইন বিরোধী বিজ্ঞাপন দিয়েছে ডেমোক্র্যাটিক পার্টি। বিজ্ঞাপনের বক্তব্য, ‘জিল স্টেইনকে ভোট দেওয়া আর ট্রাম্পকে ভোট দেওয়া একই।’

গত চার বছর জিল স্টেইন বাইডেন প্রশাসন থেকে নিজেকে আলাদা রেখেছেন। তিনি জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট হলে গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যা বন্ধ করবেন।

তার আরও প্রতিশ্রুতির মধ্যে আছে সবচেয়ে ধনী মার্কিনীদের কর বাড়ানো, শিক্ষার্থীদের ঋণ মওকুফ এবং প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় কমানো।

করনেল ওয়েস্টের ভাষায় জো বাইডেন ‘যুদ্ধাপরাধী’, ট্রাম্প ‘ফ্যাসিবাদি’ 

স্বতন্ত্র প্রার্থী ও গ্রিন পার্টির নেতা করনেল ওয়েস্ট। ফাইল ছবি: সংগৃহীত

স্বতন্ত্র প্রার্থী ও গ্রিন পার্টির নেতা করনেল ওয়েস্ট। ফাইল ছবি: সংগৃহীত

গ্রিন পার্টির অপর প্রার্থী করনেল ওয়েস্ট এবার স্বতন্ত্র টিকিটে নির্বাচনে লড়ছেন।

বর্ণবাদবিরোধী অধিকারকর্মী থেকে নেতায় রূপান্তরিত হওয়া ৭১ বছর বয়সী শিক্ষাবিদ করনেল ওয়েস্ট মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে একজন ‘যুদ্ধাপরাধী’ বলে অভিহিত করেন।

তিনি ট্রাম্পকে ‘নব্য ফ্যাসিবাদি’ বলেও অভিহিত করেছেন। তিনি প্রায় ১২টি অঙ্গরাজ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। তিনিও সম্ভবত কমলা হ্যারিসের কিছু ভোট বাগিয়ে নেবেন।

লিবারটেরিয়ান পার্টির ‘সমকামী ও সশস্ত্র’ প্রার্থী চেইস অলিভার

লিবারটেরিয়ান দলের নেতা চেইস অলিভার। ফাইল ছবি: সংগৃহীত

লিবারটেরিয়ান দলের নেতা চেইস অলিভার।

লিবারটেরিয়ান পার্টি ২০২০ সালে এক শতাংশের চেয়ে সামান্য বেশি ভোট পেয়েছিল। এবার তারা ৫০টি অঙ্গরাজ্যের প্রায় সবগুলোতেই লড়বে।

দলের নতুন মুখ হলেন ডেমোক্র্যাট পার্টির সাবেক সদস্য চেইস অলিভার (৩৯)। ২০২২ সালে জর্জিয়া থেকে সিনেটের পদের জন্য লড়েছিলেন তিনি। মুক্ত বাণিজ্য ও প্রশাসনের ভূমিকাকে সীমিত করে আনার পক্ষে কাজ করছে তার দল।

তিনি নিজেকে সাইন্স ফিকশন গল্পের ফ্যান এবং সমকামী বলে অভিহিত করেন। তিনি সব সময় সঙ্গে অস্ত্র রাখেন বলেও উল্লেখ করেছেন।

ট্রাম্পের মতো, অলিভারও বন্দুকের অধিকার সমর্থন করেন। তিনি মনে করেন, প্রতিটি প্রাপ্তবয়স্ক মার্কিন নাগরিকের বন্দুক কেনার ও সাথে রাখার অধিকার রয়েছে।

পাশাপাশি, রক্ষণশীল আর্থিক নীতিমালা প্রণয়ন, গর্ভপাতের অধিকার প্রতিষ্ঠা, গাঁজার বৈধকরণ ও মৃত্যুদণ্ড বাতিলের পক্ষেও কথা বলেছেন তিনি।

তিনটি দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যে লড়বেন অলিভার।

না থেকেও আছেন রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়র

রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়র ট্রাম্পের সঙ্গেই প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন। ছবি: রয়টার্স

রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়র ট্রাম্পের সঙ্গেই প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন।

বিখ্যাত মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির বংশধর রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়র দেশজুড়ে প্রায় পাঁচ শতাংশ ভোট পাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। আগস্টের শেষ ভাবে নিজ পরিবারের সদস্যদের বিস্মিত করে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান রবার্ট এবং ট্রাম্পের প্রতি সমর্থন জ্ঞাপন করেন।

পরিবেশ আইনজীবী, কনস্পিরেসি থিয়োরিস্ট ও ভ্যাকসিনবিরোধী হিসেবে পরিচিত রবার্ট জুনিয়র এক সময় কমলা হ্যারিসের প্রতি হুমকি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছিলেন।

নির্বাচন থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সরে দাঁড়ালেও, কিছু দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যের ব্যালটে তার নাম থাকছে। এই রাজ্যগুলো তার নাম সরিয়ে নিতে রাজি হয়নি।

যার ফলে, বিশ্লেষকরা ভাবছেন, ট্রাম্পের কিছু ভোট তিনি কেড়ে নিতে পারেন।

নাম সরিয়ে নেওয়ার পর থেকে ট্রাম্পের পাশে দাঁড়িয়ে রিপাবলিকানদের সঙ্গে প্রচারণা চালিয়েছেন রবার্ট জুনিয়র। তবে নির্বাচনে তার চূড়ান্ত প্রভাব কি হবে, সেটা নিশ্চিত নয়।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button