Hot

স্বপ্ন যাবে কতদূর

বেহাল দশায় অর্থনীতি : সরকার ‘সংস্কার’ রাজনৈতিক দল ‘নির্বাচন’ মশগুল জনজীবনে বিপর্যস্ততা; সংস্কারের নামে সরকারের ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করা ও রাজনৈতিক দলগুলোর দখলদারিত্ব-ভাগবাঁটোয়ারা প্রতিযোগিতার সুযোগে আওয়ামী লীগ ঢাকার রাজপথে নামার বার্তা দিচ্ছে

রাজধানী ঢাকার বহু এলাকায় দু’-তিন পরপর গভীর রাতে চুলায় গ্যাস আসে। প্রতি মাসে এক হাজার ৮০ টাকা বিল পরিশোধ করেও গ্যাস না আসায় গৃহিণীরা রাতের পর রাত প্রতীক্ষা করেন গ্যাসের জন্য। গ্যাস না আসায় বাধ্য হয়েই সংসারের পোষ্যদের নানা পন্থায় রান্না করে খাওয়ান। রাজধানীতে বসবাসরত সীমিত আয়ের পরিবারগুলো মরণদশায় পড়েছে। বিদ্যুৎও নিরবচ্ছিন্ন নেই। প্রতি রাতে দফায় দফায় বিদ্যুৎ চলে যায়। রাজধানীর হাজার হাজার গৃহিণীর রসুইঘরে চোখের পানি ঝরানোর কাহিনী শুনে টিভির একটি বিজ্ঞাপনের কথা মনে পড়ছেÑ ‘স্বপ্ন টানে দিলাম পাড়ি/অচিন পথে আপন ছাড়ি/পিছন ফেলে উঠান বাড়ি/প্রিয় মুখ আর স্মৃতির সারি/মন বলে চল ফিরে আবার/স্বপ্ন যাবে বাড়ি আমার…’। স্বপ্ন কী সত্যিই বাড়ি যাবে?

এক হাজার ৪০০ ছাত্র-জনতার লাশের বিনিময়ে ৫ আগস্ট জাতির ঘাড়ে চেপে থাকা জগদ্দল পাথর আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছে। হেলিকপ্টারে মাফিয়া নেত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি পালানোর দৃশ্য দেখে উল্লাস করেছে কোটি কোটি আমজনতা। জাতিসংঘের অধিবেশন যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ‘বিশ্বজয়’ দেখে মুগ্ধ হয়ে নতুন জীবনের স্বপ্ন দেখেছে দেশের মানুষ। অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের সাড়ে আট মাস পরও কী আমরা স্বপ্নের ঠিকানা খুঁজে পেয়েছি? ফ্যাসিস্ট হাসিনার রেখে যাওয়া পঙ্গু অর্থনীতিকে কী সোজা করে দাঁড় করাতে পেরেছি? বেকারত্ব কমানোর উদ্যোগ গ্রহণ, বিনিয়োগ বৃদ্ধি করতে পেরেছি? দেশের অর্থনীতির গতিধারা কোন পথে? একটি আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ সম্মেলন কী অর্থনীতিতে আকাশে উঠিয়েছে? অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্বশীলরা প্রতিনিয়ত সংস্কারের বাণী শোনাচ্ছেন। রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনের দাবিতে মাতোয়ারা হয়ে উঠেছে। প্রবাদে আছে ‘পেটে খেলে পিঠে সয়’। যারা নানামুখী সঙ্কটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন তাদের কি সংস্কারের বাণীতে পেট ভরে? গ্যাসের অভাবে যাদের রান্নার চুলা জ্বলছে না, রাতের অনেকটা সময় বিদ্যুৎহীন অন্ধকার ঘরে থাকতে হচ্ছে, নতুন কর্মক্ষেত্র তৈরি না হওয়ায় সন্তান বেকার সে ঘরের মানুষের হাসিনা পালানোর পর ‘মুক্ত বিহঙ্গের মতো স্বাধীন জীবন’ কী কোনো সুখকর অর্থ বহন করে? জনগণের ট্যাক্সের টাকায় ভোগবিলাসে মত্ত সরকারের দায়িত্বশীলদের ‘স্বপ্ন দেখানোর কথামালা’ আর রাজনৈতিক দলগুলোর ‘জনগণের ভোটের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠায় নির্বাচন’ বিপন্ন মানুষের পেট ভরে? অন্তর্বর্তী সরকারের গালভরা স্বপ্ন দেশকে কতদূর নিয়ে যাবে?
সাড়ে আট মাস মাস অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য মোটেও কম নয়। সাবেক অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট বিচারপতি সাহাব উদ্দিন, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বিচারপতি হাবিবুর রহমান, বিচারপতি লুতিফুর রহমান তিন মাসের মধ্যে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের আয়োজন করেছিলেন। প্রশাসনকে গতিশীল ও অর্থনীতিকে শক্ত ভীতের উপর নিয়েছিলেন। অথচ বর্তমান ক্ষমতাসীন অন্তর্বর্তী সরকার শোনাচ্ছে শুধু স্বপ্নের কথামালা। শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব, শূন্য কার্বন নিঃসরণ এই ‘থ্রি-জিরো তত্ত্ব’ এবং ‘সামাজিক ব্যবসায়’ ধারণায় কী পেট ভরে? হাসিনা পালানোর পর প্রবাসীরা রেমিট্যান্সি পাঠানোয় রিজার্ভ বেড়েছে, বিদেশিরা পণ্য কেনায় রফতানি সূচকে কিছুটা উন্নতি হয়েছে। অথচ জিডিপিসহ অর্থনৈতিক সেক্টরে সবগুলো সূচক নি¤œমুখী। ৯ মাসে এডিপি বাস্তবায়ন ৩৭ শতাংশ কম, ব্যবসা না থাকায় ব্যাংক থেকে ‘নতুন ঋণ’ চাহিদা নেই, বিদেশি বিনিয়োগ আসছে না, সব ধরনের ব্যবসা-বাণিজ্যে স্থবিরতা, এলসি নেই, নতুন করে শিল্প-কারখানা গড়ে উঠছে না, গার্মেস্টসে শ্রমিক অসন্তোষ সর্বোপরি পরিবেশ না থাকায় অনেক ছোট-বড় শিল্প-কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। বিনিয়োগ বাড়াতে ঢাকঢোল পিটিয়ে ‘আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ সম্মেলন’ করার পর নতুন উৎপাদনমুখী কারখানার জন্য গ্যাসের দাম ৩৩ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। বিদ্যুৎ সেক্টরে নতুন কোনো উদ্যোগ নেই; বরং হাসিনার দেখানো পথ রেন্টাল, কুইক রেন্টালের পথ ধরে আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগীদের পকেট ভরিয়ে দেয়া হচ্ছে। জনগণের ট্যাক্সের টাকা দিয়ে রেন্টাল বিদ্যুৎ ক্রয় করায় টাকা চলে যাচ্ছে দেশের আনাচে-কানাচে লুকিয়ে থাকা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের পকেটে। বিদ্যুৎ বিক্রির টাকা খরচ করে তারা পলাতক হাসিনার পক্ষে রাজপথে মিছিল করছে। প্রথম দিকে বিচ্ছিন্ন দু’-একটি মিছিল দেখা গেলেও এখন প্রায় শত শত লোকবল নিয়ে আওয়ামী লীগের ঢাকার রাজপথে ফিরে আসা জানান দিচ্ছেÑ আওয়ামী লীগ রাজনীতিতে ফিরতে যাচ্ছে। অথচ হাসিনার পক্ষে মিছিলকারীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে না। ঢাকার রাজপথে আওয়ামী লীগের পক্ষের মিছিল কী বার্তা দিচ্ছে? অথচ অন্তর্বর্তী সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলো এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ঠেকানো দূরের কথাÑ জুলাই প্রক্লেমেশন (ঘোষণাপত্র) নিয়ে একমত হতে পারছে না।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ পালিয়েছে। দিল্লির কোলে বসে মুক্ত বাতাসে দোল খেতে খেতে শেখ হাসিনা দেশে ফেরার হুঙ্কার দিচ্ছে। নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের পাল্টা আক্রমণের নির্দেশনা দিচ্ছে। এমনকী সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তি ও রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়ার নির্দেশনা দিচ্ছে। অথচ সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর সেদিকে নজর নেই। তারা ‘সংস্কার’ ও ‘নির্বাচন’ জ্বরে আক্রান্ত। গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, উপদেষ্টা পরিষদ ও বিভিন্ন সংস্কার কমিশনের বিশেষ বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ পদে প্রায় ১৭ জন বিদেশি নাগরিক (বেশির ভাগই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক) নিয়ে গঠিত প্রশাসন যেন সংস্কার জ্বরে আক্রান্ত। ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে নির্বাচন কিভাবে পেছানো যায় তা নিয়ে বেশি ব্যতিব্যস্ত। পশ্চিমাদের কাছ থেকে টাকা এনে দেশে এনজিওর মাধ্যমে পরিবেশ বাঁচানো ও মানবাধিকার রক্ষার ব্যাপারি এজেন্টরা উপদেষ্টা পদ ব্যবহার করে টাকা দেয়া বিদেশি মুরব্বিদের অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়নে তৎপর হয়ে উঠেছেন। তাদের দেশ গড়ার থিউরিতে গড়াতে গড়াতে দেশের অর্থনীতি যে বঙ্গোপসাগরে হাবুডুবু খেতে বসেছে, সেদিকে ভ্রুক্ষেপ নেই। তারা যেন দেশকে সংস্কারে ভাসিয়ে দেবেন। কেউ আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্বের ‘বটিকা’ বিক্রি করছেন, কেউ আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ সম্মেলন করে দেশকে বিনিয়োগের জোয়ারে ভাসাচ্ছেন। ফলশ্রুতিতে শত শত কোটি টাকা ছাপিয়ে ব্যক্তি মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোকে দিয়ে ব্যাংকিং সেক্টর রক্ষা করতে হচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টা গত বছর জাতিসংঘের অধিবেশনে বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে উন্নয়নের স্বপ্ন দেখিয়েছেন। অথচ বাস্তবতা হচ্ছে আইএমএফ ঋণের কিস্তি বন্ধ করে দিয়েছে; বিশ্বব্যাংক পর্যাপ্ত ঋণ দিচ্ছে না। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর বিশ্বের দেশে দেশে ঘুরেও নতুন বিনিয়োগ এবং পাচার করা টাকা ফেরাতে পারছেন না। চীনসহ বিদেশি বিনিয়োগকারীরা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, নির্বাচিত সরকার ছাড়া বিনিয়োগে তারা আস্থা পাচ্ছেন না। অথচ উপদেষ্টাদের কেউ কেউ অন্তর্বর্তী সরকারের ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে নানা ফন্দি ফিকির চালিয়ে যাচ্ছেন।

৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের আন্দোলনের নেতৃত্ব দেয়া ছাত্রনেতারা দেশের রাজনীতিতে ‘নতুন বন্দোবস্ত’ দেয়ার স্বপ্ন দেখিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) গঠন করেছে। দলের নেতারা ‘সংবিধানের মৌলিক পরিবর্তন, সংস্কার ছাড়া নির্বাচন নয়’ দাবিতে সোচ্চার। কিন্তু অর্থনীতি কোন পথে যাচ্ছে, মানুষের প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির মধ্যেকার ফারাকÑ ইত্যাদির দিকে তাদের নজর নেই; বরং আগস্টের অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেয়া তরুণ নেতাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, নিয়োগ-বদলি বাণিজ্যের অসংখ্য সুনির্দিষ্ট অভিযোগ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাসছে। বাধ্য হয়ে তারা নিজেদের দুর্নীতি-চাঁদাবাজির তদন্তে কমিটি পর্যন্ত গঠন করেছে। দেশের সবচেয়ে বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপির নেতারা এখন নির্বাচন ছাড়া কোনো কিছুই ভাবছেন না। দেশের অর্থনীতির পঙ্গুদশা, অর্থনীতিকে গতিশীল করতে অন্তর্র্বর্তী সরকারের কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত, সে নিয়ে সাজেশন নেই; আগামীতে নিজেরা ক্ষমতায় গেলে অর্থনীতির পলিসি কেমন হবেÑ সে কর্মপন্থাও নেই। জামায়াতের অবস্থা রাজনীতির পাশাখেলার মতো। জনসমর্থন না থাকায় নেতাকর্মী-নির্ভর ক্যাডারভিক্তিক দলটি কখনো এদিকে-কখনোসেদিকে খেলছে।

আন্দোলনের মুখে গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতন ঘটিয়ে দেশছাড়া করলেও মাঠ দখলে রাখতে পারেনি রাজনৈতিক দলগুলো। দীর্ঘ আট মাস আওয়ামী লীগ লাপাত্তা ছিল, অথচ জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাজনীতির মাঠের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারেনি দেশের সবচেয়ে বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি ও আন্দোলনের নেতৃত্ব দেয়া তরুণদের দল এনসিপি। এনসিপি নেতারা একদিকে মৌলিক পরিবর্তন অন্যদিকে সংস্কারের দাবিতে সোচ্চার। পাশাপাশি গলাবাজি, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজির দিকে ঝুঁকিলেও জনগণের কাছে না যাওয়ায় জনগণ থেকে যোজন যোজন মাইল দূরে। বিএনপি রাজনীতির মাঠের নিয়ন্ত্রণ এবং জনপ্রত্যাশার বদলে কেবল নির্বাচনের মাধ্যমে দ্রুত ক্ষমতায় যেতে মরিয়া। দলটির কয়েকজন কেন্দ্রীয় ও তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির বিস্তর অভিযোগ উঠেছে। অনেক উপনেতা-পাতিনেতার নেতার বিরুদ্ধে দলটি শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। জনসমর্থন না থাকলেও সংগঠনিকভাবে সৃসংগঠিত জামায়াত প্রশাসনে উচ্চপদগুলোর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় মহাব্যস্ত। রাজনৈতিক দলগুলোর এই দখলদারিত্ব ও ভাগবাঁটোয়ারার ব্যস্ততায় দেশের অর্থনীতি নিয়ে কোনো পদক্ষেপ ও দাবি নেই। ফলে হাসিনা যেমন ১৫ বছর জনগণের সামনে ‘উন্নয়নের কলা’ ঝুলিয়ে দেশকে সুইজারল্যান্ড, সিঙ্গাপুর বানানোর বয়ান দিয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারও সে পথ ধরে নানান স্বপ্ন দেখাচ্ছে। একই সঙ্গে ‘যত দোষ নন্দ ঘোষ’ প্রবাদের মতোই সব কিছুর জন্য দায়ী আওয়ামী লীগ বয়ান দিয়েই যাচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর এই দোষারোপের রাজনীতির সুযোগ নিয়ে ভারতের পৃষ্ঠপোষকতায় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা ঢাকার বিভিন্ন অঞ্চলে ঝটিকা মিছিল করে ‘আওয়ামী লীগ আসছে’ বার্তা দিচ্ছে। ফলে সামনে কী হবে, আমরা কতদূর যাবো, ৫ আগস্টের অভ্যুত্থানের স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে কি-না, এমনকী জনপ্রত্যাশা অনুযায়ী যথাসময়ে নির্বাচন হবে কি-না তা নিয়ে ধোঁয়াশা থেকেই যাচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস তরুণদের স্বপ্ন দেখতে উৎসাহিত করলেও সে স্বপ্ন ১৮ কোটি মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তনের সূচনা করতে পারবে কি-না সেটিই প্রশ্ন।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
Situs Toto
toto togel
slot toto
Toto slot gacor
bacan4d
totoslotgacor
bacan4d
bacan4d slot gacor
bacan4d login
Bacan4d
bacan4d
bacan4d bonus
Toto gacor
Toto gacor
slot gacor hari ini
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d link alternatif
slot gacor bett 200
situs toto
SITUS TOTO
toto 4d
toto gacor
Slot Toto
Slot Toto
Slot Toto
Situs toto
Slot toto
Slot Dana
Slot Dana
Judi Bola
Judi Bola
Slot Gacor
toto slot
bacan4d toto
bacan4d akun demo slot
bacantogel
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacantoto
bacan4d
Bacan4d Login
slot demo
Bacan4d Toto
toto gacor
Slot Gacor
Live Draw
Live Draw Hk
toto slot
Bacan4d slot gacor
toto macau
toto slot
Toto Gacor
slot dana
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
Slot Dp Pulsa
Bacan4d Login
toto slot
Bacansports/a>
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
toto slot
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
slot gacor
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
toto slot
slot demo
toto slot gacor
bacansports Slot toto toto slot Slot toto Slot dana Slot toto slot maxwin slot maxwin toto slot toto slot slot dana
Toto Bola
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
bacan4d
ts77casino
situs toto
slot pulsa
bacansports
situs toto
slot toto
situs toto
slot toto
situs toto
toto slot
bacansport
bacansport
bacansports
slot toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
situs toto
situs toto
xx1toto
toto slot
xx1toto
xx1toto
slot qriss
Slot Toto
slot dana
situs toto
slot toto
slot dana
Situs Toto Slot Gacor
xx1toto
xx1toto
bacan4d
xx1toto
xx1toto
toto slot
situs toto slot gacor
toto gacor
toto gacor
toto gacor
toto gacor
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
situs toto
Slot Toto
Toto Slot
Slot Gacor
Slot Gacor
Slot Gacor
slot toto
Toto Slot