Hot

স্বাধীনতা সূচকে ২২ বছর ধরে অবনতি বাংলাদেশের: ১৬৪ দেশের মধ্যে অবস্থান ১৪১তম

বৈশ্বিক সুশাসন ও সমৃদ্ধির সূচকে বাংলাদেশের অবনতি অব্যাহত রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা প্রতিষ্ঠান আটলান্টিক কাউন্সিলের বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ গত ২২ বছর ধরে এই দুই সূচকে ধারাবাহিকভাবে পিছিয়েছে। এই মুহূর্তে ১৬৪ দেশের মধ্যে ১৪১তম স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ।

আজ মঙ্গলবার প্রকাশিত আটলান্টিক কাউন্সিলের বৈশ্বিক প্রতিবেদনের বাংলাদেশ অংশে এমন বলা হয়েছে। রাজনীতি, অর্থনীতি ও সুশাসনকে বিবেচনায় নিয়ে ওই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। 

ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (ইউএসএআইডি) এবং দ্য এশিয়া ফাউন্ডেশন যৌথভাবে আটলান্টিক কাউন্সিলের নতুন বৈশ্বিক স্বাধীনতা ও সমৃদ্ধি প্রতিবেদনের (গ্লোবাল ফ্রিডম অ্যান্ড প্রসপারিটি রিপোর্ট) ফলাফল জানাতে সমৃদ্ধি ও সুশাসন সম্মেলনের আয়োজন করে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ‘অধিকাংশ ক্ষেত্রে স্বাধীনতাবঞ্চিত’ শ্রেণিতে রয়েছে বাংলাদেশ। যেখানে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এলেও রাজনৈতিক এবং সুশাসনের স্বাধীনতায় পিছিয়ে রয়েছে।

আজ বাংলাদেশের অংশ প্রকাশ অনুষ্ঠানে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেন, প্রতিটি দেশ দুর্নীতির মতো বিষয়ে এবং অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অধিকার সুরক্ষিত রাখার লড়াই করছে। কিন্তু মূল সমস্যাগুলো এড়িয়ে যাওয়া নয়, সক্রিয়ভাবে স্বীকার এবং মোকাবিলা করা জরুরি। প্রতিবেদনে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সুশাসনের স্বাধীনতা বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। 

রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার গুরুত্বের কথা উল্লেখ করতে গিয়ে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনে দেখেছি ক্ষমতাসীন দল নিজেই তাদের দলীয় গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করেছে এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ করে দিয়েছে। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীদের অংশগ্রহণই বলে দেয় প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন কতটা জরুরি। 

তিনি আরও বলেন, পিছিয়ে থাকার রাজনৈতিক প্রবণতা আগামী দিনের বাংলাদেশের বর্ধনশীল এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের প্রতিবন্ধক হিসেবে দেখা দিচ্ছে। এটি থেকে বেরিয়ে আসতে হলে আমাদের আরেকটি রাজনৈতিক বোঝাপড়ার প্রয়োজন। 

গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, রাজনৈতিক স্বাধীনতা খর্ব হওয়ার যে প্রবণতা সেটা বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কাসহ দক্ষিণ এশিয়ার অধিকাংশ দেশের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। এটি যেমন বৈশ্বিক একটি প্রবণতা, এটি আঞ্চলিক প্রবণতাও বটে। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, গত তিন দশকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অধিকার আশঙ্কাজনকভাবে কমেছে। অর্থনৈতিক উন্নতি হলেও গণতন্ত্র ও সুশাসনের স্বাধীনতায় পিছিয়ে বাংলাদেশ।

আটলান্টিক কাউন্সিলের ফ্রিডম অ্যান্ড প্রসপারিটি সেন্টারের পরিচালক জোসেফ লেমোইন অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে প্রতিবেদনের ফলাফল উপস্থাপন করেন। এই প্রতিবেদনের ফলাফলে যা স্বাধীনতা সূচকের মাধ্যমে দেশগুলোর গণতান্ত্রিক এবং শাসনবিষয়ক নির্দেশকগুলো পরিমাপ ও ক্রম নির্ধারণ করে। সমৃদ্ধি সূচকের মাধ্যমে যা একটি দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি পরিমাপ করে। 

স্বাধীনতা এবং সমৃদ্ধি সূচকের মধ্যে দুটি আলাদা সূচক রয়েছে, যা বিশ্বের ১৬৪টি দেশের স্বাধীনতা এবং সমৃদ্ধির ধরন অনুযায়ী ক্রম বা অবস্থান নির্ধারণ করেছে। স্বাধীনতা সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ‘অধিকাংশ ক্ষেত্রে স্বাধীনতাবঞ্চিত’ শ্রেণিতে। সমৃদ্ধি সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ১৬৪টি দেশের মধ্যে ৯৯তম এবং ‘অধিকাংশ ক্ষেত্রে অসমৃদ্ধ’ শ্রেণিতে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button